নয়াদিল্লি: মত্ত অবস্থায় বাড়ির রাস্তা খুঁজে না পাওয়া, আলুথালু ঘুরে বেড়ানোর নজির রয়েছে। তাই বলে নিজের গাড়ি, ল্য়াপটপ সব বিসর্জন দেওয়া! অতিরঞ্জিত করে বলা কোনও গল্প নয়, গুরুগ্রামে (Gurugram News) এমনই কাণ্ড ঘটিয়েছেন এক ব্যক্তি। নেশার ঘোরে নিজের গাড়িকে অন্যের বলে ভেবে বসেননি শুধু, রাস্তা থেকে গাড়িতে তোলা ব্যক্তিকেই নিজের গাড়ির মালিক ভেবে বসলেন তিনি। সব ছেড়ে বাড়ি গেলেন মেট্রো ধরে (Viral News)। 


শুক্রবার রাতে গুরুগ্রামে এই ঘটনা ঘটিয়েছেন বছর ৩০-এর এক যুবক। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম বিষয়টি সামনে এনেছে। জানা গিয়েছে, গুরুগ্রামের গল্ফ কোর্স রোডে একটি নামী সংস্থায় কর্মরত অমিত প্রকাশ। শুক্রবার রাতে অফিস থেকে বেরিয়ে একটু জিরিয়ে নিতে মন করছিল। তাই নিজের গাড়িতে বসেই সুরায় গলা ভিজিয়ে নিচ্ছিলেন তিনি। 


সেই সময় হঠাৎই অচেনা এক ব্যক্তি অমিতের কাছে হাজির হন। সুরাপানে তাঁকে সঙ্গ দেওয়ার প্রস্তাব দেন। সারা সপ্তাহ হাড়ভাঙা খাটুনির পর, কারও সঙ্গ পেতে আপত্তি ছিল না অমিতের। রাজি হয়ে যান তিনি। আগন্তুককে ড্রিঙ্কসও অফার করেন। শুধু তাই নয়, সুরাপানের পর আগন্তুককে পাশে বসিয়ে গাড়ি চালিয়ে সুভাষ চক পর্যন্ত যান অমিত। তার পরই সব ঘেঁটে যায় তাঁর। 


আরও পড়ুন: Ask SRK: 'আমরা ডিনার নিয়ে হাজির', অনুরাগীকে দেওয়া শাহরুখের মজার উত্তরের পর 'স্যুইগি'র কীর্তি ভাইরাল


জানা গিয়েছে, সুভাষ চকে পৌঁছে আচমকা আক্কেল গুড়ুম হয়ে যায় অমিতের। তিনি যে নিজের গাড়িতেই ছিলেন, বেমালুম ভুলে যান। কী করবেন যখন ভেবে পাচ্ছেন না, অচেনা ওই ব্যক্তি তাঁকে গাড়ি থেকে নেমে যেতে বলেন। বাধ্য ছেলের মতো গাড়ির স্টিয়ারিং ছেড়ে নেমে যান অমিত। তার পর অটো ধরে হুডা সিটি মেট্রো সেন্টার পৌঁছন। সেখান থেকে মেট্রো ধরে পৌঁছন বাড়িতে।


বাড়ি পৌঁছেও সম্বিৎ ফেরেনি অমিতের। শনিবার সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর যখন নেশা কাটে, গোটা ঘটনাপর্ব মনে পরে তাঁর। তাতেই আঁতকে ওঠেন অমিত। সঙ্গে সঙ্গে সেক্টর ৬৫ থানায় ছুটে যান। অভিযোগ দায়ের করেন। এই ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় ওই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৯ ধারায় (চুরি) মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। 


তবে নেশার ঘোরে শুধু গাড়িই খোয়াননি অমিত, গাড়িতে রাখা ল্যপটপ, নগদ ১৮ হাজার টাকা, মোবাইল ফোন, সব হাতছাড়া হয়ে গিয়েছে। জানা গিয়েছে, অফিস থেকে বেরিয়ে গল্ফ কোর্স রোডের লেক ফরেস্ট ওয়াইন শপে যান অমিত। সেখানে ২ হাজার টাকা মূল্যের সুরার বোতলের দাম দিতে গিয়ে ২০ হাজার টাকা ধরান তিনি। দোকানের মালিক যদিও ১৮ হাজার টাকা ফেরত দেন তাঁকে। কার্ডে দাম দিয়েছিলেন তিনি। সুরার দোকানের মালিক বাকি টাকা ফেরত দেন নগদেই। সেই টাকাই ছিল গাড়িতে।


অজ্ঞাত পরিচয় অভিযুক্তের নাম-পরিচয় এখনও পর্যন্ত সামনে আসেনি যদিও। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তাঁকে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। যদিও ওই গাড়ি এবং তার মধ্যে থাকা ল্য়াপটপ উদ্ধার করা গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বিষয়টি চাউর হতে সময় লাগেনি। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছে। বাস্তবে এমন ঘটতে পারে, তা কার্যত বিশ্বাসই করে উঠতে পারছেন না কেউ। নয়ের দশকে কাদের খান বা গোবিন্দের ছবিকেও এই ঘটনা হার মানায় বলে মত সকলের।