কলকাতা : ভূত চতুর্দশী ( Bhoot Chaturdashi )। কালীপুজোর ( Kali Puja ) আগের দিন। সাধারণের বিশ্বাস ভূতপ্রেতদের দূরে রাখতেই এদিন ১৪ শাক খেয়ে, ১৪ প্রদীপ জ্বালিয়ে এবং ১৪ ফোঁটা দিয়ে এই উৎসব পালন করা হয়। কিন্তু কেন পালন করা হয় ভূত চতুর্দশী ? কেনই বা কালীপুজোর আগের দিনই এই রীতি-পালন? সত্য়ি কি ভূত-প্রেত নেমে আসেন পৃথিবীতে এসময়? প্রশ্ন অনেক। মতও অনেক। এবিপি লাইভকে ভূত চতুর্দশীর ব্য়াখ্যা দিলেন সর্বভারতীয় প্রাচ্যবিদ্যা অধ্যক্ষ ডঃ জয়ন্ত কুশারী (Dr. Jayanta Kushari) |
পৃথিবী, জল, বায়ু, অগ্নি, আকাশ। এই হল পঞ্চভূত। আর মানবদেহ এই পঞ্চভূতের সমন্বয়েই তৈরি। মৃত্যুর পর দেহ আবার এই পঞ্চভূতেই মিলিয়ে যায়। আর ভূত চতুর্দশীতে পৃথিবী, জল, বায়ু, অগ্নি, আকাশ - এই পঞ্চভূতকেই সম্মান জানানো হয়। বললেন ডঃ জয়ন্ত কুশারী।
তাহলে তো প্রশ্ন উঠতেই পারে, কেন কালীপুজোর ঠিক আগে, চতুর্দশী তিথিতে এই দিনটি পালন করা হয়? আসলে শাস্ত্র মতো ১৪ সংখ্যাটির বিশেষ গুরুত্ব আছে। ঊর্ধ্বলোকের সপ্তলোক অর্থাৎ সপ্তস্বর্গ, ভূঃ ভুবঃ স্বঃ জনঃ মহঃ তপঃ সত্য। পুরাণোক্ত এই সপ্ত ঊর্ধ্বলোক। আবার পাতালের দিকে তাকালে, সেখানেও সপ্তলোক। অতললোক, বিতললোক, সুতললোক, তলাতললোক, মহাতললোক, রসাতললোক, পাতাললোক। এই দুই সাত মিলিয়ে চোদ্দ। এই চোদ্দলোকে যেখানে যেখানে জীবের অবস্থান, তাদের আলোকিত করার জন্যই ১৪ বাতি দেওয়া।
আবার পাটিগণিতের হিসেব দেখতে গেলে ৯ ও ৫ যুক্ত করলেও ১৪ হয়। দুই চোখ, দুই নাসিকা ছিদ্র, দুই কান, এক মুখ গহ্বর, পায়ুদ্বার, লিঙ্গ। আর সেই সঙ্গে পঞ্চভূত। ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরূত্ ও ব্যোম। মানবশরীরের এই দিকগুলিকে জাগ্রত করার প্রতীক হিসেবেও ১৪ দীপ জ্বালা হয়ে থাকে।
আবার এই যে ১৪ শাকের বিধানের ব্যাখ্যায় ডঃ জয়ন্ত কুশারী বলেছেন, শাক এমন একটি জিনিস, যা সব জায়গায় জন্মায়। তাই ১৪ শাকের মাধ্যমে এই প্রার্থনা, ১৪ লোকের সব জীবরা যেন শাকে-ভাতে থাকতে পারে। এই জন্যই ১৪ শাকের বিধান। ১৪ শাকের মধ্যে রয়েছে, এদিন কোন কোন শাক খাবেন - ওল , ভাটপাতা, কেঁউ, শৌলফ, শাঞ্চে,
কালকাসুন্দে, পলতা, বেতো, সরষে, নিম, গুলঞ্চ, শুষণী, হিঞ্চে, জয়ন্তী।
( ডিসক্লেমার : এই কপিতে উল্লিখিত তথ্য সাক্ষাৎকার নির্ভর, বক্তার নিজস্ব। কোনো সম্পাদকীয় / সম্পাদক-নিয়ন্ত্রিত তথ্য নয়। এবিপি লাইভের এই বিষয়ে কোনও মতামত বা মন্তব্য নেই। )