কলকাতা : ভাদ্র মাসের সংক্রান্তি মানেই বাংলার ঘরে ঘরে অরন্ধন ব্রত। মূলত পশ্চিমবঙ্গীয় পরিবারগুলিতে অরন্ধন পুজোর বেশি প্রচলিত। একে অরন্ধন বা রান্না পুজো বা উনুন পুজোও বলা হয়ে থাকে। ভাদ্র মাসের সংক্রান্তির দিন এই ব্রতপালন হয়।  পরিবারের মঙ্গলকামনায় অনেক বাড়িতেই উনুন জ্বলে না। আগের দিন করে রাখা হয় রান্না। পর দিন পাত পেড়ে তা খাওয়া হয়। তার আগে উনুন পুজো হয় রান্নাঘরে। কেউ কেউ বলেন, পরিবারের সৌভাগ্যকামনায় ও সাপের উপদ্রবের হাত থেকে নিস্তার পাবার জন্যই এই পুজোর প্রচলন।  রান্না পুজোকে অনেকে দেবী মনসার আরাধনাও বলে থাকেন।  


ঘটি বাড়িতে একে রান্না পুজোও বলে। গ্রাম বাংলায় সাপের দেবী মনসাকে উদ্দেশ্য করে এই পুজো করা হয়  ভাদ্রমাসব্যাপী।  ধরে। ড. শীলা বসাকের লেখা বাংলার ব্রতপার্বণ বই থেকে জানা যায়, রান্নাপুজো দুভাবে হয়। 'ইচ্ছা রান্না' এবং 'বুড়ো রান্না"। অনেকে ভাদ্র মাসের মঙ্গলবার বা শনিবার দিন "ইচ্ছা রান্না' ব্রতপালন করে। আর 'বুড়ো রান্না ব্রত হয় ভাদ্রমাসের সংক্রান্তির দিন। সন্ধেবেলা মনসা পুজো করে রাত্রে নতুন হাঁড়িতে শুদ্ধ কাপড়ে মনসার উদ্দেশে রান্না করা হয়। তারপর সেই ভাত সারারাত জলে ভিজিয়ে রাখতে হয়। পরদিন তা খাওয়া হয়। 


অরন্ধন ব্রতে জলে ভেজানো ভাতের সঙ্গে আরও কিছু আকর্ষণীয় পদ রান্না করার রীতি রয়েছে।  ইলিশ মাছ, চিংড়ি মাছ রান্না হয় সাধ্য অনুসারে। এছাড়াও ওলভাজা, টক, কচুশাকের তরকারি রান্না হয়। পরের দিন এই বাসি ভাত, তরকারি, মাছকে প্রসাদ হিসেবে খাওয়া হয়। শুধু নিজের পরিবারে নয়, আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া, প্রতিবেশীদের খাওয়ানোর রীতি আছে।  এই পুজো বা ব্রতের বিধিনিষেধ আছে অনেক। পশ্চিমবঙ্গের কিছু অঞ্চলে শ্রাবণ সংক্রান্তিতে অরন্ধন হয়। বাংলাদেশে আবার মনসা পুজোর সময়টা আলাদা। ৫ শ্রাবণ থেকে সংক্রান্তি পর্যন্ত বাংলাদেশে মনসা পুজো করা হয়।


কোনও বাড়িতে ব্রত চলাকালীন কোনও মৃত্যু বা বাধা সৃষ্টি হলে, আর এই ব্রত করা যায় না।

মনসা পুজোর রীতি : উনুনে মনসার ডাল রেখে দুধ দিয়ে ডালটিকে স্নান করানো হয়। এইভাবে মনসাপূজা করা হয়। আবার কোথাও মনসার প্রতিমা গড়েও পুজো করা হয়।       


আরও পড়ুন :


জীবনে এই কাজগুলি করলে নরক যন্ত্রণা নিশ্চিত ! বলছে গরুড় পুরাণ