কলকাতা: দেবী চন্দ্রঘণ্টা দেবী (Chandraghanta Devi) পার্বতীর তৃতীয় রূপ। নবদুর্গার তৃতীয় রূপ চন্দ্রঘণ্টা। নবরাত্রি (Navratri) উৎসবের তৃতীয় দিনে তাঁর পূজা করা হয়। তিনি হিমালয় কন্যা শিবের স্ত্রী। দেবীর মস্তকে ঘণ্টার আকারবিশিষ্ট একটি অর্ধ্বচন্দ্র শোভা পায়, তাই দেবীর নাম চন্দ্রঘণ্টা। অবশ্য তিনি 'চণ্ডঘণ্টা' বা 'চিত্রঘণ্টা' নামেও পরিচিতা।


দেবী চন্দ্রঘন্টা সিংহবাহিনী (কাশীর মন্দিরে অবশ্য তিনি ব্যাসবাহিনী), দশভুজা, দশপ্রহরণধারিনী। তাঁর গায়ের রং সোনার মতো উজ্জ্বল; পরনে লাল শাড়ি, গায়ে নানাবিধ অলংকার। মহিষাসুর বধের আগে দেবতাদের সম্মিলিত জ্যোতি থেকে যখন দেবী দুর্গার আবির্ভাব ঘটল, তখন দেবতারা তাঁকে সজ্জিত করলেন নিজ নিজ অস্ত্রে। ইন্দ্ৰ সেই সময় তাঁর বাহন ঐরাবত হস্তীর গলা থেকে ঘণ্টাটি খুলে নিয়ে তা থেকে আর একটি ঘণ্টা সৃষ্টি করে দিলেন দেবীকে। যুদ্ধকালে দেবী যখন এই ঘণ্টা বাজালেন, তখন অসুরসৈন্যগণ হয়ে পড়ল নিস্তেজ।                



কাশীর প্রচলিত প্রবাদ অনুযায়ী, দেবী চণ্ডঘণ্টার পূজা করে তাঁকে প্রসন্ন করতে পারলে যমঘণ্টার (যমের বাহন মহিষের গলায় বাঁধা ঘণ্টা) ধ্বনি পূজককে আর ভয় দেখাতে পারে না। দেবীর কৃপায় মহাপাতকীও পাপ থেকে উদ্ধার পান।


কাশীতে লক্ষ্মী চৌতারার চন্দুনাউয়ের গলিতে দেবী চন্দ্রঘণ্টার মন্দির রয়েছে। এই মন্দিরটিও ছোটো। দেবীমূর্তিও এখানে হাতখানেক লম্বা। দেবীর পাশে রাখা থাকে একটি বড়ো ঘণ্টা। আর দেবীকে পিছন থেকে ঘিরে থাকে নবদুর্গার অন্য দেবীদের আটটি ছোটো ছোটো মূর্তি।


শারদীয়া ও বাসন্তী নবরাত্রি উৎসবের তৃতীয় দিনে এই মন্দিরে প্রচুর লোকসমাগম হয়। কথিত আছে, এই দিন সাধকের মন মণিপুর চক্রে প্রবেশ করে এবং সাধকের দিব্যদর্শন লাভ হয়।


চন্দ্রঘণ্টা পূজার ফল অনেক। তাঁর পূজায় সাধকের বাধাবিঘ্ন ও পাপ বিনষ্ট হয় এবং সকল কষ্ট বিনষ্ট হয়। চন্দ্রঘণ্টার উপাসক দেবীর বাহন সিংহের মতো পরাক্রমী হয়।


তাঁর ঘণ্টাধ্বনি সর্বদা চন্দ্রঘণ্টার ভক্তকে সর্ববিধ বিপদ থেকে রক্ষা করে। দেবীর পূজায় পূজকের মন পবিত্র হয়। তাঁর ধ্যান সকল প্রকার কল্যাণ ও সদগতি প্রদান করে।


নবরাত্রির তৃতীয় দিনে দেবী চন্দ্রঘণ্টার আরাধনা করা হয়। দেবী মায়ের অশেষ কৃপা বর্ষিত হোক তার ভক্তদের উপর।


আরও পড়ুন, শক্তি, বিজয় এবং ব্রহ্মজ্ঞানের অধিষ্ঠাত্রী তিনি, নবরাত্রির দ্বিতীয় দিনে দেবী পূজিতা হন ব্রহ্মচারিণী রূপে