Facts about Honey: বছরের পর বছর মধু মজুত রাখা যায় কি? কত দিন পর খাওয়া উচিত নয়?
ভাল স্বাস্থ্যের চাবিকাঠি হিসেবে ধরা হয় মধুকে। প্রত্যেক গৃহস্থের বাড়িতেই পাওয়া যায় মধু। কিন্তু বাড়িতে মধু মজুত করা নিয়ে প্রশ্নের শেষ নেই। মধু কতদিন মজুত করা যায়, কতদিন পর খারাপ হয়ে যায়, এমন হাজারো প্রশ্ন রয়েছে। মধু আদৌ খারাপ হয় কি না, বয়াম ভর্তি মধু বহু বছর ব্যবহার করা যায় কি না, এমন প্রশ্নও উঠে আসে অহরহ।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appমধু আসলে ঘন, আঠাল, মিষ্টি একটি খাদ্যদ্রব্য, যার সঙ্গে মিশে রয়েছে মৌমাছির শরীর থেরে নিঃসৃত রাসায়নিক। পৃথিবীতে কমপক্ষে ৩০০ ধরনের মধু রয়েছে। পৃথিবীতে ২০ হাজারের বেশি মৌমাছির প্রজাতি রয়েছে, যারা এই ৩০০ ধরনের মধু উৎপন্ন করে। মধুর গুণমান নির্ভর করে, কোন প্রজন্স হপকিন্স ইউনিভার্সিটির খাদ্য-বিজ্ঞানী কান্ত শেলকে জানিয়েছেন, মধুর মধ্যে যে যে উপাদান থাকে, তার নেপথ্যেও রয়েছে মৌমাছি। প্রথমে ফুলের মিষ্টি সুধা গ্রহণ করে মৌমাছি। এর পর সুক্রোজ, গ্লুকোজ এবং ফ্রুক্টোজের জটিল মিশ্রণকে ঘনীভূত সরল শর্করায় পরিণত করে। জাতির মৌমাছি সেটি তৈরি করছে, তার উপর।
জন্স হপকিন্স ইউনিভার্সিটির খাদ্য-বিজ্ঞানী কান্ত শেলকে জানিয়েছেন, মধুর মধ্যে যে যে উপাদান থাকে, তার নেপথ্যেও রয়েছে মৌমাছি। প্রথমে ফুলের মিষ্টি সুধা গ্রহণ করে মৌমাছি। এর পর সুক্রোজ, গ্লুকোজ এবং ফ্রুক্টোজের জটিল মিশ্রণকে ঘনীভূত সরল শর্করায় পরিণত করে।
মধু মূলত মিষ্টি হলেও, এর মধ্যে একডজনেরও বেশি অন্য উপাদান রয়েছে। মধুতে থাকে এনজাইম, মিনারেল, ভিটামিন, জৈব অ্যাসিড। এর পাশাপাশি, মধুতে ফ্ল্যাভনয়েড এবং ফেনোলিক উপাদান থাকে মধুতে, যা প্রদাহ বিরোধী উপাদান এবং অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট। এই দুই উপাদানই মধুতে ঔষধি গুণ যোগ করে।
মৌমাছিরা যখন মধু তৈরি করে, প্রচুর রাসায়নিক উপাদান একত্রিত হয়, যাতে প্রকৃতির সৃষ্টি মধুতে বাসা বাঁধতে পারে না খাবার বিনষ্টকারী জীবাণু। অতিরিক্ত মিষ্টি হওয়ায় মধু হাইগ্রোস্কোপিক হয়ে ওঠে, অর্থাৎ পরিবেশ থেকে আর্দ্রতা শুষে নিতে পারে। এমনকি, চার পাশে থাকা জাবীণুর কোষ থেকে জলও শোষণ করে নিতে পারে। মধুতে সামান্য পরিমাণ জল থাকে, যাতে জাবীণুরা বেড়ে উঠতে পারে।
ফুলের সুধাকে শর্করায় পরিণত করে পুনরায় সেটিকে তরলে পরিণত করে মৌমাছি। এর পর মৌচাকে থাকা অন্য মৌমাছিদের কাছে পাঠায়। মৌমাছির পেটে গ্লুকোজ অক্সিডেজ গ্লুকোজকে ভেঙে গ্লুকোনিক অ্যাসিড এবং হাইড্রোজেন পারক্সাইডে পরিণত করে। মৌমাছিরা যখন মৌচাকে মধু রেখে তাতে হাওয়া দেয়, জল ধীরে ধীরে বাষ্পীভূত হয়ে যায় এবং মিষ্টি তরলটি আঠাল হয়ে ওঠে।
গ্লুকনিক, অ্যাসিটিক, ফর্মিক এবং সাইট্রিক অ্যাসিডের উপস্থিতিই মধুকে কফির চেয়ে বেশি অম্ল করে তোলে। জীবাণুরা যতটা সহ্য করতে পারে, মধুতে pH-এর মাত্রা তার চেয়ে কম। মাধুতে থাকা হাইড্রোজেন পারক্সাইডের জেরেই জীবাণুরা জাল ছড়াতে পারে না। এইসব রাসায়নিকউ মধুকে খারাপ হওয়া থেকে বাঁচায়। ফলে দীর্ঘদিন মধু মজুত করা যায় এবং ব্যবহার করা যায়।
তবে সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন ঘটে মধুতে। মধুর উপাদানগুলি স্ফটিকের আকার ধারণ করে, গেঁজে যায় মধু, তাপমাত্রার প্রভাবও পড়ে। হালকা না গাঢ় রংয়ের মধু, তার উপরও এই পরিবর্তন নির্ভর করে। কোন ঋতুতে মধু তৈরি হয়েছিল, তাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। এতে পুষ্টিগুণের উপর প্রভাব পড়ে।
মধু দীর্ঘদিন মজুত করা গেলেও, একটা সময় শর্করা জলশূন্য হয়ে পড়ে, যা থেকে বিষাক্ত 5-hydroxymethylfurfural উপাদান তৈরি হয়, যা ড্রাইফ্রুটস, দুধ, ব্রেকফাস্ট সিরিয়েলেও পাওয়া যায়। এই উপাদানটিকে নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কারও কারও মতে, প্রতি কেজি মধপতে ৪০ মিলিগ্রাম 5-hydroxymethylfurfural থাকলে, তা ক্ষতিকর নয়। তবে কোন ধরনের মধু, তার উপরও এই মাপকাঠি নির্ভর করছে।
যেমন, সূর্যমুখী ফুলের সুধা থেকে তৈরি মধু একটানা ১৮ মাস মজুত রাখা যায়। কিছু মধু আবার মজুত করা যায় টানা পাঁচ বছর পর্যন্ত। ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা মধু মজুতের জন্য আদর্শ বলেও মত বিজ্ঞানীদের কারও কারও। তবে দীর্ঘদিন মজুত করে রেখে মধু না খাওয়াই ভাল বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -