নয়াদিল্লি: নির্বাচনে মরশুমে রামনাম জপ চলছে। রামভক্তি বাদ যাচ্ছে না পরীক্ষার খাতাতেও। 'জয় শ্রীরাম' লিখে কলেজের পরীক্ষায় উতরে যাওয়ার নিদর্শন এবার সামনে এল। উত্তরপ্রদেশের একটি সরকারি কলেজে এই ঘটনা ঘটেছে। পরীক্ষার খাতায় 'জয় শ্রীরাম' লেখা ছাত্রদের ভাল নম্বর দিয়ে পাশ করিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় কলেজের দুই অধ্যাপককে সাসপেন্ড করা হয়েছে। (Viral News)


উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরের বীর বাহাদুর সিংহ পূর্বাঞ্চল ইউনিভার্সিটির ঘটনা। সেখানকার প্রথম বর্ষের ছাত্ররা ভাল নম্বর পেয়ে পাশ করেছেন পরীক্ষায়। সেই নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লেখেন ছাত্রনেতা দিব্যাংশু সিংহ। চিঠি দেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, রাজ্যপাল  এবং উপাচার্যকে। কিছু অধ্যাপক টাকার বিনিময়ে শূন্য পাওয়া পরীক্ষার্থীদের ৬০ শতাংশের বেশি নম্বর দিয়ে পাশ করিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। (Veer Bahadur Singh Purvanchal University)


এর পর, গত বছর অগাস্ট মাসে তথ্য জানার আধিকার আইনে আবেদনও জানান দিব্যাংশু। প্রথম বর্ষের ফার্মেসি কোর্সের ১৮ জন পড়ুয়ার রোল নম্বর দিয়ে তাঁদের মার্কশিট পুনর্মূল্যায়ন করে দেখতে আবেদন জানান। বিষয়টি নিয়ে রাজভবনের তরফে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয় গত বছর ২১ ডিসেম্বর। সেই তদন্তে দেখা যায়, ওই ১৮ জন পড়ুয়ার কেউ পরীক্ষায় শূন্য় পেয়েছিলেন, কারও প্রাপ্ত নম্বর ছিল মাত্র চার।  তদন্ত শুরু হতে দেখা যায়।


আরও পড়ুন: Fact Check: 'বিজেপিকে হারাতে প্রয়োজনে গুন্ডা প্রার্থীকেও ভোট দিন !' কবে কী আবেদন আপ নেত্রী অতিশীর ?


পরীক্ষার খাতার স্ক্রুটিনি করতে গিয়ে দেখা যায়,  প্রশ্নের উত্তর লেখার পরিবর্তে পড়ুয়াদের কেউ 'জয় শ্রীরাম' লিখে পাতা ভরিয়েছেন, কেউ পাতা ভরিয়েছেন বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, হার্দিক পাণ্ড্যর মতো ক্রিকেটারদের নাম লিখে, কেউ গানের পঙক্তি লিখেছেন, কেউ আবার ধর্মীয় স্লোগানে পাতা ভরিয়েছেন। হাবিজাবি লিখে পাতা ভরিয়েই কাঁড়ি কাঁড়ি নম্বর পেয়ে গিয়েছেন তাঁরা। 


এই ঘটনায় বিনয় বর্মা এবং আশিস গুপ্ত নামের দুই অধ্যাপকের নাম উঠে আসে। রাজ্যপালের কাছে সমস্ত প্রমাণ জমা পড়ে। কলেজের উপাচার্য বন্দনা সিংহ জানিয়েছেন, পরীক্ষার খাতার লেখা এবং প্রাপ্ত নম্বরের মধ্যে গরমিল ধরা পড়েছে এবং এই ঘটনায় ওই দুই অধ্যাপককে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে আরও কড়া পদক্ষেপ করা নিয়ে আলোচনা চলছে এই মুহূর্তে।


এর আগেও, আশিস বর্মার নামে অভিযোগ জমা পড়েছিল। পরীক্ষার সময় টাকা এবং মোবাইল ফোন হাতবদলের অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে, তার জেরে পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতিও দেওয়া হয় তাঁকে। আবারও অনিয়মের ঘটনায় নাম জড়াল তাঁর। রাজভবনের তরফে এ নিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে উপাচার্যকে। বিষয়টি সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে।