কলকাতা: ছোট্ট একটা প্রাণী, কাত করে দিতে একটা গোটা মানুষকে। এমন একটি রোগ, যার জন্য একসময় উজাড় হয়ে গিয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। চিকিৎসার অভাবে মারা গিয়েছেন বহু। বলা হচ্ছে ম্যালেরিয়ার কথা।  আফ্রিকা ও এশিয়া (মূলত দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে প্রকোপ ম্যালেরিয়ার)। ঔপনিবেশিক যুগেরও আগে থেকে দাপট রয়েছে ম্যালেরিয়া। মশাবাহিত এই রোগের শিকার হয়েছেন বহু লোক। বাংলা তথা ভারতের বহু সাহিত্যে ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাবের বহু ঘটনার কথা উঠে এসেছে। মারণ হলেও এই সংক্রমণ ঠেকানো যায়, আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের ,সাহায্যে সুস্থও করে তোলা যায়। সচেতন করতেই প্রতিবছর ২৫ এপ্রিল দিনটি পালন করা হয় বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস (World Malaria Day) হিসেবে।


কীভাবে সংক্রমণ:
অ্যানাফেলিস মশার মাধ্যমে ম্যালেরিয়া সংক্রমণ ছড়ায়। মশার লালারসের মাধ্যমে রক্তে মেশে। তারপর লিভারে বংশবৃদ্ধি হয় ম্য়ালেরিয়ার জীবাণুর। তারপরেই আসে কাঁপুনি দিয়ে জ্বর। সঙ্গে একাধিক উপসর্গও দেখা যায়।


ম্যালেরিয়া চেনার ইতিহাস:
আঠারোশো শতকের শেষদিকে ম্য়ালেরিয়ার জন্য দায়ী পরজীবীকে চিহ্নিত করেন বিজ্ঞানী চার্লস ল্যাভেরন। তাতেই প্রথম খোঁজ মেলে কী কারণে ম্যালেরিয়া হয়। তারই কয়েক বছর পরে ভারতে কর্মরত ব্রিটিশ চিকিৎসক ও বিজ্ঞানী স্যার রোনাল্ড রস আবিষ্কার করেন যে ম্যালেরিয়ার জন্য দায়ী স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশা। এই কারণেই চিকিৎসা বিজ্ঞানে নোবেল পান তিনি।


কোথায় প্রভাব:
প্রতিবছর আফ্রিকা মহাদেশের বিপুল সংখ্যক বাসিন্দা, মূলত শিশুরা ম্য়ালেরিয়ার আক্রান্ত হন। অনেক মৃত্যুও ঘটে। প্রথমে পালিত হত আফ্রিকা ম্যালেরিয়া ডে। ২০০১ সালে থেকে আফ্রিকার দেশগুলি সচেতনতা ছড়াতে এই দিবটি পালন করত। পরে World Health Assembly-র ষাটতম অধিবেশনে আফ্রিকা ম্যালেরিয়া দিবসকে, বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবসে পরিণত করা হয়।


এখনও গুরুত্বপূর্ণ:
চিকিৎসা বিজ্ঞানে উন্নতির পরেও এখনও এই রোগের নির্মূল করা যায়নি। ফলে মশা দূর করতে, মশার লার্ভা ধ্বংস করার বার্তা দেওয়া হয়। বিভিন্ন দেশের সরকারের তরফে সচেতনতা প্রচার করা হয়। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যান।


আরও পড়ুন: হঠাৎ করেই হেপাটাইটিস, ইউরোপের ঘটনায় উদ্বেগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা