Nabanna Abhijan: 'বারবার হাত জোড় করেছি...তাও পুলিশ লাঠিচার্জ করল' নবান্ন অভিযানে ধুন্ধুমার গঙ্গার এপার-ওপার
পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের ডাকে নবান্ন অভিযান। আর তা ঘিরেই সকাল থেকে টানটান উত্তেজনা। বিক্ষোভ ঠেকাতে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিল পুলিশ। মবিল লাগানো লোহার ব্যারিকেড, লোহার বারের সঙ্গে বাঁশের ব্য়ারিকেড, কন্টেনার কিছুই বাদ ছিল না। তারপরেও আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে 'পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ'-এর নবান্ন অভিযান ঘিরে রণক্ষেত্র, রক্তাক্ত হল রাজপথ। ব্যারিকেড ভাঙা, তারপরে লাঠিচার্জ, ধস্তাধস্তি, কাঁদানে গ্যাস, জলকামান কিছুই বাদ গেল না। জলকামানের তীক্ষ্ণ স্রোতের সামনে বুক চিতিয়ে জাতীয় পতাকা হাতে চলল বিক্ষোভ। কোথাও পুলিশের রক্ষণ ভেঙে গেল, রক্ত ঝরল পুলিশের, জখম হলেন আন্দোলনকারীরাও।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appনবান্ন অভিযানে সামিল হতে মঙ্গলবার সকালেই জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাস-ট্রেন ধরে রওনা হন বহু মানুষ। নানা জেলা থেকে শহরে এসেছেন বহু মানুষ। অভিযানে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, তার জন্য কলকাতার পাশাপাশি, নানা জেলায় নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা করে পুলিশ। শুরু হয় নাকা চেকিং।
এদিন প্রতিরোধের প্রাচীর গড়ে তুলতে ক্রেন দিয়ে রাস্তা আটকানো হয় কন্টেনার দিয়ে। ঝালাই করে বানানো হয় দৈত্যাকার গার্ডরেল। বালির বস্তা ফেলে শক্তপোক্ত করা হয় ব্যারিকেড। দুর্ভেদ্য দুর্গে পরিণত করা হয়েছিল রাজ্যের প্রশাসনিক ভবন নবান্ন ও তার আশপাশের এলাকা।
অভিযানের আগেই লাঠি হাতে রাস্তায় নামে স্পেশাল ফোর্স। জায়গায় জায়গায় গার্ডরেল দিয়ে ব্যারিকেড তৈরি করে পুলিশ। লাঠিধারী পুলিশের সঙ্গে মোতায়েন ছিল র্যাফ, কমব্যাট ফোর্স। প্রস্তুত রাখা হয় কাঁদানে গ্যাসের শেল।সকালে টহল দেন হাওড়ার পুলিশ কমিশনার প্রবীণকুমার ত্রিপাঠী।
নবান্নমুখী সাঁতরাগাছির রাস্তাতেও লাঠি, ঢাল নিয়ে মোতায়েন ছিলেন পুলিশ কর্মীরা। প্রস্তুত ছিল রোবো কপ, বজ্রযান, জল কামান। ড্রোন উড়িয়ে চলে নজরদারি। নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে সকাল সকাল পৌঁছে যান রাজ্য পুলিশের DG রাজীব কুমার। ওড়া ময়দান এলাকায় তৈরি করা হয় প্রায় ৭ ফুট উচ্চতার ব্যারিকেড। একটা ব্যারিকেডের সঙ্গে আরেকটি লোহার পাত লাগিয়ে ঝালাই করা ছিল। সেই ব্যারিকেড আবার বাঁশ দিয়ে বাঁধা।রাস্তায় গর্ত খুঁড়ে বসানো হয় লোহার পাইপ। সেই পাইপও সিমেন্ট দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। পিছনে লোহার বিমের ছাউনি। গার্ডরেল পাকাপোক্ত করতে মাঝখানে রাখা হয় বালির বস্তা।
কলকাতা থেকে হাওড়া। ছাত্র সমাজের নবান্ন অভিযান ঘিরে তবুও উত্তপ্ত হয়ে উঠল গঙ্গার দুই পাড়। পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বাঁধল আন্দোলনকারীদের। ভাঙল ব্য়ারিকেড। জলকামান, কাঁদানে গ্য়াস, লাঠিচার্জ করেও, নবান্নমুখী বিক্ষোভকারীদের আটকাতে হিমশিম খেল পুলিশ।
পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাবেশের ব্য়ানারে ডাকা নবান্ন অভিযান ঘিরে সাড়ে চার ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অবরুদ্ধ রইল শহর। গঙ্গার এপার-ওপার অর্থাৎ কলকাতা ও হাওড়া ২ শহরেই এদিন আন্দোলন ঘিরে রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল রাজপথ।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, শান্তিপূর্ণ মিছিল হচ্ছে বলে পুলিশকে বারবার অনুরোধ করা হলেও পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে। এদিন আন্দোলনে হিংসাত্মক ছবিও ধরা পড়েছে। আগুন জ্বলেছে, রক্ত ঝরেছে। উপড়ে ফেলা হল পুলিশি ব্য়ারিকেড। জলকামান-কাঁদানে গ্য়াস-লাঠিচার্জের সামনেও মাটি আঁকড়ে থাকলেন আন্দোলনকারীরা।
নবান্ন অভিযান ঘিরে ধুনধুমারের মধ্য়ে বুধবার ১২ ঘণ্টার বাংলা বনধের ডাক দিয়েছে বিজেপি। বুধবার সকাল ৬টা থেকে বিকাল ৬টা- এই ১২ ঘণ্টার সাধারণ বনধ ডাকা হয়েছে। একধাপ এগিয়ে রাজ্য়ে ৩৫৬ ধারা জারির পক্ষেও সওয়াল করেছেন শুভেন্দু অধিকারী।
নবান্ন অভিযানে আটকদের ছাড়াতে বিকেলে লালবাজার ঘেরাও অভিযান করে বিজেপি। মিছিল আটকায় পুলিশ। বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি বাধে পুলিশের। কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়। সব ছবি: PTI
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -