কলকাতা: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কের কর্মীদের বাধ্য করা হয়েছিল প্রতি সপ্তাহে ১১০ ঘণ্টা করে কাজ করতে। আর তাঁর ফলস্বরূপ সেই ব্যাঙ্কের দুই কর্মী (Work Pressure) গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। এদের মধ্যে একজনের অঙ্গ বিকল (Organ Failure) হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে জানান চিকিৎসকেরা। হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে জানা যায় একজন কর্মীর অগ্ন্যাশয় বিকল হয়ে গিয়েছে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে এই প্রতিবেদন প্রকাশ পেয়েছে।

রবার্ট ডব্লিউ বেয়ার্ডের শিল্পপতিদের গ্রুপ থেকেই এর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। এটি মিলওয়াকির একটি আর্থিক পরিষেবা সংস্থা যা তাদের লো-প্রোফাইল সংস্কৃতির জন্য সুপরিচিত। যদিও আদপে সপ্তাহে ১১০ ঘণ্টা কাজ করা মোটেও খুব একটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। এই ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কের পূর্বতন কর্মীরা তাই জানিয়েছেন। তারা আরও জানিয়েছেন যে প্রতি শনিবার করে যে ছুটি বরাদ্দ ছিল ব্যাঙ্কে, সেটি কেবলমাত্র পেতেন ব্যাঙ্কের ম্যানেজাররা।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৪ সালের শুরুর দিকেই এই ব্যাঙ্কের জুনিয়র টিমের বেশ কিছু সদস্য সংস্থা ছেড়ে দিয়েছেন। এই বছরও বেশ কয়েকজন চাকরি থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করার পরে দুজন ব্যক্তিকে হাসপাতালে যেতে হয়। এদের মধ্যে একজন আগেই ব্যাঙ্কের এইচআর বিভাগে জানিয়েছিলেন যে কাজের চাপে তিনি অস্থির হয়ে আছেন। প্রবল ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন সেই ব্যাঙ্ককর্মী, তারপর বাড়িতে হঠাৎ করেই তাঁর শরীরে অস্থিরতা শুরু হয়। রোগ নির্ণয় করার পরে জানা যায় যে তাঁর অগ্ন্যাশয় বিকল হয়ে গিয়েছে। আর তারপরে সেই কর্মীকে পারফরম্যান্স ও প্রোডাক্টিভিটি খারাপ এই কারণে সংস্থা থেকে বরখাস্ত করা হয়। চিকিৎসকরা জানান যে এই সমস্ত কিছুর মূলে রয়েছে অত্যধিক কাজ করা।

এই ব্যাঙ্কের একজন পূর্বতন অ্যানালিস্ট জানিয়েছেন যে এই সংস্থায় প্রায়ই পিচ মেটেরিয়াল তৈরির জন্য সকল কর্মীকে সারা রাত ধরে জাগিয়ে রাখা হত। আর তারও এক বছরের একটি চুক্তি হঠাৎ বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এক সন্ধ্যায় রাতের খাবার খেতে নিজের ডেস্ক ছেড়ে ২৫ মিনিট যখন বাইরে ছিলেন সেই অ্যানালিস্ট, তাঁর ম্যানেজার তাঁকে হুমকি দিয়ে বলেছিলেন যে কারণ না জানিয়ে ৫ মিনিটের বেশি যেন বাইরে না থাকা হয় কখনও।

সাম্প্রতিক সময়ে দুজন জুনিয়র ব্যাঙ্ককর্মী জেফারিজের কার্টার ম্যাকিনটোস এবং ব্যাঙ্ক অফ আমেরিকার ব্যাঙ্ককর্মী লিও লুকেনাস প্রতি সপ্তাহে ১০০ ঘণ্টা কাজ করার দরুণ মারা যান, সেই সংবাদ প্রকাশ করেছিল নিউ ইয়র্ক পোস্ট।