ছট পুজোয় আরাধনা করা হয় কার কার ? ছটি মাইয়া কে ? যে কেউ করতে পারেন পুজো ?
ছট পুজোর উৎপত্তি, ইতিহাস নিয়ে নানা মুনির নানা মত রয়েছে। মূলত, সমস্ত শক্তির উৎস সূর্যদেবের আরাধনাই ছট পুজো বলে পরিচিত। এই উৎসব বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, নেপালের কিছু অঞ্চলের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গেও পালিত হয়ে থাকে। এছাড়াও হিন্দিভাষাভাষী মানুষের বসবাস যেখানে, ছটপুজো উপলক্ষে উন্মাদনা লক্ষ্য করা যায় সেখানেও।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appসাধারণত অক্টোবর বা নভেম্বর মাসে এই উৎসব পালিত হয়। কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষ - ছট পুজো বা ছট উৎসব উদযাপনের তিথি।
ছট উৎসবের প্রধান দেবতা সূর্য। বিশ্বাস, বনবাস থেকে ফেরার সময় শ্রীরামচন্দ্র সূর্যদেবের উদ্দেশ্যে পূজা করেন। আর তখন থেকেই ছটপুজোর সূচনা হয়।
রামায়ণ ছাড়াও মহাভারতের উল্লেখও করেন কেউ কেউ। কর্ণ সূর্যপূজা করে দরিদ্রদের দান করেন আর রাজ্য ফিরে পেতে পঞ্চপাণ্ডব সূর্যপূজা করেছিলেন বলে উল্লেখ।
মনে করা হয়, ছট অর্থাৎ সূর্যের রশ্মি সমস্ত সুখ-সমৃদ্ধির উৎস। তাই ছটপূজায় সূর্যের উপাসনার পাশাপাশি ছটি মাইয়ার উদ্দেশে পূজা করেন ভক্তরা। কে এই ছটি মাইয়া ?
বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ বলেন, ছটি মাইয়া হলেন সূর্যদেবের বোন। মতান্তরে ছট হলেন ষষ্ঠীদেবী। কেউ কেউ বলেন, তিনি ছট লক্ষ্মী। নানা রূপে পূজিত হন ছটি মাইয়া।
আরও কথিত আছে, দেবী পার্বতীর ষষ্ঠ রূপ হলেন ছঠি মাইয়া। তিনি পৃথিবীর সমস্ত সন্তানকে রক্ষা করেন। এবং নিঃসন্তান বাবা-মাকে সন্তান প্রাপ্তির আশীর্বাদ করে থাকেন।
মূলত চারদিন ধরে সূর্যদেবের উদ্দেশে উপাসনা ও ব্রত পালন ও অর্পণ করে থাকেন ভক্তরা। মহিলারা এই পুজো প্রধানভাবে করলেও উপবাস সহযোগে ব্রতপালন করেন বাড়ির পুরুষ সদস্যরাও।
ছট পূজার প্রথম দিন যা নহায়ে-খায় বলেও পরিচিত। পূজার প্রথম দিনে ভক্ত শুদ্ধাচারে বাড়ি ঘরদোর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করেন। পূজা ঘাটে যাওয়ার রাস্তা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করেন। শুদ্ধাচারে নিরামিষ ভোজন এই দিনের রীতি।
ছট পূজার দ্বিতীয় দিন যা খরনা বলেও পরিচিত। রসিয়াভ, রোটি, লোহান্ডা বলেও পরিচিত এই দিনটি। পূজার দ্বিতীয় দিন ঘরোয়া ব্রত পালনের মাধ্যমে পালন করা হয়। ভক্ত দিনভর নির্জলা উপবাস পালন করেন। পরে সন্ধ্যায় পূজা-শেষে বিশেষ গুড়ের ক্ষীরের ভোগ গ্রহণ করেন।
ছট পূজার তৃতীয় দিন বাড়িতে পূজার প্রসাদ তৈরি করা হয়। এছাড়াও নানা উপাচার প্রস্তুত করে সন্ধ্যায় সূর্যকে অর্ঘ্য নিবেদনের প্রথা। যিনি উপবাস পালন করেন, সূর্যকে অর্ঘ্য প্রদান করেন। অস্তগামী সূর্যের পূজা করা হয় ঘাটে গিয়ে।
ছটপুজোর চতুৰ্থ দিনে ছট ব্রতীরা সূর্যোদয়ের আগে ঘাটে গিয়ে উপস্থিত হন। তারপরে উদীয়মান সূর্যে উদ্দেশে অর্ঘ্য নিবেদন করে, পূজা করে থাকেন।
তারপরে প্রসাদ বিতরণ ও অন্যান্য উপাচার, নিয়ম সহযোগে ছট উপবাস ভঙ্গ করেন। ছটপূজার প্রসাদ বিশেষ গুড়, মিষ্টি, ক্ষীর, ঠেকুয়া, আখ, কলা, বাতাবি লেবু ইত্যাদি।
ডিসক্লেমার : ধর্মীয় বিশ্বাস নিজস্ব। এ ব্যাপারে কোনও মতামত এবিপি লাইভের নেই। এবিপি লাইভ ধর্ম সম্পর্কিত কোনো সম্পাদকীয় / সম্পাদক-নিয়ন্ত্রিত তথ্য, পরামর্শ প্রদান করে না। প্রদত্ত পরামর্শ ও তথ্য প্রয়োগের আগে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -