কলকাতা: আরজি কর-এ নির্যাতিতার ধর্ষণ-খুনে তোলপাড় গোটা দেশ। 'বিচারের দাবি'তে একের পর এক রাত দখল করে মিছিল করছে কলকাতা। সেই আবহে সামনে এল এক মায়ের কাহিনী। এক লড়াইয়ের কাহিনী।
সম্প্রতি কন্টেন্ট ক্রিয়েটার আয়ূষ গোস্বামী একটি ডকুমেন্টেড সিরিজ করেছিলেন, সেই ভিডিওটিই ভাইরাল হয়েছে সোশাল মিডিয়ায়। ইতিমধ্যেই ৬ মিলিয়ন ভিউজ হয়েছে ভিডিওটির। ওই ভিডিওতেই শোনা যাচ্ছে সেই মায়ের করুণ কাহিনী।
বছর ৫৫ -এর ওই মহিলা বর্তমানে অটো চালান জীবন চালাতে। সারাদিন বাড়িতে সংসার সামলে শেষে পেট চালাতে সন্ধ্যে থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত অটো চালান। পরিবার বলতে অবশ্য ছেলে আর তিনি। একাই মানুষ করেছেন ছেলেকে। কিন্তু সেই ছেলেই এখন আর দেখে না, এমনটাই জানিয়েছেন পঞ্চাষোর্ধ্ব ওই মহিলা।
ভিডিওতে তাঁকে বলতে শোনা যাচ্ছে, 'সবারই নিজের নিজের কিছু অসুবিধা রয়েছে। আর ঘরে ঘরে কিছু না কিছু সমস্যা তো লেগেই থাকে। দিনে কাজের সুযোগ থাকে না আমার। তাই রাতেরি গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ি। কী আর করব বলুন।' এও জানান যে সারাদিনে সংসারের সব কাজ সামলে তবেই উপার্জনের এই পথে হাঁটতে পারেন তিনি।
কথা বলছিলেন বটে, কিন্তু গলা ধরে আসছিল এই মায়ের, চোখ ছলছল। প্রশ্ন ওঠে ছেলে তো আছে, তাও কেন এই বয়সে এই ঝুঁকির কাজ করে চলেন? প্রথমে কিছুক্ষণ চুপ থাকেন। থেমে বলেন নিজের সেই মানসিক লড়াইয়ের কথা। জানান, ছেলে কিছু করে না। কিন্তু পেট তো চালাতে হবে, তাই এই পথই বেছে নিয়েছেন তিনি।
পঞ্চাষোর্ধ্ব মহিলার কথায়, 'আমার এক ছেলে আছে বটে কিন্তু কাজকর্ম কিছুই করে না। উল্টে আমাকে মারধর করে ঝগড়া করে আমার থেকে টাকাপয়সা নিয়ে নেয়। না দিলে ঘরবাড়ি সব ভেঙে দেয়। আমার সন্তানই আমার সম্মান দেয় না, আর আমার কী বলার থাকতে পারে। ভিক্ষা করার থেকে ভাল কাজ করে উপার্জন করার।'
এই ভিডিও ভাইরাল হতেই কমেন্ট সেকশনে ওই মহিলার পাশে দাঁড়ানোর ডাক দিয়েছেন অনেকেই। নিজের জীবনের সমস্ত প্রতিকূলতাকে দূরে রেখে, মানসিকভাবে ভেঙে না পড়ে যেভাবে জীবনকে যাপন করে চলেছেন, সেই লড়াইকেই কুর্নিশ জানিয়েছেন অনেকে।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে