Science News: রকেটের ধাক্কায় কক্ষপথ থেকে বিচ্যুত, আঙুরের থোকার মতো মহাশূন্যে ঝুলছে গ্রহাণুর টুকরো
দুরন্ত গতিতে ছুটে আসা গ্রহাণু, উল্কাপিণ্ড বা মহাজাগতিক বস্তুর গ্রাস থেকে মানবজাতিকে রক্ষা করাই লক্ষ্য। তাই পরীক্ষামূলক ভাবে ভারী ওজনের মহাকাশযান আছড়ে ফেলা হয়েছিল গ্রহাণুর উপর। তাতেই ছিন্নভিন্ন হয়ে কক্ষপথ থেকে ছিটকে পড়েছিল ডাইমরফস গ্রহাণু। এবার তার কিছু ছিন্নভিন্ন অংশের দেখা মিলল মহাশূন্যে।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appআমেরিকার মহকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা-র হাবল স্পেস টেলিস্কোপ মহশূন্যে ডাইমরফসের টুকরোর সন্ধান পেয়েছে। মহাশূন্যে তার ছবিও ক্যামেরাবন্দি করেছে। সেই ছবি হাতে এসে পৌঁছেছে বিজ্ঞানীদের। নাসা-র তরফে প্রকাশ করা হয়েছে হাবল টেলিস্কোপের তোলা সেই ছবি, যা দেখে অভিভূত বিজ্ঞানজগৎ।
মহাশূন্যে একঝাঁক প্রস্তরখণ্ডের হদিশ পেয়েছে হাবল টেলিস্কোপ। গতবছর সেপ্টেম্বর মাসে ডায়মরফসের উপর ডাবল অ্যাস্টেরয়েড রিডায়রেকশন টেস্ট বা DART মহাকাশযানটিকে ঘণ্টায় ১৪ হাজার মাইল গতিতে আছড়ে ফেলে নাসা।
ফলে কক্ষপথ থেকে বিচ্যুত হয়ে পৃথিবী থেকে দূরে ছিটকে যায় সেটি। মহাশূন্যে যে একঝাঁক প্রস্তরখণ্ড ভেসে বেড়াচ্ছে, সেগুলি ডাইমরফসেরই অংশ বলে একমত বিজ্ঞানীরা।
সবমিলিয়ে মহাশূন্যে ৩৭টি এমন প্রস্তরখণ্ডের সন্ধান পেয়েছে হাবল টেলিস্কোপ। হাবল ফোটোমিটারের পরিমাপ অনুযায়ী, ওই প্রস্তরখণ্ডের কোনওটি আয়তনে তিন ফুট, কোনওটি আবার ২২ ফুট। ঘণ্টায় ১/২ মাইল গতিতে ডাইমরফস গ্রহাণুর থেকে ক্রমশ দূরে সরে যাচ্ছে সেগুলি, যাকে ‘কচ্ছপের গতি’ বলেই উল্লেখ করছেন বিজ্ঞানীরা।
তবে নাসা জানিয়েছে, এই সবক’টি প্রস্তরখণ্ডকে যুক্ত করলেও, তা ডায়মরফসের মোট ভরের ০.১ শতাংশ। ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার গ্রহবিজ্ঞানী ডেভিড জিউইটি জানিয়েছেন, গ্রহাণুকে আঘাত করলে কী ঘটে, তা এই প্রথম বার চাক্ষুষ করা যাচ্ছে।
তবে মহাকাশযান আছড়ে পড়েই ডাইমরফস থেকে ওই প্রস্তরখণ্ডগুলি ছিটকে গিয়েছে বলে মনে করার কিছু নেই বলে মত বিজ্ঞানীদের। তাঁদের মতে, ডাইমরফসের গায়ে আলগা ভাবেই লেগেছিল ওই প্রস্তরখণ্ডগুলি। ধাক্কা লাগতে খসে পড়ে মাত্র।
শুধু তাই নয়, মহাকাশযানের আঘাতে ডাইমরফসের গায়ে ফুটবল মাছের সমান গহ্বরও তৈরি হয়ে থাকতে পারে বলে অনুমান বিজ্ঞানীদের। ২০২৬ সালে ডাইমরফসের অবস্থা খতিয়ে দেখতে Hera মহকাশযান পাঠাচ্ছে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি। তখন বিষয়টি স্পষ্ট ভাবে জানা যাবে।
ডাইমরফস নামের ওই গ্রহাণুটি আয়তনে প্রায় ৫৩০ ফুট। মিশরের বৃহদাকার পিরামিডের সঙ্গে তার তুলনা চলে। ডিডিমস নামের আধ মাইল বিস্তৃত নামের একটি অভিভাবক গ্রহাণুকে ঘিরে পাক খাচ্ছিল সেটি।
তবে ডাইমরফস থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েও, প্রস্তরখণ্ডগুলি তার চারিদিকে বলয়াকারে অবস্থান করছে, যার জন্য দায়ী অভিকর্ষ শক্তি। এর ফলে আঙুরের থোকার মতো দেখাচ্ছে দূর থেকে।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -