Sharmila Tagore unknown stories: সত্যজিৎ রায় থেকে শুরু করে শাম্মি কপূর.. শ্যুটিংয়ে শর্মিলার অদ্ভুত সব অভিজ্ঞতা
রাজেশ খন্না থেকে শুরু করে ধর্মেন্দ্র, কেরিয়ারে একাধিক মহাতারকার সঙ্গে পর্দায় জুটি বেঁধেছেন তিনি। তবে শাম্মি কপূরের সঙ্গে সিনেমা করতে গিয়ে যেন সবচেয়ে রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা হয়েছিল শর্মিলা ঠাকুরের (Sharmila Tagore)।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appসম্প্রতি কপিল শর্মার (Kapil Sharma) শোয়ে এসেছিলেন শর্মিলা। সেখানে রুপোলি জগতে তাঁর কেরিয়ারের নানা ঘটনার গল্প উঠে আসে। টয় ট্রেনে চেপে জানালার ধারে বই পড়তে পড়তে তাঁর সফর আর পাহাড়ের খাদের ধার ঘেঁষে জিপে সওয়ার রাজেশ খন্নার কণ্ঠে সেই অমর সঙ্গীত, ‘মেরি স্বপ্নো কী রানি কব আয়েগি তু?’ সেই প্রসঙ্গও তোলেন সঞ্চালক কপিল।
তবে শর্মিলা জানান, শাম্মি কপূরের (Shammi Kapoor) সঙ্গে কাজ করাটা অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং ছিল। এবং সেই প্রসঙ্গে বলতে গিয়েই সুপারহিট ‘ইভনিং ইন প্যারিস’ সিনেমার শ্যুটিংয়ের গল্প শুরু করেন নবাব পটৌডির ঘরনি।
শর্মিলা বলেন, ‘শাম্মি কপূর চিত্রনাট্যের বাইরে গিয়েও অনেক কিছু করতেন। ইভনিং ইন প্যারিস সিনেমার একটা দৃশ্য ছিল। আমি স্কি বোটিং করছি। আর হেলিকপ্টার থেকে ঝুলছেন শাম্মি কপূর। তারপরই আচমকা হেলিকপ্টারে ঝুলন্ত অবস্থায় নৌকায় ঝাঁপ মারেন শাম্মি।
শর্মিলা বলছেন, 'চিত্রনাট্যে মোটেও এরকম কিছু ছিল না। কোনও রিহার্সাল ছিল না, কোনও নির্দেশ ছিল না। সকলে চমকে উঠেছিলাম। শাম্মিজী এরকমই ছিলেন।’ পেশাদার স্টান্টম্যান যা করতে ভয় পেতেন, শাম্মিজী করে দিতেন নির্দ্বিধায়।'
তখন তাঁর বয়স মাত্র ১৩ বছর। বাবা-মা আসানসোলে থাকলেও, কলকাতায় দাদু ঠাকুমার কাছে থেকে পড়াশোনা করতেন তিনি। ছুটিতে যখন বাবা-মায়ের কাছে গিয়েছিলেন, তখন কাগজে চোখে পড়েছিল একটা বিজ্ঞাপন। 'অপুর সংসার' (Apur Sangsar) ছবির জন্য নায়িকা অর্থাৎ অপুর স্ত্রী-এর খোঁজ করছেন সত্যজিৎ রায় (Satyajit Roy)।
সেই কিশোরীর এক বোন তাঁকে বলেছিলেন, 'তুই একবার অডিশন দিয়ে দেখ'। সেই সময়ে হেসে উড়িয়ে দিয়েছিলেন সেই কথা। ছুটি শেষ হতেই কলকাতায় ফিরে এসেছিলেন। তারপরে একদিন যখন স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছেন তিনি.. এক অদ্ভুত কাণ্ড ঘটে। সেটাই তাঁর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। আজ, সেই কিশোরী রুপোলি পর্দার কিংবদন্তি। তাঁর জন্মদিনে, রইল তাঁর রুপোলি পর্দায় পা রাখার গল্প। রইল শর্মিলা ঠাকুর (Sharmila Tagore) থেকে অপর্ণা হয়ে ওঠার গল্প।
একটি সাক্ষাৎকারে শর্মিলা বলেছিলেন, 'অপুর স্ত্রী অপর্ণার খোঁজ চলছে নতুন ছবির জন্য, সেটা প্রথমে কাগজের বিজ্ঞাপনে দেখেছিলাম। তবে তখন বিষয়টায় তেমন নজর দিইনি। তারপরে একদিন আমি স্কুল থেকে ফিরছি, বাড়ি ঢোকার আগে হঠাৎ একজন অপরিচিত মানুষের সঙ্গে দেখা। একেবার আমার বাড়ির দরজায়। আমায় প্রশ্ন করলেন, আমার নাম কী? একটু অবাক হলাম, তবে উত্তর দিলাম। এরপর তিনি জানতে চাইলেন আমার বাবার নাম ও ফোন নম্বর। ঘাবড়ে গেলেও উত্তর দিলাম। এরপরে উনি চলে গেলেন। পরে জেনেছিলাম, অপর্ণাকে খোঁজার জন্য বিভিন্ন স্কুলে চর ছড়িয়ে রেখেছিলেন সত্যজিৎ রায় স্বয়ং। কোনও কিশোরীর চরিত্রের সঙ্গে মিল পাওয়া গেলে তার বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করা হত।'
অভিনেত্রী স্মৃতিচারণ করে বলে চললেন, 'আমার বাবার সঙ্গে কথা বলেছিলেন খোদ সত্যজিৎ রায়। তখন 'পথের পাঁচালি' কিংবদন্তি হয়ে উঠেছে। বাবা বুঝেছিলেন অপর্ণার চরিত্রে সুযোগ পাওয়া কতটা সম্মানের। তবে বাবা কেবল মানিকদাকে অনুরোধ করেছিলেন একটু স্ক্রিনটেস্ট নেওয়ার জন্য। আমায় যদি চরিত্রটায় সত্যিই মানায়, তবেই যেন নেওয়া হয়। এটুকুই ছিল বাবার ইচ্ছা। মানিকদা আমার স্ক্রিনটেস্ট নিয়েছিলেন ঠিকই তবে তা খুবই সামান্য। আমি তাতে পাশ করি। তারপরেই চিত্রনাট্য হাতে পাই। কাজ শুরু করি।'
তারপরের গল্প সবার জানা। 'অপুর সংসার'-এ যে বীজ বপন করে দিয়েছিলেন সত্যজিৎ রায়, আজ তা মহীরুহ। কিংবদন্তি।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -