কলকাতা : শ্রীমদ্ভাগবত গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণের উপদেশ বর্ণিত হয়েছে। গীতার এই উপদেশগুলি মহাভারতের যুদ্ধের সময় শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে দিয়েছিলেন। গীতায় দেওয়া শিক্ষাগুলি আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক এবং মানুষকে জীবনযাপনের সঠিক পথ দেখায়। গীতার বাণী জীবনে গ্রহণ করলে উন্নতি লাভ করা যায়। গীতা এমন একটি ধর্মগ্রন্থ যা মানুষকে বাঁচতে শেখায়।
গীতা জীবনে ধর্ম, কর্ম এবং প্রেমের পাঠ দেয়। শ্রীমদ্ভাগবত গীতার জ্ঞান মানব জীবনের জন্য উপযোগী বলে মনে করা হয়। গীতা একটি সম্পূর্ণ জীবন-দর্শন এবং যে ব্যক্তি এর পথ অনুসরণ করেন তিনি সর্বোত্তম।
গীতার উপদেশ-
- গীতায় শ্রী কৃষ্ণ বলেছেন, সঠিক সময় এলে ভগবান আপনাকে অবশ্যই সঠিক মানুষের সঙ্গে দেখা করাবেন। এই মানুষগুলোর কারণেই আপনি আপনার জীবনে এগিয়ে যাবেন।
- গীতায় লেখা আছে, ভালবাসার অর্থ কাউকে পাওয়া নয়, তাতে হারিয়ে যাওয়া। শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, প্রেমে আত্মত্যাগ করতে হবে। ভালবাসা সেটা নয়, যেটা ছিনিয়ে নেওয়া যায় বা চাইতে হয়, ভালবাসা সেটাই যেখানে ত্যাগ আছে।
- কারও উপর খুব বেশি আসক্তি থাকা উচিত নয়। কারণ, অতিরিক্ত আসক্তি ক্ষতিকারক হয়ে উঠতে পারে। একজন মানুষকে প্রত্যাশার দিকে নিয়ে যায় এবং পরবর্তীকালে এই প্রত্যাশাই দুঃখের কারণ হয়ে ওঠে।
- শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন যে, জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিজেদেরই নেওয়া উচিত। কারণ, তাতে পরে অনুশোচনা করতে হয় না। আপনার সিদ্ধান্ত ভুল হলেও তা আপনার অভিজ্ঞতা বাড়াবে।
- শ্রীকৃষ্ণ গীতায় বলেছেন যে, কারও সঙ্গে যতই প্রতারণা হোক না কেন, কেউ তাঁর থেকে ভগবানের আশীর্বাদ কেড়ে নিতে পারবে না। তাই অনেক কষ্ট করেও ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস হারানো উচিত নয়।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, বাড়িতে শ্রীমদ্ভাগবত গীতা রাখার এবং পাঠ করার সময় কিছু বিষয় মাথায় রাখা উচিত, তবেই আপনি সম্পূর্ণ ফল পাবেন। শ্রীমদ্ভাগবত গীতা গ্রন্থ একটি অত্যন্ত পবিত্র গ্রন্থ। এটি সর্বদা পুজোর স্থানে রাখুন। স্নান না করে এই বই স্পর্শ করবেন না।
যে কোনও সময় গীতা পাঠ করা যেতে পারে, তবে আপনি যদি কোনও অধ্যায় শুরু করে থাকেন, তবে তা মাঝখানে না রেখে শেষ করেই আসন থেকে উঠবেন। পাঠ শুরু করার আগে ভগবান গণেশ এবং শ্রী কৃষ্ণকে স্মরণ করুন। আপনি যে ভঙ্গিতে প্রতিদিন আবৃত্তি করেন সেই ভঙ্গি ব্যবহার করুন। শ্রীমদ্ভাগবত গীতা নীচে বা মাটিতে রেখে পাঠ করা উচিত নয়। এর জন্য পুজোর চৌকি বা কাঠ (কাঠের স্ট্যান্ড) ব্যবহার করুন।