এলাহাবাদ: জন্মদিন (birthday) মানেই আর পাঁচটা দিনের থেকে আলাদা। এলাহি খাওয়াদাওয়া, অতিথির ভিড়, অফুরান আনন্দ। আর কেক (cake) কাটা তো 'মাস্ট'। এসব অবশ্য চেনা ব্যাপার, তবে মানুষের ক্ষেত্রে। কিন্তু ঠিক একই ভাবে কোনও ছাগ-শিশুর (goat kids) জন্মদিন পালন হলে? চমকে উঠছেন? বাস্তবে এমনই ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের (uttarpradesh) বান্দায়। এক দম্পতি (couple) তাঁদের 'ছাগ-সন্তানদের' জন্মদিন উদযাপন করেছেন ঘটা করে।
কী হল?
বান্দার কাশীরাম কলোনির বাসিন্দা ওই দম্পতি নিঃসন্তান। তবে দুই ছাগ-শিশুকে পেয়ে সেই দুঃখ অনেকটাই ভুলে গিয়েছেন। তাদের নাওয়ানো-খাওয়ানো থেকে পরিচর্যা, এতেই দিন কাটে রাজা ও তাঁর স্ত্রীর। সন্তানদের নামও রেখেছেন--লক্ষ্মী এবং কুবের। হালেই এক বছর পূর্তি হল লক্ষ্মী ও কুবেরের। তাদের জন্মদিনে আত্মীয়বন্ধুদের নিমন্ত্রণ করেছিলেন দম্পতি। কেক কাটা হয়। কিন্তু সন্তানদের প্রথম জন্মদিন বলে কথা? একটু গানবাজনা না হলে হয়? তাই ডিজে-রও ব্যবস্থা করেছিলেন পেশায় রিকশাচালক রাজা। সব মিলিয়ে এলাহি আয়োজন। অতিথিরা খানিক থমকে গিয়েছিলেন প্রথমে। কিন্তু অপত্য স্নেহ কি সব সময় যুক্তিবুদ্ধি মানে? রাজার কথাতেও স্পষ্ট সেই সুর। বললেন, 'ওই ছাগ-শিশুদের আমরা সন্তান হিসেবেই দেখেছি। তাই ধূমধাম করে জন্মদিন উদযাপন করতে চেয়েছিলাম। ...ওদের রিকশা করে বেড়াতেও নিয়ে যাই।' অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রিতরা যে খালি হাতে আসেননি, সে কথাও মনে করালেন রাজা। জানালেন, সন্তানদের জন্য কম্বল ও অন্যান্য উপহার এসেছে।
প্রথম নয়...
এটিই অবশ্য প্রথম নয়। অতীতে লক্ষ্মী ও কুবেরের জন্মদাত্রী মা যে কটি সন্তানের জন্ম দিয়েছিল, তাদের প্রত্যেকের জন্মদিনই এই ভাবে ধূমধাম করে পালন করেছিলেন ওই দম্পতি। তাঁদের কাছে তাই এই উদযাপন আলাদা কিছু নয়, নতুন তো নয়ই। যুক্তিটিও স্পষ্ট। সন্তানস্নেহে যাদের প্রতিপালন করছেন তাঁদের জন্মদিন উদযাপন করতে অসুবিধা কোথায়? তাই কেক কেটে, ডিজে বাজিয়ে, নেমন্তন্ন করেই সবটা করেন রাজা ও তাঁর স্ত্রী। হয়তো কিছুটা সাধ্যের বাইরে গিয়েই এই সব করতে হয় তাঁদের। রিকশা চালিয়ে উপার্জন, তা থেকে কতই বা আয়? কিন্তু মা-বাবার আর্থিক অবস্থা কবেই বা সন্তানের জন্য আহ্লাদের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে? এখানেও ব্যতিক্রম হয়নি। দম্পতির কথার জোর থেকে স্পষ্ট, এর থেকে আলাদা কিছু হবেও না।