Mehran Karimi Nasseri: দেশহীন হয়ে এয়ারপোর্টেই দু’দশক, তৈরি হয়েছিল ছবিও, এয়ারপোর্টেই মারা গেলেন ‘টার্মিনাল ম্যান’
দেশহীন হয়েই কাটিয়ে দেন প্রায় দুই দশক। ঝাঁ চকচকে শহরের বুকে বিমানবন্দরই হয়ে উঠেছিল বাড়ি। চাপের মুখেও নতি স্বীকার করেননি তিনি। উদাহরণ তৈরি করেছিলেন গোটা বিশ্বে।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appসেই মেহরান করিমি নাসেরির জীবনে ইতি পড়ল এ বার। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন তিনি। যে বিমানবন্দরের টার্মিনাল ঘরবাড়ি হয়ে উঠেছিল, সেখানেই মৃত্যু হল তাঁর।
আদতে ইরানের বাসিন্দা নাসেরি। ১৯৪৫ সালে ইরানের খুজেস্তান থেকে ইউরোপ রওনা দেন। কিন্তু মা স্কটিশ হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে আশ্রয় দেয়নি ব্রিটেন। বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ড,জার্মানিতেও ঠাঁই হয়নি।
শেষ মেশ ১৯৮৮ সালে প্যারিসের ‘শার্ল দু গল’ বিমানবন্দরে নামেন। কিন্তু সেখানেও প্রত্যাখ্যানের মুখে পড়লে, বিমানবন্দরের 2F টার্মিনালে আশ্রয় নেন।
নিজেকে ‘দেশহীন’ ঘোষণা করে, যাবতীয় জিনিসপত্র সঙ্গে নিয়ে ওই টার্মিনালেই থাকতে শুরু করেন নাসেরি। বিমানবন্দরেই টুকটাক কাজ থেকে আয় হতো নাসেরির। বই পড়ে, ডায়েরি লিখে বাকি সময় কাটত। সেখানে অর্থনীতির শিক্ষাও লাভ করেন।
এমন অভিনব ঘটনা ছড়িয়ে পড়তে দেরি হয়নি। নাসেরির এই লড়াই অনুপ্রাণিত করে হলিউডের পরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গকেও। ২০০৪ সালে নাসেরির জীবন অবলম্বনেই ‘দ্য টার্মিনাল’ ছবিটি তৈরি করেন।
ওই ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেন অস্কারজয়ী অভিনেতা টম হ্যাঙ্কস। ব্যবসার স্বার্থে এবং বিতর্ক এড়াতে সামান্য রদবদলও করা হয়েছিল ছবিতে।
এ ছাড়াও নাসেরিকে নিয়ে ১৯৯৩ সালে ফ্রান্সেও ছবি তৈরি হয়। সেই ছবির নাম ছিল ‘তুম্ব দু শিল’। নাসেরিকে নিয়ে অসংখ্য তথ্যচিত্র, প্রতিবেদনও তৈরি হয়েছে।
বিমানবন্দরে ১৮ বছর থাকার পর ২০০৬ সালে অসুস্থ হয়ে পড়েন নাসেরি। হাসপাতালে ভর্তি করতে বিমানবন্দর থেকে বার করা হয় তাঁকে। তার পর সেদেশে বসবাসের অনুমতিও পান। সিনেমার স্বত্ব থেকে পাওয়া টাকায় হস্টেলে থাকতে শুরু করেন।
কিন্তু কয়েক সপ্তাহ আগে ফের বিমানবন্দরের ফিরে আসেন নাসেরি। এ বার থাকতে শুরু করেন ১ নম্বর টার্মিনালে। সেখানেই শনিবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -