রাজকোট: বছর দশেকেরও বেশি সময় আগে অবসর নিয়েছেন কর্মজীবন থেকে। এখন অবসরজীবন কাটাচ্ছিলেন। তারমধ্যেই যেন বিনা মেঘে বজ্রপাত। পুরনো একটি মামলায় জেলের সাজা হল সত্তরোর্ধ্ব ওই প্রাক্তন সার্কেল ইন্সপেক্টরের। মামলাটি ১৯ বছরের পুরনো। 


গুজরাতের রাজকোটের একটি বিশেষ আদালত ওই প্রাক্তন সরকারি কর্মী জয়সুখ ভরতকে তিন বছরের জেলের সাজা শুনিয়েছে। অভিযোগ ছিল জয়সুখ দায়িত্বে থাকাকালীন একটি ঘটনায় ১০০০ টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন। অর্জন খিমানিয়া নামের এক ব্যক্তি জয়সুখ ভরতের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে মামলা করেছিলে। ভাজদি গ্রামে একটি জমিকে অকৃষি জমি হিসেবে দেখানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি। সেই কারণেই ১০০০ টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ ছিল। ২০০৪ সালের সেই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। 


খিমানিয়া নাকি আদালতে বিচারপর্বে আগের দাবি থেকে বেঁকে বসেছিলেন। তারপরেও ভরতকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। শুধু জেলের সাজাই শোনানো হয়নি। জয়সুখ ভরতকে ৮০০০ টাকা জরিমানাও করেছে রাজকোটের বিশেষ আদালত। কেন ওই ঘটনায় দ্রুত আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি সেই প্রশ্নও তোলা হয়েছে আদালতের তরফে। যিনি অভিযোগকারী ছিলেন তাঁকেও শো-কজ চিঠি দিয়েছেন বিচারক। 


কীভাবে এগিয়েছে তদন্ত:
খিমানিয়ার অভিযোগ পেয়ে দুর্নীতি-দমন শাখা একটি ফাঁদ পেতে হাতেনাতে ধরে জয়সুখকে। বিচারের সময় জয়সুখের আইনজীবী দাবি করেন, যিনি অভিযোগ করেছেন তিনিই এক পঞ্চায়েত কর্মীর থেকে টাকা ধার করেছিলেন। সেই টাকাই অভিযোগকারী ব্যক্তি জয়সুখকে দিয়েছিলেন ফেরত দেওয়ার জন্য। বিচার চলাকালীন খিমানিয়াও ভরতকেই সমর্থন করেন। 


সরকারি উকিল বলেছেন, 'যখন ফাঁদ পেতে ধরা হয়েছিল, তখন একবারও অভিযোগকারী বা অভিযুক্ত কেউই দাবি করেননি যে এই টাকা অন্য কাওকে দেওয়ার জন্য হাতবদল হচ্ছে। এমনকী চার্জশিট দেওয়ার সময় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের থেকে অনুমতি নেওয়ার সময়েও এই দাবি ওঠেনি। 


আগেও প্রায় এমন ঘটনা:
রাম কুমার তিওয়ারি নর্দান রেলওয়ের (Northen Railway) লোকো ড্রাইভার ছিলেন। তিনি ঘুষের মামলা করেছিলেন ১৯৯১ সালে। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর পেনশনের জন্য শারীরিক পরীক্ষার প্রয়োজন ছিল। সেই কারণেই রাম নারায়ণ ভার্মা তাঁর কাছে ১৫০ টাকা ঘুষ চেয়েছিলেন। পরে ১০০ টাকায় রাজি হন। অভিযোগের ভিত্তিতে হাতেনাতে ভার্মাকে ধরে সিবিআই। যাবতীয় তদন্ত করার পরে রাম নারায়ণ ভার্মার বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় সিবিআই। আদালত চার্জ ফ্রেম করে ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর। ৬০ বছর বয়সে ভারতীয় রেলের (Indian Railway) চাকরি থেকে অবসর নিলেও তারপর কেটে গিয়েছে ২২টি বছর। আশির কোঠায় এসে জেলের সাজা শুনেছিলেন ভারতীয় রেলের ওই অবসরপ্রাপ্ত ক্লার্ক। একটি ঘুষের মামলায় তাঁকে এই সাজা শুনিয়েছিল লখনউ-এর একটি স্পেশাল সিবিআই আদালত। যে মামলায় এই সাজা, সেটিই অন্তত ৩২ বছরের পুরনো। ঘুষের অঙ্কটা ছিল ১০০ টাকা।


আরও পড়ুন: গুণের 'খনি', কিন্তু কখন স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর কমলা লেবু ?