নয়াদিল্লি: এক বিছানায় শোয়া থেকে মনের কথা বলা, সবকিছুর দাম ধরতেন স্ত্রী। সেই নিয়ে মামলা গড়িয়েছিল আদালতে। শেষ পর্যন্ত স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদে আইনি সিলমোহর পড়ল। কোনও ভাবে বিয়ে বাঁচানো যায় কি না, সেই মর্মে আবেদন জমা পড়লেও, আদালত জানিয়ে দিল, এই বিয়ে ঠিক করা তাদের পক্ষেও সম্ভব নয়। (Viral News)


তাইওয়ান থেকে এই ঘটনা সামনে এসেছে, যা চিনা সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রাক্তন ওই দম্পতির নাম-পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে। জানা গিয়েছে, ২০১৪ সালে বিবাহবন্ধনে বাঁধা পড়েন তাঁরা। তাঁদের দুই সন্তানও রয়েছে। বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন জানানো যুবকের দাবি, স্ত্রী বিবাহবিচ্ছেদ চাইছিলেন না। কিন্তু ২০১৭ সাল থেকে মাসে একবারও ঘনিষ্ঠ হবেন বলে নিয়ম বেঁধে দেন স্ত্রী। ২০১৯ সাল থেকে কোনও ঘনিষ্ঠতাই ছিল না। (Taiwan Couple Divorce)


ওই যুবকের দাবি, ২০২১ সালে পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে দাঁডায়। কারণ ওই বছর নতুন নিয়ম চালু করেন স্ত্রী, যার আওতায় কথা বলতে গেলেও স্ত্রীকে টাকা দিতে হতো তাঁকে। ঘনিষ্ঠ হতে চাইলেও ফেলতে হতো টাকা। ওই যুবকের দাবি, প্রত্যেক বার কথা বলতে গেলে এবং ঘনিষ্ঠ হতে গেলে ১৫ ডলার করে নিতেন স্ত্রী, ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ১২৬০ টাকা। এতেই তিনি ধৈর্য হারান বলে জানিয়েছেন ওই যুবক। 


ওই যুবক আরও জানিয়েছেন, আত্মীয়স্বজনদের কাছেও তাঁর নামে যা নয়, তা বলে যেতেন স্ত্রী। ২০২১ সালেই বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন জানান তিনি। কিন্তু সেইসময় স্ত্রীর অনুরোধেই সেই আবেদন তুলে নেন তিনি। সম্পর্ককে সহজ করে তুলতে চেষ্টা চালাবেন বলে কথা দিয়েছিলেন স্ত্রী। এর পর স্ত্রীর নামে সম্পত্তিও লিখে দেন তিনি। কিন্তু তার পরও কিছু পাল্টায়নি। আগের মতোই মানসিক অত্যাচার চলতে থাকে। কথা বলতে গেলে, ঘনিষ্ঠ হতে গেলে টাকার দাবি করেন স্ত্রী। 


বেশি কিছু দিন মুখ বুজে থাকার পর এ বছরের গোড়ায় আবারও বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করেন ওই যুবক। তিনি জানান, দু'বছর ধরে কথাই নেই স্ত্রীর সঙ্গে। প্রয়োজনে মেসেজিং অ্যাপে পরস্পরকে বার্তা পাঠিয়ে দেন তাঁরা। ম্যারেজ কাউন্সেলিং-ও কাজ দেয়নি বলে জানান ওই যুবক। শেষ পর্যন্ত আদালত বিবাহবিচ্ছেদ মঞ্জুর করে। আদালত জানায়, এই বিয়ে বাঁচানো তাদের কম্মো নয়। এর পর বিবাহবিচ্ছেদের বিরোধিতা করে উচ্চ আদালতে যান ওই মহিলা। কিন্তু সেখানে তাঁর আবেদন খারিজ হয়ে যায়।



এমন ঘটনা যদিও এই প্রথম নয়। এর আগেও এমন একাধিক ঘটনা সামনে এসেছে তাইওয়ান থেকে। ২০১৪ সালে এমন একটি মামলা সামনে আসে, যেখানে স্বামীর ঘনিষ্ঠ হতে প্রতি বার স্ত্রী ৬০ ডলার করে নিতেন বলে জানা যায়, ভারতীয় মুদ্রায় যা ৫ হাজার টাকার বেশি। একসঙ্গে খাওয়া, গল্প করার জন্যও টাকা চাইতেন স্ত্রী। সেই মামলা আদালতে উঠলে স্ত্রী জানান, সংসারের কোনও দায়দায়িত্ব নেন না স্বামী, তাই সেভাবে টাকা আদায় করতেন তিনি। এর পর তাঁদের সন্তানও আদালতে মামলা করে। তাদের সঙ্গে কথা বলতে হলেও বাবাকে টাকা দিতে হবে বলে জানায় তারা। শেষ পর্যন্ত পরিবারকে প্রতি মাসে ৬০০ ডলার করে দিতে রাজি হন ওই ব্যক্তি, ভারতীয় মুদ্রায় যা ৫০ হাজার টাকার বেশি। গতবছর তাইওয়ানে বিবাহবিচ্ছেদের হার ছিল ০.১২৮ শতাংশ, যা এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ।