Science News: পৃথিবীর অন্তঃস্থলের গঠন কেমন, ভুল ধরিয়ে দিল ভূমিকম্পই!
মহাশূন্যে প্রাণের খোঁজ চলছে যেমন, মাটির নিচের জগৎ নিয়েও উৎসাহে খামতি নেই। ভূগর্ভের গভীর গহনে তরল লাভার স্রোত বয়ে চলেছে বলেই এতদিন মত ছিল বিজ্ঞানীদের।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appকিন্তু একের পর এক ভূমিকম্পই সেই ধারণা বদলে দিল এ বার। তরল লাভা নয়, বরং পৃথিবীর অন্তঃস্থলে লোহা এবং নিকেলের মিশ্রণে তৈরি, ৭২৫ কিলোমিটার চওড়া একটি গোলক রয়েছে বলে উঠল দাবি।
এতদিন বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল, পৃথিবীর মোট চারটি স্তর রয়েছ, ভূত্বক, আবরণ, বহির্ভাগের তরল স্তর এবং কঠিন অভ্যন্তরীণ স্তর। কিন্তু পৃথিবীর অন্তঃস্থলও দুই স্তরে বিভক্ত বলে বিগত কয়েক বছরে আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা।
নেচার পাবলিকেশন্স জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বিষয়টি সামনে এসেছে। ভূমিকম্প, ভূতরঙ্গ থেকে গৃহীত তথ্য থেকে বিষয়টি সম্পর্কে ধারণা মিলেছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। তাঁদের দাবি, ভূমিকম্পের সময় যে তরঙ্গের সৃষ্টি হয়, তা পাথরের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়।
যে পাথর যে খনিজ দিয়ে তৈরি, তরঙ্গের গতিও তেমন তেমন পরিবর্তিত হয়। কিছু তরঙ্গ রয়েছে, যারা আবার তরলের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে না। সে ক্ষেত্রে ধাক্কা লেখে ফিরে আসে। তা থেকেই পৃথিবীর অন্তঃস্থলে পৃথিক একটি স্তর রয়েছে বলে জানতে পেরেছেন গবেষকরা।
ওই গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, এই প্রথম দেখা গেল যে, শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর ভূ-তরঙ্গ এদিক ওদিক ধাক্কা খেয়েই ফিরছে, ঠিক পিংপং বলের মতো।
২০১৭ সালে সলোমন দ্বীপপুঞ্জের কাছে যে ভূমিকম্প হয়, তার তীব্রতা ছিল ৭.৯। তা থেকে সৃষ্ট তরঙ্গ পৃথিবীর সর্বত্র বেশ কয়েক বার অনুরণিত হয়েছে। আর তা থেকেই পৃথিবীর অন্তঃস্থল নিয়ে নয়া তত্ত্বে পৌঁছেছেন গবেষকরা।
গবেষকদের দাবি, ভূতরঙ্গ যখন পৃথিবীর অন্তঃস্থল দিয়ে সঞ্চারিত হয়, সেই সময় অবস্থান অনুযায়ী ফারাক ধরা পড়ে গতিতেও। পৃথিবীর অন্তঃস্থলের বহিরাবরণের উপর দিয়ে এক মেরু থেক অন্য মেরুতে দ্রুত গতিতেই প্রবাহিত হয় তরঙ্গ।
আবার নিরক্ষরেখা বরাবর গতি থাকে ধীর। কিন্তু মেরুরেখা থেকে ৫০ ডিগ্রি কোণে তরঙ্গ সবচেয়ে ধীর গতিতে এগোয়। পৃথিবীর অন্তঃস্থলের বহিরাবরণ এবং অভ্যন্তরীণ অংশের গঠন রাসায়নিক ভাবে ভিন্ন হওয়াতেই তরঙ্গের আচরণে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় বলে মত গবেষকদের।
গবেষকদের দাবি, আজ থেকে কোটি কোটি বছর আগে পৃথিবী যখন ঠান্ডা হয়, লোহা এবং নিকেলের মতো ভারী উপাদান ক্রমশ নিচের দিকে ধাবিত হয়। এর ফলে পৃথিবীর বহিরাবরণ গঠিত হয় তুলনামূলক হালকা উপাদানে।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -