কলকাতা: দেবী দুর্গার (Devi Durga) নবদুর্গা রূপের দ্বিতীয় রূপ ব্রহ্মচারিণী। মহামায়া দুর্গার তপস্বিনী রূপই দেবী ব্রহ্মচারিণী (Brahmacharini Devi)। এটি মায়ের দ্বিতীয় রূপ। মা এখানে নিজেই সাধিকা ব্রহ্মচারিণী রূপে। নবরাত্রি উৎসবের দ্বিতীয় দিনে তাঁর পূজা করা হয়।                                                                                               


'ব্রহ্মচারিণী' নামের অর্থ 'ব্রহ্মচর্য ব্রত অবলম্বনকারিণী'। তিনিই উমা। দেবী ব্রহ্মচারিণী দ্বিভুজা; একহাতে তাঁর অক্ষমালা বা জপমালা, অপর হাতে কমণ্ডলু। দেবী জ্যোতির্ময়ী মূর্তিতে আবির্ভূতা তাঁর ভৈরব চন্দ্রমৌলীশ্বর। 


দেবী পার্বতীর হিমালয়ের ব্রহ্মচর্য ব্রতধারিণী বিগ্রহের স্মরণে এই নবদুর্গার দ্বিতীয়ায় নাম হয়েছে ব্রহ্মচারিণী। দেবীপুরাণ মতে, সর্ববেদে বিচরণ করেন বলে দেবী পার্বতীর অপর নাম 'ব্রহ্মচারিণী'।


বলা হয় “বেদস্তত্বং তপব্ৰহ্ম“বেদ, তত্ত্ব আর তপ ব্রহ্মের অর্থ। ব্রহ্মতত্ত্ব চিন্তাময়ী, তপস্বরূপিনী দেবী অম্বিকা পার্বতীর এই তপোময়ী মূর্তিই ব্রহ্মচারিণীর স্বরূপ। ঐ কল্পে শিবকে পতি হিসাবে পাওয়ার জন্য তিনি আহার-নিদ্রা সংযম করে কঠোর তপস্যা করেছিলেন। এমনকি গলিত পত্রও তিনি গ্রহণ করেননি আহার্য হিসাবে।


আরও পড়ুন, মহালয়া-পিতৃপুরুষের মহোৎসব, মাতৃতন্ত্রের উদযাপন


দ্বিতীয়াতে এর ধ্যান পূজা করার নিয়ম। ইনি বৈরাগ্য, সদাচার, সংযম ভক্তকে দান করেন।মায়ের এই রূপ সংযমের। এই রূপে মা ভক্তের সংযমে সন্তুষ্ট হলে তাকে সুখ, সমৃদ্ধির আশীর্বাদ দেন।                             


কাশীর (বারাণসী) দুর্গাঘাটের কাছে রয়েছে দেবী ব্রহ্মচারিণীর মন্দির। এখানে তাঁকে 'ছোটি দুর্গাজি'ও (ছোটো দুর্গা) বলা হয়। মন্দিরটি বেশ ছোটো। দেবীপ্রতিমার উচ্চতাও হাত খানেক।


তবে পূর্বমুখী এই মূর্তির মুখে সোনার মুখোশ লাগানো থাকে। শারদীয়া ও বাসন্তী নবরাত্রি উৎসবে দ্বিতীয় দিনে এই মন্দিরে প্রচুর ভক্তসমাগম হয়। দেবী ব্রহ্মচারিণী ব্রহ্মজ্ঞান প্রদান করেন। তাঁর পূজা করলে শুধু সংযম ও মানসিক শক্তিই বৃদ্ধি পায় না, সাধক অনন্ত পুণ্যফলও লাভ করেন এবং তিনি সর্বদা সিদ্ধি ও বিজয়ও লাভ করেন। নবরাত্রির দ্বিতীয় দিনে সাধক নিজের মনকে স্বাধিষ্ঠান চক্রে স্থিত করে ব্রহ্মচারিণীর পূজা করেন।