Science News: সাত মাস নয়, ৪৫ দিনেই ছোঁয়া যাবে লালগ্রহের মাটি, ৪০০০ কোটির পারমাণবিক শক্তিচালিত রকেট তৈরিতে হাত দিল NASA
মহাকাশ গবেষণাকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু। জ্বালানি নয়, পারমাণবিক শক্তিচালিত মহাকাশযান তৈরির কাজে হাত দিল আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA. ২০২৫ সালের মধ্যেই পারমাণবিক শক্তিচালিত মহাকাশযান উৎক্ষেপণের লক্ষ্য নিল তারা।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appমঙ্গলগ্রহ অভিযানকে সামনে রেখেই পারমাণবিক শক্তিচালিত প্রথম মহাকাশযান তৈরিতে উদ্যোগী নাসা। এই মহাকাশযান তৈরিতে খরচ পড়বে প্রা ৫০ কোটি ডলার, ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৪ হাজার ১৫ কোটি টাকা। নয়া এই অভিযানের নাম রাখা হয়েছে ডেমোনস্ট্রেশন রকেট ফর অ্যাজাইল সিসলুনার অপারেশন্স।
পারমাণবিক শক্তিচালিত মহাকাশযান তৈরিতে নাসা-র সঙ্গে হাত মিলিয়েছে আমেরিকার প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরির সংস্থা লকহিড মার্টিন। তাদের নকশা, তাদের তৈরি রকেটের প্রথম পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ হবে। তার পর ওই রকেট পাঠানো হবে মহাকাশে।
বর্তমানে রকেট উৎক্ষেপণে স্পেস লঞ্চ সিস্টেম ব্যবহার করে নাসা। যুগ যুগ ধরে এই প্রযুক্তিরই ব্যবহার করে আসছে গোটা বিশ্ব। এর আওতায় জ্বালানির সঙ্গে অক্সিডাইজার মেশানো হয়, যা ধাক্কা দিয়ে মাটি থেকে শূন্যে তুলে দেয় রকেটকে।
তার পরিবর্তে রকেট উৎক্ষেপণে পারমানবিক শক্তিকে কাজে লাগাতে চাইছে নাসা। তারা জানিয়েছে। পারমাণবিক শক্তিচালিত রকেট উৎক্ষেপণে ধাক্কার তীব্রতা হয় কম। কিন্তু এতে থাকা রাসায়নিকের ক্ষমতা অনেক বেশি।
বিজ্ঞানীদের দাবি, পারমাণবিক শক্তিসম্পন্ন ইঞ্জিন রকেটের গতিবৃদ্ধি করে। দীর্ঘ সময় মহাকাশে রকেটকে ভাসিয়ে রাখতে পারে। ফলে পৃথিবী থেকে গন্তব্যে পৌঁছতেও কম সময় লাগবে। বর্তমানে মঙ্গলগ্রহে পৌঁছতে যেখানে প্রায় সাত মাস সময় রাগে, পারমাণবিক শক্তিসম্পন্ন ইঞ্জিন থাকলে, মাত্র ৪৫ দিনেই ছোঁয়া যাবে মঙ্গলের মাটি।
এখনও পর্যন্ত যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে, সেই অনুযায়ী, পারমাণবিক শক্তিচালিত ইঞ্জিনের ক্ষেত্রে চেইন রিয়্যাকশনের উপর ভরসা করছেন বিজ্ঞানীরা। এতে পরমাণুগুলি যত ভাঙবে, ততই শক্তি উৎপন্ন হবে। বর্তমান প্রযুক্তির চেয়ে তা প্রায় তিন গুণ বেশি শক্তিশালী হবে।
১৯৫৯ সালেই রকেট উৎক্ষেপণে পারমাণবিক শক্তিকে কাজে লাগানো ভাবনা মাথা আসে আমেরিকার। সেই মতো শুরু হয় গবেষণাও। নিউক্লিয়ার ইঞ্জিন ফর রকেট ভেহিকল অ্যাপ্লিকেশন নামের একটি রিয়্যাক্টর তৈরি করে সফল পরীক্ষাও হয়।
কিন্তু ১৯৭৩ সালে অ্যাপোলো অভিযানের সমাপ্তিতে পারমাণবিক শক্তিচালিত রকেট উৎক্ষেপণের উদ্যোগ কার্যতই ঝেড়ে ফেলা হয়। এখন আবার নতুন করে সেই কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
নয়া প্রকল্পে, রিয়্যাক্টরের মধ্যে ভাঙা হবে ইউরেনিয়াম। তাতে হাইড্রোজেনের তাপমাত্রা বাড়বে, যা মাটি থেকে শূন্যে উৎক্ষেণ ঘটাবে রকেটের। সে ক্ষেত্রে হাইড্রোজেনের তাপমাত্রা হবে ২৪২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে তার আগে মাইনাস ২৫১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখতে হবে হাইড্রোজেনকে।
পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণে পৃথিবীপৃষ্ঠ ৭০০ থেকে ২০০০ কিলোমিটার উঁচুতে নিয়ে যাওয়া হবে রকেটটিকে। এর পর প্রায় ৩০০ বছর কক্ষপথে টিকে থাকতে পারবে ওই রকেট। তাতে রকেটের তেজস্ক্রিয় জ্বালানিও নিরাপদ পর্যায়ে পৌঁছতে সফল হবে।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -