মোরাদাবাদ: মধ্যবিত্ত জীবনের খরচ-খরচা চালিয়ে তিলে তিলে সঞ্চয় গড়ে তোলেন সাধারণ মানুষ। কিছু টাকা জমলেই ব্যাঙ্কে জমা রাখতে ছোটেন। গয়নাগাটি সামলে রাখতেও ভরসা সেই ব্যাঙ্কের লকার। তাই লকারে তিল তিল করে জমানো টাকা রেখে নিশ্চিন্তেই ছিলেন অলকা পাঠক। যদি খরচ হয়ে যায়, সেই ভয়ে একবছর লকার খুলেও দেখেননি তিনি। এতদিন পর যাও বা লকার খুললেন, টাকার পরিবর্তে হুড়মুড় করে ঝরে পড়ল ধুলোর রাশি। (Viral News)


কোনও অলৌকিক ঘটনা নয়, দুষ্টু লোক টাকা ঝেঁপে দিয়েছে, এমনও নয়। বরং তিল তিল করে জমানো অলকার ১৮ লক্ষ টাকা চলে গিয়েছে উইপোকার পেটে। বিষয়টি সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেখানে যে ছবি সামনে এসেছে, তাতে দেখা গিয়েছে, লকারের পাল্লা খোলা। মাটি-ধুলো লেগে তার ভিতর। নীচে মেঝেতে পড়ে রয়েছে ধুলো-ময়লা। (Moradabad Bank Locker)


উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদের বাসিন্দা অলকা। মেয়ের বিয়ের জন্য একটু একটু কের ১৮ লক্ষ টাকা জমিয়েছিলেন। গত বছর অগাস্ট মাসে ব্যাঙ্ক অফ বরোদার আশিয়ানা শাখার লকারে ওই টাকা রেখে আসেন তিনি। তার পর আর ওই মুখো হননি তিনি। সম্প্রতি ব্যাঙ্ক থেকে ফোন যায় তাঁর কাছে। লকার সংক্রান্ত চুক্তি পুনর্নবীকরণ করতে বলা হয়। পরিচয়, বাড়ি, রোজগার নিয়ে বিশদ তথ্যও জমা করতে বলা হয়। 


আরও পড়ুন: Basangouda Patil Yatnal: নেহরু নন, দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী নেতাজি, দাবি বিজেপি নেতার


সেই মতোই ব্যাঙ্কে পৌঁছেছিলেন অলকা। সব ঠিক আছে কিনা দেখতে লকার খোলেন তিনি। তাতেই চমকে ওঠেন তিনি। দেখা যায়, উইপোকার হানায় কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। টাকার বান্ডিলের পরিবর্তে শুধু মাটি পড়ে রয়েছে লকারের ভিতরে। গোটা ঘটনায় স্তম্ভিত হয়ে যান ব্যাঙ্কের কর্মীরাও। তড়িঘড়ি ব্যাঙ্ক অফ বরোদার সদর দফতরে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানানো হয়।


এই ঘটনায় ভেঙে পড়েছেন অলকা। তাঁর দাবি, ব্যাঙ্কের কর্মীরা বিষয়টি নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করছেন না। তাঁদের কাছ থেকে সাহায্য় না পেলে, অন্য উপায় দেখবেন এবং যতদূর যাওয়া যায়, যাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে এ ব্যাপারে হাত তুলে নিয়েছেন ব্য়াঙ্কের কর্মীরাও। কারণ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার নিয়ম অনুযায়ী, ব্য়াঙ্কের লকারে নগদ টাকা রাখা একেবারে নিষিদ্ধ।


ব্যাঙ্ক অফ বরোদার লকার চুক্তিতেও স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে তার। বলা রয়েছে, 'মূল্যবান গহনা, গুরুত্বপূর্ণ নথিই শুধু রাখতে পারবেন গ্রাহকরা। সেই বাবদই লকারের লাইসেন্স প্রদান করা হবে। লকারে কোনও নগদ টাকা রাখা যাবে না'। ব্যাঙ্ক অফ বরোদার ওয়েবসাইটে বলা রয়েছে, লকারে রাখা জিনিস চুরি গেলে, ডাকাত লুঠ করে নিয়ে গেলে, তার দায় ব্যাঙ্কের। আগুন লাগলে, বিল্ডি ভেঙে পড়লেও ক্ষতিপূরণ মিলবে। কিন্তু নগদের কথা উল্লেখ নেই কোথাও।