লোন অ্যাপে রয়েছে প্রতারণার ফাঁদ, আপনার গোপন তথ্য় নিয়ে হচ্ছে ব্ল্যাকমেলিং
অনেক সময় আমাদের চিন্তা বাড়ায় জীবনের অপ্রত্যাশিত ঘটনা। প্রত্যেকের জীবনেই আকস্মিক পরিস্থিতি আসতে পারে। সেই ক্ষেত্রে কখনও হঠাৎ করে কেউ চাকরি হারায়, আবার কেউ দুর্ঘটনার শিকার হন। কেউ-কেউ গুরুতর অসুস্থতার শিকার হলে পরিবারে আর্থিক সঙ্কট সৃষ্টি হয়।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appএই পরিস্থিতিতে মানুষ ঋণ নিয়ে বা ধার নিতে বাধ্য হয়। প্রথমে ঘনিষ্ঠ বন্ধু বা আত্মীয়দের কাছ থেকে সাহায্য নেওয়ার চেষ্টা করি আমরা। যাদের কাছে এই বিকল্প নেই, তারা ঋণ নেওয়ার চেষ্টা করে। সেই ক্ষেত্রে সহজে লোনও পাওয়া যায়। যদিও কিছু লোক এই ঋণের ফাঁদে পড়ে যান। পরবর্তীকালে যার ফল হয় মারাত্মক।
আজকের ডিজিটাল যুগে, এই ধরনের অনেক অ্যাপ (Instant Loan Apps) বাজারে এসেছে। যা মিনিটের মধ্যে ঋণ দেওয়ার ভান করে। এই ধরনের অফার প্রায়ই সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখা যায়, যেখানে তারা সস্তায় অনেক ডকুমেন্টেশন ছাড়াই ঋণ দেওয়ার জন্য লোভ দেখায়। অভাবী মানুষ এই অফারগুলিতে পা দিয়ে ফাঁদে পড়েন।
মিনিটে লোন পাওয়ার লোভে যারা এসব অ্যাপের চক্রে আটকে থাকে তারা মারাত্মক পরিণতি ভোগ করে। এই ধরনের অ্যাপের ফাঁদে পড়ে ব্ল্যাকমেলিংয়ের কারণে অনেক মানুষ আত্মহত্যা করেছে ,এমন হাজার হাজার ঘটনা ঘটেছে। প্রথমেই জেনে নিন, এই ধরনের অ্যাপগুলো ঋণের ওপর বিশাল সুদ নেয়, যা ব্যাঙ্কের থেকে বহুগুণ বেশি।
এমনকী যদি একটি কিস্তিও সময়মতো পরিশোধ না করা হয়, তাহলে এই অ্যাপগুলি একাধিক জরিমানা আরোপ করে। এইভাবে, তাত্ক্ষণিক ঋণ অ্যাপগুলি থেকে ঋণ নেওয়া ক্রেডিট স্কোরকে প্রভাবিত করে।
পরিসংখ্যান বলছে, তাত্ক্ষণিক ঋণের এমন বেশিরভাগ অ্যাপই আরবিআই বা কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক দ্বারা অনুমোদিত নয়। এদের কাজ কেবল প্রতারণা করা। এই ধরনের অ্যাপ লোন দেওয়ার আগে ব্যবহারকারীর ফোন থেকে সংবেদনশীল তথ্য চুরি করে। এই অ্যাপগুলি ঋণগ্রহীতার ফোনে সংরক্ষিত নম্বর ও ফটোগুলিও অ্যাক্সেস করে৷ ঋণগ্রহীতা কিস্তি দিতে দেরি করলে তাদের সঙ্গে শুরু হয় ব্ল্যাকমেইলিং।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, অ্যাপগুলি ঋণ দেওয়ার আগে বেশি চার্জ কেটে নেয়। অনেক সময় কিছু লোক অ্যাপের হয়ে ঋণগ্রহীতাকে ফোন করে গালিগালাজ করে।আর্থিক সমস্যার পরে যা ঋণগ্রহীতাদের ওপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করে।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (RBI) এই বিষয়ে অনেক অভিযোগ পেয়েছে, যার পরF এই ধরনের ডিজিটাল লোন অ্যাপগুলিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, কেবল ব্যাঙ্ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির ঋণ দেওয়ার বা কিস্তি সংগ্রহের অধিকার রয়েছে।
এতে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। ঋণ বিতরণ বা ঋণের কিস্তি সংক্রান্ত সব লেনদেন ঋণগ্রহীতার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও নিয়ন্ত্রিত ঋণ প্রদানকারীদের মধ্যে হওয়া উচিত। আবেদন ফি এমন হবে না, যা ঋণগ্রহীতাদের উপর সৃষ্টি করে। কেবল সেইসব তথ্য সংগ্রহ করা উচিত যা সত্যিই প্রয়োজন। এর জন্য অডিটও প্রয়োজন। গ্রাহকের অনুমোদন ছাড়া ঋণের সীমা বাড়ানো যাবে না।
যদি কোনো অফার অদ্ভুত মনে হয়, তাহলে তা থেকে নিজেকে দূরে রাখুন। আপনি যদি এমন কোনও অ্যাপ দেখেন তবে অবিলম্বে রিপোর্ট করুন। আপনি এই ধরনের অ্যাপ এবং অফার সম্পর্কে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে অভিযোগ করতে পারেন। পুলিশের কাছেও অভিযোগ করা যেতে পারে।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -