কলকাতা: মহানবমীর (Maha Nabami) পুজো শারদীয়া মহাপুজা নামে খ্যাত। কালিকাপুরাণে (Kalika Puran) বলা হয়েছে, নবম্যাং বলিদান্তু কর্ত্তব্যং বৈ যথাবিধি। জপং হোমঞ্চ বিধিবৎ কুর্য্যাত্তত্র বিভূতয়ে॥ (তিথিতত্ত্ব)- অর্থাৎ বিভূতি লাভের জন্য নবমী তিথিতে যথাবিধি বলিদান করা কর্তব্য। তার সঙ্গে জপ ও হোম করা হয়। এক্ষেত্রে জপ বলতে চণ্ডিপাঠ এবং চণ্ডিজপ বোঝায়।                                                                              


এই পূজার ৭টি কল্প বিহিত আছে- এই সকল ৭টা কল্পের মধ্যে সামর্থ্যানুসারে যে কোন কল্পে পূজা করা হয়। ভাদ্রমাসের কৃষ্ণানবমী হতে আশ্বিন মাসের মহানবমী পর্যন্ত যে পূজা করা হয়, তাকে নবম্যাদি কল্প বলে। আশ্বিন মাসের শুক্ল প্রতিপদ হতে মহানবমী পর্যন্ত যে পূজা করা যায়, তাকে প্রতিপদাদি কল্প, আশ্বিন শুক্লাষষ্ঠী হতে মহানবমী পর্যন্ত ষষ্ঠ্যাদি কল্প, সপ্তমী হতে মহানবমী পর্যন্ত সপ্তম্যাদি কল্প, মহাষ্টমী হতে মহানবমী পৰ্যন্ত অষ্টম্যাদি কল্প, কেবল মহাষ্টমীর দিন অষ্টমীকল্প, এবং মহানবমীর দিন নবমীকল্প; এই সপ্তবিধকল্প উল্লেখ করা হয়েছে। এই সপ্তবিধ কল্পদ্বারা এর নিত্যত্ব প্রতিপাদিত হয়েছে। 


ষষ্ঠী থেকে নবমী পর্যন্ত সমস্ত তিথিকেই 'মহা' তিথি বলা হয়ে থাকে। যদিও শাস্ত্রজ্ঞদের মতে, দুর্গাপূজার তিথিগুলিতে মাহাত্ম্য আরোপের জন্য ‘মহা’ যোগ করা হয়, এতে বাচনে মহাতৃপ্তি লাভ করা যায়, কিন্তু তিথি মতে তা শব্দের অপব্যবহার। 


কালিকাপুরাণে দুর্গাপূজাকে মহোৎসব বলে উল্লেখ করা হয়েছে। যেখানে কেবলমাত্র ‘মহানবমী’র কথা উল্লেখ আছে । ওই শ্লোকে বলা আছে, ‘ততেঽনু নবমী যা স্যাৎ সা মহানবমীস্মৃতা। সা তিথিঃ সর্ব্বলোকানাং পূজনীয়া শিবপ্রিয়া।।’ এতে স্পষ্ট হয়, মহাষ্টমী পরবর্তী নবমী হল সর্বলোক-পূজনীয়া শিবপ্রিয়ার ‘মহানবমী’ পূজার তিথি। অতএব মহানবমী বলা সম্পূর্ণ শাস্ত্রসিদ্ধ। 


আরও পড়ুন, তাঁর উপাসনায় সংসারে আসে সুখ-সমৃদ্ধি, নবমীতে পূজিতা হন দেবী সিদ্ধিদাত্রী


দুর্গাপুজোর যেটি বহুল প্রচলিত রূপ- তা হল ষষ্ঠাদি কল্প। এই নিয়ম অনুযায়ী মহানবমীর পুজা অন্তিম পুজা। সংকল্পে 'মহানবমী যাবৎ' এর সংকল্প গ্রহণ করা হয়। চণ্ডিপাঠ, দুর্গানাম জপ মহানবমী অবধি অনুষ্ঠানের সংকল্প নেওয়া হয় বোধনের দিন। সেই মতো মহানবমীতে হোমের মাধ্যমে দেবীর সংকল্পিত মহাপুজার ইতি ঘটে। এরপর দশমী পুজা শুধুমাত্র দেবী বিদায়ের আচরিত সংক্ষিপ্ত পুজা।