Space Science: কালো ক্যানভাসে নীল-সাদা রংয়ের প্রলেপ, ৫৫ বছর আগে তোলা রঙিন ছবিতে অপরূপা পৃথিবী
চূড়ান্ত অনিশ্চয়তার মধ্যেও মনে থেকে যায় কিছু মুহূর্ত। কিছু ছবি জায়গা করে নেয় ইতিহাসের পাতায়। আজ থেকে ৫৫ বছর আগের তেমনই এক ছবি আজও চিরন্তনই রয়ে গিয়েছে।
Download ABP Live App and Watch All Latest Videos
View In Appচাঁদের মাটিতে পদার্পণ এখনও পর্যন্ত মানবসভ্যতার সবচেয়ে স্মরণীয় মুহূর্ত হয়ে রয়েছে। হাজার ষড়যন্ত্র তত্ত্বও তাতে চিড় ধরাতে পারেনি। তার পর থেকে বিগত কয়েক দশকে একাধিক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হয়েছে বিশ্ব।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, চাঁদের আকাশে পৃথিবীর উদয় হতে দেখা। ১৯৬৮ সালে বড়দিনে অ্যাপোলো-৮ থেকে ওই ছবি তোলা হয়। চাঁদকে প্রদক্ষিণ করছিল অ্যাপোলো-৮। সেই সময় অন্ধকারের বুক চিড়ে নীল-সাদা পৃথিবী ধরা দেয়।
অ্যাপোলো ৮ মহাকাশযানে সওয়ার ছিলেন জ্যোতির্বিজ্ঞানী বিল অ্যান্ডার্স। পরবর্তী কালে, সেই বিশেষ মুহূর্তের ভয়েস রেকর্ডিংয়ে বিলকে বলতে শোনা যায়, “ওহ্ মাই গড, একবার তাকিয়ে দেখো! আকাশে পৃথিবীর উদয় ঘটছে। অসম্ভব সুন্দর দৃশ্য।”
অ্যাপোলো-৮ মহাকাশযানে সওয়ার ছিলেন জিম লাভেলও। তাঁর উদ্দেশে চিৎকার করে বিল বলেন, ‘‘তোমার কাছে রক্ষিন ক্যামেরা আছে না, জিম? এখনই দাও, তাড়াতাড়ি করো।’’ এর পর জিমের প্রতিক্রিয়া ছিল ‘‘’কী অপরূপ দৃশ্য’’।
পৃথিবীবাসীকে ওই ছবি পাঠাতে দেরি করেননি বিজ্ঞানীরা।পৃথিবীর আকাশে যেমন চন্দ্রোদয় দেখা যায়, তেমনই চাঁদের আকাশে পৃথিবীর উদয়ের সেই ছবি প্রকাশ করা হয় ‘পৃথিবীর উদয়’ নামে। জিমের ক্যামেরায় ছবিটি তুলেছিলেন বিল।
মহাশূন্য থেকে তোলা পৃথিবীর সর্বপ্রথম রঙিন ছবি সেটি। সেই সময় ইন্টারনেটের দৌরাত্ম্য না থাকলেও, গোটা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে ওই ছবিটি। শুধু তাই নয়, ওই ছবি দেখেই বিশ্ব পরিবেশ আন্দোলনের সূচনা ঘটে। পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তুলতে, প্রতি বছর বিশ্ব জুড়ে পালিত হয় ধরিত্রী দিবস।
পরিবেশ সচেতন মানুষ জন আজও চাঁদের আকাশে পৃথিবীর উদয়ের ওই মুহূর্তকে ঐতিহাসিক বলে মনে করেন। তাঁদের মতে, পৃথিবীর ওই রূপ আগে কখনও চোখে পড়েনি। যেমন সুন্দর, তেমনই দুর্বল, তাই পৃথিবীকে রক্ষা করতে ঝাঁপিয়ে পড়েন পরিবেশ সচেতন মানুষ জন।
ওই একটি ছবির দৌলতেই ছয়ের দশকে ইউরোপ এবং আমেরিকা জুড়ে পরিবেশ আন্দোলনের সূচনা ঘটে। একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থা তা নিয়ে এগিয়ে আসে। ১৯৭০ সালে পরিবেশ সংরক্ষণ সংস্থার প্রতিষ্ঠা করে তৎকালীন আমেরিকা সরকার।
ওই ছবির প্রভাব এতই সুদূরপ্রসারী ছিল যে, ছবিটি প্রকাশিত হওয়ার ১৮ মাস পরে যখন প্রথম ধরিত্রী দিবস পালিত হচ্ছে, সেই সময় আমেরিকার রাস্তায় নেমে এসেছিলেন প্রায় ২ কোটি মানুষ। প্রযুক্তির উন্নতিতে বর্তমানে মহাকাশ থেকে প্রাপ্ত ছবির গুণমানের উন্নি ঘটেছে। কিন্তু নীল-সাদা পৃথিবীর প্রথম দর্শনের মুহূর্ত আজও স্মরণীয় হয়ে রয়েছে।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -