কলকাতা: হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী অরিদ্রা নক্ষত্রের রাতে দেবাদিদেব মহাদেব ভক্তদের দুঃখ দুর্দশা কষ্ট দূর করার জন্য স্বয়ং জ্যোতির্লিঙ্গ রূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন। পুণ্যভূমি ভারতবর্ষের বারোটি স্থানে শিবশক্তি জ্যোতির্লিঙ্গ রূপে বিখ্যাত। শিবপুরাণের শতরুদ্র সংহিতায় দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের নাম উল্লেখ রয়েছে। এই বারোটি জ্যোতির্লিঙ্গের উৎপত্তি নিয়ে রয়েছে চমকপ্রদ পৌরাণিক কাহিনী, নানান ঘটনা ও কিংবদন্তি। শ্রাবণ মাস মহাদেবের প্রিয় মাস।বলা হয়, তীর্থের দেবতা না ডাকলে তীর্থদর্শন হয় না।
বিশ্বাস করা হয়, জ্যোতির্লিঙ্গের দর্শন করতে না পারলেও তাঁর মাহাত্ম্য শুনলে, নিয়মিত স্তোত্রটি পাঠ করলে দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গে পুজো সম্পন্ন হয়, অশেষ মঙ্গল হয়।
গুজরাট রাজ্যের সৌরাষ্ট্র অঞ্চলের ভেরাবলের প্রভাস ক্ষেত্রে অবস্থিত শ্রী সোমনাথ জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দির জ্যোতির্লিঙ্গের অন্যতম। এমনটাও বলা হয়, সোমনাথ দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের প্রথম জ্যোতির্লিঙ্গ।
সোমনাথ শব্দটির অর্থ “চন্দ্র দেবতার রক্ষাকর্তা”। সোমনাথ মন্দিরটি ‘চিরন্তন পীঠ’ নামে পরিচিত।হিন্দু পুরাণ অনুসারে, দক্ষকে প্রজাপতি অভিশাপ দেন। অভিশাপমুক্ত হতে চন্দ্র প্রভাস তীর্থে শিবের আরাধনা করেন, শিব তাঁর অভিশাপ অংশত নির্মূল করেন। এই কারণে সত্যযুগে চন্দ্র সোমনাথে শিবের একটি স্বর্ণমন্দির নির্মাণ করেন। ত্রেতা যুগে রাবণ রৌপ্য ও কৃষ্ণ চন্দনকাষ্ঠ দ্বারা মন্দিরটি পুনর্নিমাণ করেছিলেন বলে বিশ্বাস। যদিও সোমনাথ মন্দির প্রথম কে তৈরী করেছিল সে বিষয়ে কোনও ঐতিহাসিক তথ্য পাওয়া যায় না।
সোমনাথ মন্দিরে বিগ্রহটি মন্দিরের মাঝখানে নিচের কোনরকম অবলম্বন ছাড়াই উপর থেকে ঝুলে রয়েছে। চন্দ্রগ্রহণের দিন ভক্তরা এই মন্দিরে তীর্থ করতে আসেন। এছাড়া সারা বছরই লক্ষ লক্ষ মানুষ এই মন্দিরে ছুটে আসেন।
এই মন্দিরে শিব সোমেশ্বর দেব নামে পরিচিত। তিনি চাঁদের রক্ষাকর্তা। লোকবিশ্বাস, চন্দ্রদেব শিবের প্রতি শ্রদ্ধায় প্রতি কার্তিক মাসে পূর্ণচন্দ্র রূপে এই মন্দিরে বিরাজ করেন। তাই কার্তিক পূর্ণিমা সোমনাথ মন্দিরে বিশেষভাবে পালিত হয়। এছাড়া শিবরাত্রি, দীপাবলি, নবরাত্রিতেও প্রচুর ভক্তের সমাগম হয়।
আরও পড়ুন, পশুপতিনাথ দর্শনে পূর্ণ হয় মনের বাসনা, এই মন্দির ঘিরে রয়েছে একাধিক রহস্য
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে