Health News:শৈশবে মাত্রাতিরিক্ত 'স্ক্রিন টাইম' হৃৎপিণ্ডে ক্ষতির আশঙ্কা বাড়াতে পারে, দাবি নয়া গবেষণায়
বাড়িতে কোনও খুদে সদস্য রয়েছে? তা হলে হয়তো 'স্ক্রিন টাইম'- মতো বিষয় নিয়ে কখনও না কখনও আপনিও উদ্বিগ্ন হয়ে থাকতে পারেন। অতিমারির সময়ে বাচ্চাদের লেখাপড়া অনেকাংশেই মোবাইল বা কম্পিউটার নির্ভর হয়ে গিয়েছিল। পরবর্তীতে অফলাইন পড়াশোনা চালু হলেও কখনও লেখাপড়ার প্রয়োজনে, কখনও আবার অন্য নানা কারণে দিনের অনেকটা সময়ে বাড়ির খুদেটি হয় মোবাইল বা ল্যাপটপে বসে থাকে? এতে নানা ক্ষতির আশঙ্কা, সে কথা হয়তো আপনি শুনেছেন। হালের গবেষণা আরও একটি আশঙ্কার কথা জানাচ্ছে। যে সব শিশুর 'স্ক্রিন টাইম' বেশি, বড় হওয়ার পর তাদের হৃৎপিণ্ডে ক্ষতির আশঙ্কাও বেশি, উঠে এসেছে এই গবেষণায়।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appইউনিভার্সিটি অফ ইস্টার্ন ফিনল্যান্ডের গবেষক অ্যান্ড্রু আইবাহের তত্ত্বাবধানে একটি গবেষণাপত্র হালেই 'ইউরোপীয়ান সোসাইটি অফ কার্ডিওলজিকাল কংগ্রেস ২০২৩' পড়া হয়। তাতেই জানা যায়, সারাক্ষণ শুয়ে বসে কাটায় এমন শিশুদের ক্ষেত্রে তারুণ্যে হৃৎপিণ্ডে ক্ষতির আশঙ্কা বেশি। কিন্তু এখান থেকে স্ক্রিন টাইম ও হৃৎপিণ্ডে ক্ষতির সম্পর্কে কী করে উপসংহারে পৌঁছলেন বিজ্ঞানীরা?
এই জন্য নব্বইয়ের দশকে জন্মানো শিশুদের থেকে একাধিক তথ্য সংগ্রহ সংগ্রহ করেন গবেষকরা। নির্দিষ্ট করে বললে, ১৯৯০ থেকে ১৯৯১-এর মধ্যে জন্ম নিয়েছে এমন ১৪ হাজার ৫০০ শিশুর স্বাস্থ্য ও জীবনযাপনের একাধিক বিষয় খুঁটিয়ে দেখেন তাঁরা।
এই সমীক্ষায় যাদের বেছে নেওয়া হয়েছিল, তাদের ৭৬৬ জনকে ১১ বছর বয়সে স্মার্টওয়াচ পরতে বলা হয়। এর মধ্যে ৭ দিন ধরে তাদের গতিবিধির উপর নজর রাখেন গবেষকরা।
এদের যখন ১৫ বছর বয়স, তখন ফের একই প্রক্রিয়ার পুনরাবৃত্তি হয়। তৃতীয় বার একই ভাবে তথ্য সংগ্রহ করা হয় যখন এদের বয়স ২৪ বছর। তার পর সেই তথ্য, উচ্চতা, লিঙ্গ, রক্তচাপ, বডি ফ্যাট, তামাকের ব্যবহার, শারীরিক সক্রিয়তা এবং আর্থ-সামাজিক অবস্থানের ভিত্তিতে সাজিয়ে নেওয়া হয়।
সমীক্ষায় দেখা যায়, ১১ বছর বয়সে গড়ে প্রত্যেক দিন ৩৬২ মিনিট স্রেফ শুয়ে-বসে কাটিয়ে দিয়েছে ওই খুদের দল। ১৫ বছর বয়সে ওই পরিসংখ্যান পৌঁছয় ৪৭৪ মিনিটে। ২৪ বছর বয়সে সেটা আরও বাড়ে।
গবেষকরা জানান, যে সময়টা সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীরা শুয়ে বসে কাটিয়েছিল, তার অনেকটা জুড়ে ছিল 'স্ক্রিন টাইম'। এবং এখানেই চিন্তার একটা কারণ পেয়েছেন তাঁরা। কারণ ইকোকার্ডিওগ্রাফিতে দেখা যাচ্ছে, তরুণ-তরুণীদের মধ্যে তাঁদেরই হার্টের ফ্যাট বেশি জমেছে যারা কম বয়সে বেশি সময় শুয়ে-বসে কাটিয়েছিল।
গবেষকদের পূর্বাভাস, বয়স আরও বাড়ার পর এই তরুণ-তরুণীদের হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের আশঙ্কা বাড়তে পারে, যার মূল কারণ লুকিয়ে থাকবে শৈশবের'স্ক্রিন টাইম'-এ।
এই গবেষণা হয়তো 'স্ক্রিন টাইম' এবং হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নির্ধারণের ব্যাপারে একেবারে গোড়ার দিকের কাজ। বিশেষজ্ঞদের অনেকেই বলছেন, এই ধারণায় সিলমোহর দেওয়ার আগে আরও বেশি গবেষণা প্রয়োজন। কিন্তু শুয়ে-বসে মোবাইল বা ল্যাপটপে সময় কাটানো যে মনের পক্ষে ভাল না, সেটা প্রমাণিত। আর মন ও শরীরের সম্পর্ক, আজ অন্তত অজানা নয়। কাজেই, সাবধানের মার নেই।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -