Hooghly News: হাজার ডাকেও ভাঙেনি ঘুম, ভাঙতে হল দরজা !
ঘুম নিয়ে গবেষণা নতুন নয়। খ্রীষ্টপূর্ব থেকেই এই ঘুম নিয়ে গবেষণা চলছে। তবে আধুনিক বিজ্ঞানের কথায় ঘুম হল একটি জৈবিক বিষয়। যা প্রাণীকুলের কাছে অত্যন্ত স্বাভাবিক। মানুষ সারা জীবনের প্রায় ৩৫% সময় ঘুমেই কাটিয়ে দেন। অর্থাৎ কেউ যদি ৬০ বছর বাঁচে তবে হিসেব কষলে দেখা যাবে তিনি জীবনের সাড়ে ২১ বছর ঘুমিয়েই কাটিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু ঘুম যদি হয় অবিরাম। কোনভাবেই যদি ঘুম না ভাঙ্গে। সেক্ষেত্রে পুরাণ মতে তিনি হলেন কুম্ভকর্ণ।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appহিন্দুপুরাণ রামায়ণে কুম্ভকর্ণকে রক্ষকুলের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে, তিনি ছিলেন রাবণের মধ্যম ভ্রাতা৷ কুম্ভকর্ণ তাঁর ভ্রাতাদ্বয় রাবণ ও বিভীষণের সহিত এক মহাযজ্ঞে অংশগ্রহণ করে তারা প্রজাপতি ব্রহ্মাকে তুষ্ট করতে সফল হন৷
কিন্তু ব্রহ্মার কাছে বর চাওয়ার সময় দেবরাজ ইন্দ্রের অনুরোধে দেবী সরস্বতী তার জিহ্বা আড়ষ্ট করে দেন৷ এই কারণে বর হিসাবে 'ইন্দ্রাসন' চাওয়ার বদলে তিনি 'নিদ্রাসন' চেয়ে বসেন৷ কথিত আছে টানা ৬ মাস ঘুমোতেন কুম্ভকর্ণ। পৃথিবী উল্টে গেলেও ঘুম ভাঙত না কুম্ভকর্ণের।
নাম সৌমেন নিয়োগী। সৌমেনবাবু চুঁচুড়ার বড়বাজারে একটি আবাসনের তিনতলায় থাকেন।
বছর ৪২-এর সৌমেনবাবু ভারতীয় রেলের শিয়ালদহ শাখায় লোকো পাইলট হিসাবে কর্মরত। শুক্রবার সৌমেনবাবুর স্ত্রী বিয়ের অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে বর্ধমানের মেমারিতে বাপের বাড়িতে গিয়েছেন।
শনিবার সৌমেনবাবু একাই ছিলেন বাড়িতে। আবাসন সূত্রে খবর এদিন সকাল ৯টা নাগাদ স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথাও হয় সৌমেনবাবুর। যদিও এদিন ঘর থেকে তাঁকে বের হতে দেখা যায়নি। সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ সৌমেনবাবুর স্ত্রী ওই আবাসনেরই আর এক আবাসিক মনোজিৎ দত্তকে ফোন করে স্বামীকে ডাকতে বলেন।
কিন্তু মনোজিৎবাবু সৌমেনবাবুকে বহু ডাকাডাকি করেও সাড়া পাননি। এরপর অন্যান্য আবাসিকরা সুর চড়িয়ে সৌমেনবাবুকে ডাকা শুরু করেন। কোথায় সৌমেনবাবু। গলা চেঁচানো, দরজায় নক, অনবরত কলিং বেল বাজানো কোনভাবেই সৌমেনবাবুর সাড়া মেলেনি। এরপর মনোজিৎবাবু বিষয়টি ফোনে সৌমেনবাবুর স্ত্রীকে জানান।
তিনি ঘরের দরজা ভেঙে দিতে বলেন এবং বিপদের আশঙ্কা করে বিয়ে বাড়ি থেকে পাততাড়ি গুটিয়ে চুঁচুড়ার দিকে রওনা দেন। মনোজিৎবাবুর দৌলতেই খবর যায় চুঁচুড়া থানায়। চুঁচুড়া থানার পুলিশ এসে পৌঁছয় দুপুর দেড়টা নাগাদ।
পুলিশ কর্মীরাও ডাকাডাকি করে সাড়া পাননি। এরপর পুলিশ লোক ডেকে মিস্ত্রী ডেকে আনেন। মিস্ত্রীর ছেনি হাঁতুড়ির ঘায়ে কোলাপসিবল গেটের তালা ভাঙা হয়।
এরপর আবাসনের দরজা ভাঙতেই সৌমেনবাবু ঘুম-ঘুম ভিতরের ঘর থেকে বেড়িয়ে আসেন। সমাপ্ত হয় নাটকের।
বাইরে টানা কয়েকঘন্টা ধরে যে সাসপেন্স চলছিল তিনি তা কিছুই জানেন না। তবে এ কোন ঘুম? যে ঘুম ভাঙাতে দরজা ভাঙতে হয় তা ভেবেই চক্ষু চড়কগাছ স্থানীয় বাসিন্দাদের। (তথ্য ও ছবি- সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়)
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -