Exit Poll 2024
(Source: Poll of Polls)
Atal Bihari Vajpayee Death Anniversary: কলেজে সহপাঠী ছিলেন বাবা, লাইব্রেরির বইয়ে লুকিয়ে পাঠিয়েছিলেন প্রেমপত্র, আজীবন অবিবাহিতই বাজপেয়ী
কথায় কথায় ইংরেজি আওড়ানোর অভ্যাস ছিল না। বিদেশের মাটিতেও ভাষণ দিয়েছিলেন ঝরঝরে হিন্দিতেই। রাজনীতিকে পেশা হিসেবে বেছে নিলেও, কবিতা ছিল আবেগ, ভালবাসা। মৃত্যুবার্ষিকীতে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারি বাজপেয়ী সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য জেনে নিন।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In App১৯২৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর জন্ম। ছোট থেকেই কবিতা লেখায় আগ্রহ ছিল। দশম শ্রেণিতে ‘হিন্দু তন মন, হিন্দু জীবন, রগ রগ হিন্দুপরিচয়’ কবিতা লিখেছিলেন। হিন্দির পাশাপাশি মারাঠি ভাষাও রপ্ত করেছিলেন বাজপেয়ী। বিনায়ক দামোদর সাভারকরের কবিতা মারাঠি থেকে হিন্দিতে অনুবাদ করেছিলেন।
নির্বাচনী রাজনীতিতে দক্ষিণপন্থী হিসেবে পরিচিত হলেও, গাঁধীবাদী সমাজতন্ত্রের প্রতি নরম ছিলেন তিনি। সেই সময় লালকৃষ্ণ আডবানির হিন্দুত্ববাদী ভাবমূর্তির সামনে, উদার নেতা হিসেবে বাজপেয়ীকে তুলে ধরে সঙ্ঘ ভারসাম্য বজায় রাখতে উদ্যোগী হয় বলে শোনা যায়।
ব্রাহ্মণ পরিবারের জন্মগ্রহণ করলেও আমিষ খাবারই প্রিয় ছিল বাজপেয়ীর। বিশেষ করে চিংড়ি ভীষণ প্রিয় ছিল। পুরনো দিল্লির করিম’স রেস্তরাঁয় নিয়মিত যাতায়াত ছিল তাঁর। ভারত ছাড়ো আন্দোলনে যোগ দেন বাজপেয়ী। সেই সময় তাঁর ওঠাবসা ছিল সাম্যবাদী শিবিরে। ২৩ দিন জেলও খাটেন। ‘রাষ্ট্রধর্ম’ এবং ‘পাঞ্চজন্য’ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। কানপুরের দয়ানন্দ অ্যাংলো বৈদিক মহাবিদ্যলয় থেকে আইন পাশ করেন বাজপেয়ী। সেখানে সহপাঠী হিসেবে পাশে পান বাবা কৃষ্ণবিহারী বাজপেয়ীকে। নিজের লেখাতেই সে কথা উল্লেখ করেন তিনি।
বাজপেয়ী জানান, গ্বালিয়রের ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে স্নাতক পাশ করে আইন পড়তে কানপুর যান। ৩০ বছরের শিক্ষকের চাকরি ছেড়ে ততদিনে অবসর নিয়েছেন তাঁর বাবাও। দুই মেয়ের বিয়ের পণ দিতে হাত ফাঁকা হয়ে গিয়েছে। সেই সময় গ্বালিয়রের মহারাজা শ্রীমন্ত জিভাজি রাও সিন্ধিয়া বাজপেয়ীকে মাসিক ৭৫ টাকার বৃত্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সেই টাকার ভরসায় কলেজে ভর্তি হন বাজপেয়ী। তাঁর দাদা প্রেমবিহারী বাজপেয়ীও ওই কলেজেই আইন পড়ছেন তখন।
আচমকা উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী হয়ে পড়েন বাজপেয়ীর বাবা। পঞ্চাশোর্ধ বাবাকে লাঠি নিয়ে কলেজ যেতে দেখতেন বাজপেয়ী। শুধু তাই নয়, একই ক্লাসে, একই সেকশনে পড়তেন বাজপেয়ী এবং তাঁর বাবা। স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বাজপেয়ী পরবর্তী কালে লেখেন, ক্লাসে বাবার ঢুকতে দেরি হলে তাঁকে দাঁড় করিয়ে প্রশ্ন করতেন অধ্যাপক। তিনি কোনও কারণে দেরিতে পৌঁছলে জবাবদিহি করা হতো তাঁর বাবাকে। তাতে শেষমেশ সেকশন বদল করেন তাঁরা। তবে কলেজে বাবা-ছেলে মিলেই নাটকের মঞ্চ তৈরি করেন।
আমৃত্যু বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হননি বাজপেয়ী। দীর্ঘদিনের বন্ধু রাজকুমারি কউল এবং বিএন কউলের মেয়ে নমিতা ভট্টাচার্যকে দত্তক নেন তিনি। দত্তক পরিবারকে নিয়েই থাকতেন তিনি।
জানা যায়, ভিক্টোরিয়া কলেজে পড়ার সময়ই প্রথম দর্শনে রাজকুমারীকে ভালবেসে ফেলেন বাজপেয়ী। কিন্তু অভিজাত পরিবারের মেয়ে ছিলেন রাজকুমারী, যিনি আবার সম্পর্কে ইন্দিরা গাঁধীর তুতো বোন ছিলেন। লাইব্রেরি থেকে নেওয়া বইয়ের পাতার মধ্যে রাজকুমারীর জন্য একবার চিঠি লিখে পাঠিয়েছিলেন বাজপেয়ী। রাজকুমারীও একই ভাবে জবাব পাঠান। কিন্তু বই এদিক ওদিক হয়ে যায়। ফলে ভুল বোঝাবুঝিতে বাজপেয়ীর মনে হয়েছিল, রাজকুমারী হয়ত পছন্দ করেন না তাঁকে।
কিন্তু আসলে বাজপেয়ীকেই বিবাহ করতে ইচ্ছুক ছিলেন রাজকুমারী। কিন্তু তাঁদের সামাজিক অবস্থানে ফারাক ছিল বিস্তর। শেষ পর্যন্ত পরিবারের কথা মতো দিল্লির অধ্যাপক ব্রিজনারায়ণ কউলের সঙ্গে বিবাহ হয়ে যায় তাঁর। তার পর ছয়ের দশকে রাজকুমারী এবং তাঁর স্বামীর সঙ্গে মুখোমুখি সাক্ষাৎ বাজপেয়ীর।
ততদিনে সাংসদ বাজপেয়ী। রাজকুমারীর পরিবারের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে তাঁর। মাঝে মধ্যে রাজকুমারীর সংসারে থেকেও যেতেন তিনি। পরে মোরাজি দেসাই সরকারে বাজপেয়ী বিদেশমন্ত্রী হলে রাজকুমারীর গোটা পরিবার লুটিয়েন্স দিল্লিতে তাঁর বাসভবনে উঠে আসে। সেই নিয়ে নানা গুঞ্জন শুরু হলে, বহু বছর আগে একটি সাক্ষাকারে রাজকুমারী জানান, বাজপেয়ীর সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব এতটাই পরিণত যে সকলের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। আর স্বামীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক এতটাই নিবিড় যে, কে কী বলল, যায় আসে না।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -