Myths About Unlucky Number: শুভ-অশুভের গেরোয় আটকে ‘নাসা’-ও, ১৩ সংখ্যা সত্যিই কি অঘটন ডেকে আনে!
যাত্রাপথে বিড়াল রাস্তা পার হলে দাঁড়িয়ে যাওয়া, পিছুডাক শুনে ফিরে আসা, নিজের অজান্তেই দৈনন্দিন জীবনে এমন নানা অলিখিত নিয়ম মেনে চলি আমরা। এমনিতে বিজ্ঞানের বুলি কপচালেও কিছু অভ্যাস পাল্টাতে পারি না।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appতেমনই সংখ্যা নিয়েও বাছবিচার রয়েছে আমাদের। যেমন ১৩ সংখ্যাটিকে অশুভ বলে ধরা হয়। এর সঙ্গে কুসংস্কার জড়িয়ে রয়েছে বলে উড়িয়ে দেওয়াই যায়। কিন্তু এই কুসংস্কার এল কোথা থেকে, তা-ও জেনে রাখা জরুরি।
ছোটবেলায় জোড়-বিজোড় সংখ্যার ব্যাখ্যা বুঝেছি আমরা। কিন্তু শুভ-অশুভের সংজ্ঞা কখনও লেপ্টে ছিল না তার গায়ে। তা-ও ১৩ সংখ্যাটিতে পৌঁছে থমকে যান অনেকে। পশ্চিমের তথাকথিত উন্নত দেশগুলিতেও এর চল রয়েছে। বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে।
১৩ সংখ্যার প্রতি এই বৈরিতার নানা ব্যাখ্যা রয়েছে। জোড় সংখ্যা ১২-কে শুভ বলে ধরা হয়। তার গায়ে গায়ে অবস্থান বলেই ১৩ সংখ্যাটির বদনাম বেশি বলেও মনে করেন কেউ কেউ।
এ নিয়ে বিস্তর গবেষণাও হয়েছে। গবেষকদের মতে, ১২ সংখ্যাটিকে শুভ বলে মনে করার একাধিক কারণ রয়েছে। যেমন, বছরে ১২টি মাস রয়েছে, জ্যোতিষ শাস্ত্রে রাশির সংখ্যাও ১২। ঘরির কাঁটাও ঘুরতে ১২-র ঘরে গিয়ে শেষ হয়। ফলে এই সংখ্যার সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে পরিপূর্ণতা। পাশের সংখ্যা ১৩ তাই অঘটনের ইঙ্গিতবাহী সংখ্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এর পৌরাণিক ব্যাখ্যাও রয়েছে। নরওয়ের পৌরাণিক কাহিনীতে ঐশ্বরিক নৈশভোজে ত্রয়োদশ সদস্য হিসেবে অংশ নেন ভগবান লোকি। ভগবান বলদূরকে খুন করতে আর এক সদস্যকে তিনি উস্কানি জোগান। একই ভাবে, খ্রিস্টধর্মে যিশু খ্রিষ্টের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা জুডাস সান্ধ্যকালীন ভোজে যোগদানকারী ত্রয়োদশ সদস্য ছিলেন।
তবে শুধুমাত্র পৌরাণিক কাহিনীর জন্য ১৩ সংখ্যাটিকে ঘিরে এই বৈরিতা তৈরি হয়নি। এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে সামাজিক রীতিনীতিও। তবে বাস্তবে যে কোনও নম্বরকেই নিজেদের সুবিধার্থে ব্যবহার করা যায়। পরিস্থিতি অনুকুল হলে অশুভ তত্ত্বকে গুজব বলে উড়িয়ে দিই আমরা। কিছু অঘটন ঘটলেই অশুভ বলে দাগিয়ে দিই।
তাই জাপানে ৯ সংখ্যাটিকে অশুভ বলে ধরা হয়। পীড়া বোঝাতে জাপানিরা যে শব্দ ব্যবহার করেন, তার সঙ্গে ৯ সংখ্যাটির উচ্চারণে মিল রয়েছে। আবার ৪ সংখ্যাটির উচ্চারণের সঙ্গে মৃত্যুর উচ্চারণে মিল রয়েছে চিনে। সেখানে আবার ৬৬৬ সংখ্যাটিকে সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বী বহু দেশে আবার ওই সংখ্যা অশুভ বলে বিবেচিত।
শুভ-অশুভ তত্ত্বের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ভয়, আতঙ্কও। মনোবিদদের মতে, বাস্তবজীবনে কোনও বিশেষ দিনে হয়ত প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে। সেই থেকে ওই বিশেষ তারিখকে ঘিরে আতঙ্ক তৈরি হয়। আবার ছোট থেকে ১৩ সংখ্যাটিকে ঘিরে নানা কথা শুনে থাকলে, আমাদের মনে বদ্ধমূল ধারণা তৈরি হয়ে যায়।
তবে শুধু কি সাধারণ মানুষ! বিজ্ঞানের দৌলতে সংসার চলে যাঁদের, তাঁরাও এই সঙ্কীর্ণতা কাটিয়ে উঠতে পারেন না। অ্যাপোলো-১৩ অভিযান শেষ মুহূর্তে ব্যর্থ হওয়ায় ক্রমানুসারে মহাকাশযানের গায়ে ১৩ সংখ্যাটির ব্যবহারই বন্ধ করে দেয় আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। ১৩টি বিন্দু পর পর সাজিয়ে তৈরি হয়েছিল ব্রাসেলস এয়ারলাইন্সের লোগো ‘b’। যাত্রীদের জোরাজুরিতে সেটিতে চতুর্দশতম বিন্দু যোগ করতে হয়।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -