Election Results 2024
(Source: ECI/ABP News/ABP Majha)
Miracle Baby: মিরাকল বললেও কম, মাতৃগর্ভ থেকে দু’বার ভূমিষ্ঠ হয় এই শিশু
মায়ের গর্ভ থেকে পৃথিবীর আলো দেখার মুহূর্ত, সন্তানের জন্ম এককথায় মিরাকলও। কিন্তু কিছু কিছু ঘটনাকে মিরাকল বললেও লঘু করে দেখানো হয়। ২০১৬ সালে আমেরিকার টেক্সাসে তেমনই পরিস্থিতির সম্মুখীন হন মার্গারেট বোয়েমার।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appএকবার নয়, দু’-দু’বার পৃথিবীর আলো দেখে তাঁর তৃতীয় সন্তান। চিকিৎসার প্রয়োজনে প্রথম বার জরায়ু কেটে বের করা হয় ভ্রূণটি। তার পর ফের জরায়ুতে ঢুকিয়ে মুখবন্ধ করে দেওয়া হয়। তার পর ৯ মাস বাদে জন্ম নেয় শিশুটি।
চার মাসের গর্ভাবস্থা রুটিন চেকআপ করাতে গিয়েছিলেন মার্গারেট। কিন্তু স্ক্যানে সন্দেহজনক কিছু চোখে পড়ে চিকিৎসকেদের। তাঁর কন্যাসন্তানের ভ্রূণটি Sacrococcygeal Teratoma-য় আক্রান্ত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। জীবনে কখনও ওই রোগের নামই শোনেননি মার্গারেট এবং তাঁর পরিবার। তাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তাঁরা।
চিকিৎসকেরা জানান, ভ্রূণের শিরদাঁড়ার ঠিক নীচের অংশে একটি টিউমার গজিয়েছে। এমন ঘটনা একেবারেই বিরল নয়। অনেক সময় জন্মের পর টিউমার কেটে বাদ দেওয়া হয়। কিন্তু মার্গারেটের সন্তানের সমস্যা অত্যন্ত জটিল।
কারণ এক্ষেত্রে টিউমারটি ভ্রূণের চেয়ে আকারে বড়। ভ্রূণের থেকে শুষে নিচ্ছে টিউমারটি। ফলে ভ্রূণের হৃদস্পন্দন শ্লথ হয়ে আসছে। নয় মাস অপেক্ষা করতে গেলে হয়ত ভ্রূণটিকে বাঁচানোই যাবে না। এমন অবস্থায় মার্গারেটকে গর্ভপাত করানোর পরামর্শ দেন অনেকেই। কিন্তু আগে যমজ সন্তানের একজনকে হারানোয়, তাতে রাজি হননি তিনি।
শেষ মেশ ঝুঁকিপূর্ণ অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। সেই সময় ২৩ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা মার্গারেট। অপারেশন টেবিলে তোলা হয় মার্গারেটকে। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে চলে অস্ত্রোপচার। টিউমারটি আকারে এত বড় হয়ে গিয়েছিল যে, একবারে বের করা যাচ্ছিল না। সেটিকে ফুটো করে, কেটে বের করতে হয়।
ওই সময় মার্গারেটের সন্তানের ভ্রূণ জরায়ু থেকে বের করে আনতে হয়। অস্ত্রোপচারের সময় ভ্রূণের হৃদস্পন্দনও শ্লথ হয়ে যায়। উপস্থিত কার্ডিওলজিস্ট কোনও রকমে পরিস্থিতি সামাল দেন। টিউমারটি সম্পূর্ণ কেটে বাদ দেওয়ার পর ভ্রূণটিকে আবারও জরায়ুতে চালান করে দেন চিকিৎসকেরা। সেলাই করে মুখ বন্ধ করে দেন জরায়ুর।
এর পর আর বাকি, ১২ সপ্তাহ বিছানা ছেড়ে উঠতে পারেননি মার্গারেট। কিন্তু সবমিলিয়ে ৩৬ সপ্তাহ পর সেই সুখের মুহূর্ত এসে হাজির হয়। ফুটফুটে কন্যার জন্ম দেন মার্গারেট। নর্মাল ডেলিভারি নয়, সিজার করে তাঁর সন্তানকে বের করা হয়।
কিন্তু সেখানেও থামেনি লড়াই। জন্মের পর দেখা যায় শিশুটির শিরদাঁড়ার নীচের অংশে আবারও বেড়ে উঠছে টিউমার। আট দিন বয়সে আবারও অস্ত্রোপচার হয় শিশুটির। বেশ কয়েক সপ্তাহ হাসপাতালে থাকতে হয় শিশুটিকে। তার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরে।
এক্ষেত্রে শুধুমাত্র একরত্তির প্রাণশক্তিরই তারিফ করেননি চিকিৎসকেরা, মার্গারেটের ধৈর্য এবং সহ্যশক্তিরও ভূয়সী প্রশংসা করেন তাঁরা। বর্তমানে শিশুটি সুস্থ জীবন যাপন করছে। ভ্রূণের অস্ত্রোপচার থেকে, মার্গারেটের ডেলিভারি এবং আবারও জন্মের পর শিশুটির অস্ত্রোপচার, নাইজিরীয় এক চিকিৎসক এবং তাঁর সহযোগীদের হাতেই অসাধ্যসাধন হয়।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -