কলকাতা : আজ চৈত্র ( Chaitra ) সংক্রান্তি। চড়ক পুজো ১৪ এপ্রিল শুক্রবার । পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে আছে নানা রকম সনাতন রীতিনীতি।  যদিও চৈত্রমাস জুড়েই এই পুজোর প্রস্তুতি চলে।  চৈত্র জুড়ে মাস জুড়ে মাধুকরী করে চড়ক পুজোর আয়োজন করেন অনেকে। এরপর সংক্রান্তির দিন মহাদেবের উদ্দেশে কঠিন পুজো করে সম্পন্ন হয় ব্রত। এই পুজো বাংলার লোকসংস্কৃতির সঙ্গে জড়িয়ে আছে বহুদিন ধরে।


এই পুজোর রীতিনীতি কী?


জলন্ত অঙ্গারের উপর দিয়ে হাঁটা, গাছের সঙ্গে লোহার হুকে ঝুলে ঘোরা, উঁচু থেকে ঝাঁপ,ধারালো জিনিসে অঙ্গ বিদ্ধ করা, দণ্ডী খাটা ইত্যাদি নানা জিনিস দেখা যায় চড়কে। এদিন মূলত মহাদেবেরই পুজো করা হয়। চড়ক পুজোর আগের দিন চড়ক গাছকে পরিষ্কার করা হয়। তারপর জলভরা একটি পাত্রে শিবলিঙ্গ স্থাপন হয় সেখানে। এই লিঙ্গকে বুড়ো শিব বলে। এই পুজোর পৌরোহিত্য করেন পতিত ব্রাহ্মণেরা।


বহু বাড়িতে তাই নিরামিষ খাওয়ার প্রচলন আছে। লোকমুখে শোনা যায়, ১৪৮৫ খ্রিষ্টাব্দে সুন্দরানন্দ ঠাকুর নামের এক রাজা এই পুজো প্রথম শুরু করেন। ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ সরকার আইন করে এই উৎসব বন্ধ করে দেয় বলে শোনা যায়। তারপরও এই কঠিন ব্রত করার প্রচলন আজও রয়েছে। এদিন সারা মাস ব্রতপালন যাঁরা করেন, তাঁরা ছাড়াও অনেকেই শিবের পুজো করে থাকেন। 


শিব পুজোর কিছু নিয়ম


যাঁরা বাড়িতে চড়কের দিন শিবের পুজো করেন, তাঁরা মনে রাখুন শিব পুজোর কিছু নিয়ম।


আসুন জেনে নেওয়া যাক কোন জিনিসগুলি শিবের খুব প্রিয়।



  • এক গ্লাস জল খেয়েও তিনি খুশি হন। সকালে স্নান করে শিব মন্দিরে গিয়ে শিবলিঙ্গে জল নিবেদন করলে শিবের আশীর্বাদ পাওয়া যায়।  

  • শিবলিঙ্গে জাফরান অর্পণ করলে মানুষ সুখ শান্তি পায়। অন্যদিকে চিনি দিয়ে শিবলিঙ্গে অভিষেক করলে সমৃদ্ধি বৃদ্ধি পায় এবং দারিদ্র্য দূর হয়।

  • ভোলেনাথও সুগন্ধিও খুব পছন্দ করেন বলে মানুষের মনে বিশ্বাস।বিশ্বাস করা হয় যে শিবলিঙ্গে সুগন্ধি লাগালে মনের চিন্তা শুদ্ধ ও শুদ্ধ হয়। শিবলিঙ্গে দুধ অর্পণ করলে স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং মানুষের সমস্ত ইচ্ছা পূরণ হয়।

  • দই এবং ঘিও ভগবান শিবের খুব প্রিয়। এগুলো নিবেদন করলে জীবনে আসা ঝামেলা থেকে সহজে মুক্তি পাওয়া যায়। বিশ্বাস এই ভাবে পুজো করলে জনমনে ভক্তের মান মর্যাদাও বাড়ে।

  • চন্দন নিবেদন করেও ভোলেনাথ প্রসন্ন হন। শিবলিঙ্গে চন্দন অর্পণ করলে মানুষ সমাজে সম্মান ও খ্যাতি পায়।

  • শিবলিঙ্গে বেলপত্র নিবেদনকারী ভক্তদের সমস্ত মনোবাঞ্ছা পূরণ হয়।

  • যাঁরা তাদের বিবাহিত জীবন বা প্রেম জীবনে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন তাদের উচিত সোমবার শিব মন্দিরে গৌরী শঙ্কর রুদ্রাক্ষ অর্পণ করা। এতে করে দাম্পত্য জীবনের সমস্যা দূর হয়।