Harmonium Ban History: আকাশবাণীকে চিঠি দিয়েছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ, কেন তিন দশক নিষিদ্ধ ছিল হারমোনিয়াম?
সঙ্গীতশিক্ষার সূচনা হোক বা জলসা, অথবা সিনেমায় প্লেব্যাক, ভারতীয় সঙ্গীতের অবিচ্ছেদ্য অংশ হারমোনিয়াম। কিন্তু এই হারমোনিয়ামই একসময় নিষিদ্ধ হয়েছিল আকাশবাণীতে। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হারমোনিয়ামের বিরোধিতা করেছিলেন। -পিক্সাবে
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appফ্রান্সের নাগরিক ১৮৪০ সালে আলেকসন্দ্র ডিবেন হারমোনিয়াম তৈরি করেন। ১৮৪০ সালের ৯ অগাস্ট হারমোনিয়ামের স্রষ্টা হিসেবে নাম নথিভুক্ত হয় তাঁর। ভারতীয় সঙ্গীতে ফরাসি যন্ত্র হারমোনিয়ামের ব্যবহার নিয়ে বিতর্ক বাধে স্বাধীনতা সংগ্রাম যখন শেষ চরণে। -পিক্সাবে
হারমোনিয়াম যখন প্রথম ভারতে এসে পৌঁছয়, সঙ্গীতপ্রেমীরা সেটিকে আপন করে নিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও হারমোনিয়ামে গান তোলেন। কিন্তু অল্পদিনের মধ্যেই রবীন্দ্রনাথ হারমোনিয়াম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন কবি। শান্তিনিকেতনে হারমোনিয়াম নিষিদ্ধ করেন তিনি। -পিক্সাবে
ভারতীয় ক্লাসিক্যাল সঙ্গীতে তাতেই হারমোনিয়াম ব্যবহারে ছেদ পড়েনি যদিও। পণ্ডিত ভীমসেন জোশী, উস্তাদ বড়ে গোলাম আলি খান, বেগম আখতারের মতো কিংবদন্তিরা হারমোনিয়াম বাজিয়েই জলসা করতেন। -ফ্রিপিক
সারঙ্গি বা ভায়োলিনের চেয়ে সহজ-সরল হারমোনিয়াম জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল।কলকাতায় দ্বারকানাথ ঘোষ হারমোনিয়ামকে নতুন ভাবে সাজান। ভজন, কীর্তনেও হারমোনিয়ামের ব্যবহার শুরু হয়। গির্জার প্রার্থনাসভা, কাওয়ালি, গজল গাইতেও হারমোনিয়ামের ব্যবহার বাড়ে। -ফ্রিপিক
কিন্তু ভারতীয় সঙ্গীতের জন্য হারমোনিয়াম আদৌ উপযুক্ত কি না, সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। পাশাপাশি, স্বাধীনতা সংগ্রামীরা সেই সময় বিদেশি পণ্য বর্জনের পক্ষে জোর সওয়াল করছেন। সেই আবহে হারমোনিয়ামের বিরুদ্ধেও জনমত গড়ে ওঠে। -ফ্রিপিক
সেই সময় ভারতীয় সঙ্গীতজ্ঞদের দাবি ছিল, হারমোনিয়াম ভারতীয় সঙ্গীতের প্রতিটি রাগকে নিখুঁত ভাবে তুলে ধরতে পারে না। সেই আবহে আকাশবাণী কলকাতায় চিঠি দেন রবীন্দ্রনাথ। স্টুডিওয় হারমোনিয়াম বাজানোর সিদ্ধান্ত বিবেচনা করে দেখতে আবেদন জানান। -ফাইল
অল ইন্ডিয়া রেডিও-র পশ্চিমি সঙ্গীত বিভাগের তৎকালীন প্রধান জন ফোল্ডসও হারমোনিয়ামের সীমাবদ্ধতার কথা মেনে নেন। অল ইন্ডিয়া রেডিও-র তৎকালীন প্রধান লায়োনেল ফিল্ডেনও ফোল্ডসের সঙ্গে একমত পোষণ করেন। ১৯৪০ সালে আকাশবাণী হারমোনিয়াম নিষিদ্ধ করে। -ফ্রিপিক
শোনা যায়, আনন্দ কুমারস্বামী থেকে জওহরলাল নেহরু পর্যন্ত ভারতীয় সঙ্গীতে হারমোনিয়াম ব্যবহারের বিপক্ষে ছিলেন। ১৯৭৯ সালে ‘দেশ’ পত্রিকায় ‘সুধা সাগর তীরে’ প্রতিবেদনে সুরেশ চক্রবর্তী নেহরুকে উদ্ধৃত করে লেখেন, ‘কী বিস্ময়কর সেই মুহূর্ত ছিল, যে সময় পণ্ডিত নেহরুকে বলতে শোনা যায়, ‘এই যন্ত্রটিকে একেবারে সহ্য করতে পারি না আমি। আমার সত্তার সঙ্গে বিদ্রোহ করছে এটি’।’ -ফ্রিপিক
স্বাধীনতার পর তদানীন্তন সম্প্রচার মন্ত্রী বিভি কেশকরও নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখেন। দীর্ঘ তিন দশক অল ইন্ডিয়া রেডিও-র কিছু স্টেশনে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ছিল রেডিও। ১৯৭১ সাল থেকে ধাপে ধাপে হারমোনিয়ামের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠে যায়। -ফ্রিপিক
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -