কলকাতা: ভারত বৈচিত্র্যে ভরা দেশ। সারা বছর ধরে অসংখ্য উৎসব উদযাপন করা হয় আমাদের দেশে। তারই মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উৎসব এই হোলি বা দোলযাত্রা। সারা দেশে বিভিন্ন নামে এবং বিভিন্ন প্রথায় রঙের উৎসব হয়ে থাকে। সাধারণত উত্তর ভারতে প্রতি বছর হোলি দুটি দিন ধরে উদযাপিত হয়, একটি 'ছোটি হোলি' বা হোলিকা দহন বা বাংলায় যা বুড়িপোড়া/চাঁচরপোড়া নামে পরিচিত। অন্যটি 'বড়ি হোলি' বা 'রং ওয়ালি হোলি' নামেও বিখ্যাত। এই দিন রং খেলা হয়। 


এই বছরে ৭ এবং ৮ মার্চ এই ২ দিন ধরে হোলির উৎসব চলবে। অশুভকে হারিয়ে শুভশক্তির জয়ের আনন্দ উদযাপিত হয় হোলির মাধ্যমে। দৃক পঞ্চাঙ্গ অনুসারে, ছোট হোলি বা হোলিকা দহন বা বুড়িপোড়া ৭ মার্চ-এ পড়েছে। হোলিকা দহনের সময় শুরু হবে  সন্ধে ৬টা ২৪ মিনিটে এবং শেষ হবে ৮টা ৫১ মিনিটে। বড়ি হোলি বা রং ওয়ালি হোলি ৮ মার্চ পালিত হবে। পূর্ণিমা তিথি শুরু হবে ৬ মার্চ বিকেল ৪টা ১৭ মিনিটে এবং শেষ হবে ৭ মার্চ সন্ধ্যা ৬টা ০৯ মিনিটে। 


হোলিকা দহন কখন কোথায়?
দৃক পঞ্চাঙ্গ অনুসারে ভারতের এক এক শহরে এক একসময় হোলিকা দহন বা বুড়িপোড়ার সময় রয়েছে।


দিল্লি- সন্ধে ৬টা ২৪ থেকে রাত ৮টা ৫১
চেন্নাই- সন্ধে ৬টা ১৮ থেকে রাত ৮টা ৪৩
কলকাতা- সন্ধে ৫টা ৪২ থেকে সন্ধে ৬টা ৯
মুম্বই- সন্ধে ৬টা ৪৬ থেকে রাত ৯টা ১১
বেঙ্গালুরু- সন্ধে ৬টা ২৯ থেকে রাত ৮টা ৫৪


কীভাবে হয়?
এটা অনেকটাই বনফায়ারের মতো। বিভিন্ন শুকনো কাঠ জোগাড় করা হয়। তারপর সেগুলি সাদা সুতো দিয়ে বেশ কয়েকপাক বাঁধা হয়। তারপর সেখানে কুমকুম, ফুল ছিটিয়ে তাতে আগুন লাগানো হয়। প্রথা অনুযায়ী ওই আগুনে অনেকসময় ভুট্টা, ছোলাও পোড়ানো হয়।
এর জন্য কী কী লাগে?
এক গ্লাস জল, ফুল, আবির, বেসনের লাড্ডু, গমের দানা, কাঁচা ছোলা, গুড়, ঘুঁটে এবং অল্প চাল


পৌরাণিক কাহিনি:
হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী, অসুররাজ হিরণ্যকশিপু অত্যন্ত অত্যাচারী ছিলেন। তিনি চাইতেন, শুধুমাত্র তাঁকেই যেন সবাই পুজো করে। এদিকে সেই নিয়মের তোয়াক্কা করেনি তাঁর পুত্র প্রহ্লাদ। তিনি ভগবান বিষ্ণুর উপাসক ছিলেন। বিষ্ণুর ভজনা কোনওভাবেই মেনে নিতে পারেননি হিরণ্যকশিপু। একাধিকবার নিজের সন্তান প্রহ্লাদকে মারার চেষ্টা করলেও বিষ্ণুর কৃপায় বেঁচে যেতেন তিনি। বারবার ব্য়র্থ হয়ে এই কাজে নিজের বোন হোলিকার সাহায্য চান অসুর রাজ। হোলিকার একটি বর ছিল যে কোনওসময় আগুন তাঁকে পোড়াতে পারবে না। এর সুযোগ নিয়ে প্রহ্লাদকে নিয়ে আগুনে প্রবেশ করে হোলিকা। কিন্তু বরে কাজ হয় না। আগুনে পুড়ে মারা যান হোলিকা। আর বিষ্ণুর নামগান করতে করতে অক্ষত বেরিয়ে আসেন প্রহ্লাদ। এই দেখে নিজে হাতে সন্তানকে মারতে উদ্যত হলে আবির্ভাব ঘটে ভগবান বিষ্ণুর নরসিংহ রূপের। তাঁর হাতেই নিধন হয় অসুর রাজের। অশুভকে হারিয়ে শুভশক্তির জয়ের এই কাহিনির জন্য এখনও হোলির আগে হোলিকা দহন হয়ে থাকে।      


ডিসক্লেইমার: এখানে প্রদত্ত তথ্য শুধুমাত্র অনুমান এবং তথ্যের উপর ভিত্তি করে। এখানে উল্লেখ করা গুরুত্বপূর্ণ যে এবিপি লাইভ কোনও ধরনের বিশ্বাস, তথ্য সমর্থন করে না। কোন তথ্য বা অনুমান প্রয়োগ করার আগে, সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করুন।


আরও পড়ুন:  সোম না মঙ্গল এ বছর হোলিকা দহন কখন ? হোলির শুভক্ষণে কী পরিবর্তন আনবেন বাস্তুতে ?