কলকাতা: নবদুর্গার নবম তথা শেষ রূপ হল সিদ্ধিদাত্রী (Devi Siddhidatri)। সিংহবাহিনী দেবীর চার হাতে আশীর্বাদী মুদ্রা। অপরূপ লাবণ্যময়ী চতুর্ভুজা, ত্রিনয়নী, প্রাতঃসূর্যের মত রঞ্জিতা যোগমায়া মাহেশ্বরী ইনি সকল কাজে সিদ্ধি প্ৰদান করেন।
মা সিদ্ধিদাত্রী সর্বসিদ্ধিদাত্রী অর্থাৎ তাঁর উপাসনায় সংসারে আসে সুখ এবং সমৃদ্ধি। সবাইকে বরাভয় দেন এই মাতৃকামূর্তি। মায়ের এই রূপ হল শান্ত রূপ। চার হাতের সিদ্ধিদাত্রী মাকে পূজো করলে মায়ের আশীর্বাদে ভক্তদের পুণ্য লাভ হয়।
দেবী ভগবৎ পুরাণে আছে, স্বয়ং মহাদেব দেবী দুর্গাকে সিদ্ধিদাত্রী রূপে পুজো করেছিলেন এবং তার ফলে মহাদেব সকল সিদ্ধি লাভ করেন। সিদ্ধিদাত্রীর আশীর্বাদেই অর্ধনারীশ্বর রূপ লাভ করেন মহাদেব।
সিদ্ধি হল আধ্যাত্মিক ক্ষমতা যা একজন ব্যক্তিকে জীবনের সাধারণ জিনিসের চেয়ে আরও বেশি করে সফল হতে সহায়তা করে। ন'দিন ব্যাপী এই নবরাত্র পূজনের শেষে মহানবমী তিথিতে সিদ্ধি বা সাফল্যলাভ হেতু দেবী সিদ্ধিদাত্রীর আরাধনা করা হয়।
নবরাত্রির নবমীর দিনের পুজো, পুজোর বাকি দিনগুলির চেয়ে পৃথক। কন্যা পূজন বা কঞ্জক পূজা নবমী বা নবরাত্রির মহা নবমীতে করা হয়।
বিভিন্ন শাস্ত্রে বিভিন্ন সিদ্ধির কথা উল্লেখিত আছে। তবে, অষ্টসিদ্ধির মার্কণ্ডেয় পুরাণ অনুসারে, 'সিদ্ধিদাত্রী' অষ্টভুজা, ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণের শ্রীকৃষ্ণ জন্ম খণ্ডে 'সিদ্ধিদাত্রী' অষ্টাদশভুজা। 'সিদ্ধিদাত্রী' চতুর্ভুজা রূপেও দেখা যায়। সেখানে তিনি অর্ধনারীশ্বররূপী। অষ্টসিদ্ধি বা আটটি সিদ্ধি হল- অনিমা, মহিমা, গরিমা, লঘিমা, প্রাপ্তি, প্রকাম্য, ঈশিত্ব ও বশিত্ব। দেবী সিদ্ধিদাত্রী এই সমস্ত সিদ্ধি পরিচালনা করেন এবং যে ব্যক্তি এই দিনে দেবীকে স্মরণ করেন সে এই সমস্ত ক্ষমতা অর্জন করেন। অনেক সাধক আছেন যাঁরা ভগবৎ শক্তির আরাধনা করেন এই সব যোগসিদ্ধির জন্যই। দেবী সন্তুষ্ট হলে সাধক এই সকল সিদ্ধি ও নিধির ধারক হয়ে ওঠেন।
মহা নবমীর দিন একটি বিশেষ হোম করা হয়। এইসময় সমস্ত দেবদেবীদের উপাসনা করা হয়। দেবীকে সন্তুষ্ট করার জন্য কন্যা পূজনও করা হয়। দেবী তাঁর ভক্তদের অষ্ট সিদ্ধি দান করেন এবং তাঁদের সমস্ত মন্দ দিক থেকে রক্ষা করেন।