Arokiaswamy Velumani: কোনও রকমে একবেলার খাবার জুটত, Thyrocare কর্ণধার আজ ২৬ হাজার কোটির মালিক
স্বাস্থ্য পরিষেবার উপর নির্ভর করে গোটা দেশ। ভারতে সেই স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্ষেত্রের অন্যতম চরিত্র হলেন ডঃ অরোকিয়াস্বামী বেলুমণি।ডায়াগনস্টিক এবং প্রিভেন্টিভ হেলথকেয়ার পরিষেবায় অন্যতম উল্লেখযোগ্য নাম তিনি। কিন্তু তাঁর উত্থানের গল্প হার মানায় যে কোনও সিনেমাকে।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appথাইরোকেয়ার টেকনোলজিস লিমিটেড-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর বেলুমণি। সংস্থার সদর দফতর নবী মুম্বইয়ে। চিকিৎসা পরিষেবাক্ষেত্রে ভারতের অন্যতম বৃহৎ সংস্থা থাইরোকেয়ার।
কিন্তু থাইরোকেয়ারের কুলপতি বেলুমণির লড়াইয়ের কাহিনী জানেন কম মানুষই। আসলে কৃষকের ঘরে জন্ম তাঁর। দিনে একবেলা খাওয়া জুটত কোনও রকমে। আজ কোটি কোটি টাকার মালিক তিনি।
কোয়েমবাত্তূরে জন্ম বেলুমণির। বাবা ছিলেন কৃষক। বাড়ির গোয়াল থেকে বাড়ি বাড়ি ঘটি নিয়ে মহিষের দুধ বিক্রি করতেন মা। কোনও রকমে একবেলা খাবার জুটত তাঁদের। কিন্তু পরিস্থিতির সঙ্গে আপস করেননি বেলুমণি। বরং পৃথিবীর বৃহতত্ম থাইরয়েড পরীক্ষা সংস্থা গড়ে তুলেছেন।
কিন্তু সেই অভাবের সংসারেও ছেলেকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করার স্বপ্ন দেখেছিলেন বেলুমণির মা-বাবা। তৎকালীন মাদ্রাজ ইউনিভার্সিটি থেকে বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক হন বেলুমণি।
পরবর্তী কালে মুম্বই চলে যান। ইউনিভার্সিটি অফ মুম্বই থেকে ১৯৮৫ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এর পর থাইরয়েড কেমিস্ট্রি নিয়ে ডক্টরের ডিগ্রি অর্জন করেন বেলুমণি।
নিজের পরিশ্রমে প্রথম ১৫০ টাকা অর্জন করেন বেলুমণি। স্নাতক হয়ে চাকরির খোঁজে নেমে জেমিনি ক্যাপসুল নামের একটি ছোট ওষুধের সংস্থায় কাজ নেন। সেখানে নিরাপত্তারক্ষীর চেয়েও কম বেতন ছিল, ১৫০ টাকা।
সেই টাকাও বুঝেশুনে খরচ করতেন বেলুমণি। ১৫০ টাকার বেতন থেকে ৫০ টাকা নিজের জন্য রাখতেন। ১০০ টাকা পাঠাতেন বাড়িতে। চার বছর ওই সংস্থায় কাজ করেন তিনি। তার পর সংস্থাটি ভেঙে পড়লে, চাকরি চলে যায়।
প্রথম চাকরি হারানোর পর ভাবা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টারে যোগ দেন বেলুমণি, যা হাতে চাঁদ পাওয়ার মতো ছিল তাঁর কাছে। সেখানে ১৪ বছর চাকরি করেন তিনি। আর সেখান থেকেই বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি সম্পর্কে সম্যক ধারণা তৈরি হয় তাঁর।
বায়োকেমিস্ট্রির প্রতি বারবরই আকর্ষণ ছিল বেলুমণির। তাই থাইরয়েড বায়োকেমিস্ট্রি নিয়ে ডক্টরেড করার সুযোগ এলে, লুফে নেন। গবেষণা চলাকালীন কম খরচে থাইরয়েড পরীক্ষার উপায় বের করার ভাবনা মাথায় আসে।
সেই ভাবনা থেকেই, প্রভিডেন্ড ফান্ড ভাঙিয়ে মাত্র ১ লক্ষ টাকা পুঁজি নিয়ে থাইরোকেয়ারের প্রতিষ্ঠা করেন। নিজের সংস্থায় বেলুমণির প্রথম কর্মচারী ছিলেন তাঁর স্ত্রী সুমতি। সুমতি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার চাকরি ছেড়ে যোগ দেন থাইরোকেয়ারে।
১৯৯৬ সালে পুরোদস্তুর বাণিজ্যিক আকার ধারণ করে থইরোকেয়ার। বর্তমানে গোটা দেশে সংস্থার প্রায় ১২০০ আউটলেট রয়েছে। বাংলাদেশ, নেপাল-সহ পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশেও আউটলেট রয়েছে তাদের।
বেলুমণি এবং সুমতির দুই সন্তান, আনন্দ বেলুমণি এবং অমৃতা বেলুমণি। ২০১৬ সালে থাইরোকেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ৭ হাজার কোটি টাকা। বেলুমণির মোট সম্পত্তির পরিমাণ ২৬ হজার কোটি টাকার বেশি।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -