কলকাতা: কালীপুজো (Kali Puja 2023) হয়ে গিয়েছে। এবার আসছে বাঙালির আরও একটি ঘরের উৎসব- ভাইফোঁটা (Bhai Dooj)। গ্রাম থেকে শহর- বাংলার অধিকাংশ ঘরে ঘরে পালিত হয় এই অনুষ্ঠান। ভাই ও বোনের চিরস্থায়ী সম্পর্কের অন্যতম প্রতীক এই উৎসব। সারা ভারতেই বিশেষ বিশেষ পদ্ধতিতে এই উৎসব আয়োজিত হয়ে থাকে। এই দিনে বোনেরা তাঁদের ভাই বা দাদাদের টিকা বা ফোঁটা পরিয়ে দেন। তবে এর শুভ সময় ও তিথি রয়েছে।


তবে তারও আগে আরও একটি বিষয় দেখে নেওয়া প্রয়োজন। অনেক ক্যালেন্ডারে ১৫ নভেম্বর লেখা রয়েছে ভাইফোঁটার দিন হিসেবে। আবার অনেক জায়গায় ১৪ নভেম্বর ভাইফোঁটা দেওয়া যাবে বলে জানানো হচ্ছে। তাহলে ঠিক সময় কোনটি? আসলে কবে ভাইফোঁটা? ভাই বা দাদাকে ফোঁটা দেওয়ার জন্য কোন দিনটি বেছে নেওয়া হবে?      


সাধারণত ভাইফোঁটা উৎসব দীপাবলি (Diwali) বা কালীপুজোর দ্বিতীয় দিনে পড়ে। কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে এই উৎসব পালিত হয়।


ভাইফোঁটা বা ভ্রাতৃদ্বিতীয়া আরও একটি নামে পরিচিত- যম দ্বিতীয়া। এই দিনে বিশেষ মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে বোন বা দিদিরা তাঁদের দাদা বা ভাইদের কপালে ফোঁটা দিয়ে দীর্ঘায়ু কামনা করেন। 


২০২৩ সালে, ভাইফোঁটা উৎসব ১৪ এবং ১৫ নভেম্বর অর্থাৎ মঙ্গলবার এবং বুধবার ধরে পালিত হবে। ২০২৩ সালে, ভাইফোঁটা অর্থাৎ দ্বিতীয়া তিথি ১৪ নভেম্বর দুপুর ২টা বেজে ৩৬ মিনিট থেকে শুরু হবে এবং ১৫ নভেম্বর দুপুর ১টা বেজে ৪৭ মিনিট পর্যন্ত চলবে। অর্থাৎ ২ দিন ধরে ভাইফোঁটা উৎসব পালনের তিথি রয়েছে।


অর্থাৎ এই বছরের ১৪ ও ১৫ নভেম্বর ২ দিনই ভাইফোঁটা দেওয়া যাবে। যদি ১৪ নভেম্বর ফোঁটা দিতে না পারেন, তাহলে পরেরদিন অর্থাৎ ১৫ নভেম্বর দুপুর ১টা বেজে ৪৭ মিনিট পর্যন্ত ফোঁটা দেওয়া যাবে। অথবা ১৫ নভেম্বর সময় না থাকলে আগেরদিন ফোঁটা দিয়ে দেওয়া যায়। 


এই উৎসব ঘিরে নানা লোককথা চালু রয়েছে। ভাইফোঁটা উৎসব উদযাপন সম্পর্কে চালু ওই লোককথাটি হল, কার্তিকে শুক্লা দ্বিতীয়া তিথির দিন যমুনা তাঁর ভাই যমরাজকে বাড়িতে ডেকেছিলেন এবং ফোঁটা দিয়ে খাবার পরিবেশন করেছিলেন। তাই এটি যম দ্বিতীয়া নামেও পরিচিত।


সারা ভারতে এক এক অঞ্চলে এক এক রকম ভাবে ভাইফোঁটা পালিত হয়
পশ্চিমবঙ্গ: পশ্চিমবঙ্গে, এই উৎসবটি কার্তিক শুক্লপক্ষের দ্বিতীয় দিনে ভাইফোঁটা নামে পালিত হয়।
মহারাষ্ট্র: মহারাষ্ট্রে এই উৎসব 'ভাউ বীজ' নামে পরিচিত।
উত্তরপ্রদেশ: এখানে এটি ভাইদুঁজ নামে পরিচিত। বোনেরা তাঁদের ভাইদের কপালে তিলক লাগান এবং মিষ্টি খাওয়ান।
বিহার: বিহারে ভাই দুজ গোধন নামেও পরিচিত। এখানে উদযাপনের ঐতিহ্য সম্পূর্ণ আলাদা। এই দিনে বোনেরা ভাইদের বকাঝকা করে, খারাপ কথা বলে। এরপর বোনেরা ভাইয়ের কাছে ক্ষমা চান। তারপর বোন তাঁর ভাইকে তিলক দেয় এবং মিষ্টি খাওয়ায়।


আরও পড়ুন: এক গ্রামে একশোরও বেশি কালী পুজো ! নামই হয়ে গেল কালীগ্রাম