গোরক্ষপুর: মদ্যপ স্বামী নিয়ে জেরবার অবস্থা। সেই যন্ত্রণাই দুই মহিলাকে কাছাকাছি নিয়ে এল। স্বামীর ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন তাঁরা। হাত ধরলেন পরস্পরের। পরস্পরকে জীবনসঙ্গী হিসেবে গ্রহণ করলেন তাঁরা। বিয়ে সারলেন মন্দিরে গিয়ে। তবে কোনও রাখঢাক নয়, সকলের চোখে চোখ রেখেই পা রাখলেন ভবিষ্যৎ জীবনে। (Viral News)
উত্তরপ্রদেশের দেওরিয়ার ঘটনা। কবিতা এবং গুঞ্জা, ওরফে বাবলু নামের দুই মহিলা পরস্পরকে বিয়ে করেছেন। স্থানীয় শিবমন্দির, যা ছোটি কাশী নামেও পরিচিত, সেখানে গিয়ে কবিতার মাথায় সিঁদুর পরিয়ে দেন গুঞ্জা ওরফে বাবলু। দু’জনেরই আগে বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু স্বামীর হাতে নির্যাতনের শিকার হতে হয় তাঁদের। সেই যন্ত্রণাই তাঁদের মিলন ঘটিয়েছে বলে জানান নবদম্পতি। (Uttar Pradesh News)
বৃহস্পতিবার মন্দিরে বিয়ে সারেন কবিতা এবং গুঞ্জা ওরফে বাবলু। সংবাদমাধ্যমে তাঁরা জানান, আগের সংসার জীবনে একটুও শান্তি পাননি। মদ্যপানের আসক্তি ছিল তাঁদের স্বামীদের। সেই নিয়ে সংসারে শুধু অশান্তিই লেগে থাকত না, স্বামীদের হাতে মারও খেতে হতো। জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছিল তাঁদের। আর সেই সময়ই ইনস্টাগ্রামে পরস্পরের সঙ্গে পরিচয় ঘটে। সংসার জীবনের যন্ত্রণার কথা ভাগ করে নেন পরস্পরের সঙ্গে। আর সেই যন্ত্রণাই তাঁদের কাছাকাছি নিয়ে আসে।
ভয়াবহ সেই অভিজ্ঞতা কাটিয়ে বেরোতে পরস্পরকে সাহায্য় করেন কবিতা এবং গুঞ্জা ওরফে বাবলু। আর তাতেই পরস্পরের আরও ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন তাঁরা। অতীত ভুলে একসঙ্গে নতুন জীবনে প্রবেশের সিদ্ধান্ত নেন। সমাজ-সংসার কী বলবে, তার চিন্তা আপাতত করছেন না দু’জনের কেউই। একসঙ্গে ভাল থাকতে চান তাঁরা।
ছোটি কাশীতে বিয়ে করতে গেলে, স্বামীর ভূমিকা পালন করেন গুঞ্জা ওরফে বাবলু। কবিতার মাথায় সিঁদুর পরিয়ে দেন তিনি। হাতে হাত রেখে সাতপাকও ঘোরেন। তিনি বলেন, “,মদ্যপ, অত্যাচারী স্বামীর হাতে অনেক অত্যাচার সয়েছি আমরা। আর তাই শান্তি এবং ভালবাসায় ভরা জীবন বেছে নিয়েছি। আমরা গোরক্ষপুরেই থাকব। সংসার চালাতে কাজ করব দু’জনেই।” গোরক্ষপুরে বাড়ি ভাড়া নিতে চাইছেন তাঁরা।
যে ছোটি কাশী মন্দিরে বিয়ে সারেন কবিতা এবং গুঞ্জা ওরফে বাবলু, সেই মন্দিরের পুরোহিত উমাশঙ্কর পান্ডে জানিয়েছেন, নিজেরাই মালা, সিঁদুর কিনে এনেছিলেন ওই দুই মহিলা। নিজেদের মতো করেই আচারানুষ্ঠান পালন করেন তিনি। কোনও শোরগোল ছাড়া, শান্তিপূর্ণ ভাবেই সব রীতি সারেন। এর পর যেমন এসেছিলেন, সেভাবেই বেরিয়ে যান।