রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি : ২৫০ বছরে পা দিল  দেবী চৌধুরানি শ্মশান কালী মন্দিরের পুজো । জলপাইগুড়ির ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে গোশালা মোড়ের দেবী চৌধুরানির শ্মশান কালীর মন্দির। জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) শহর সংলগ্ন এই মন্দিরের প্রথম পুরোহিত ছিলেন ভবানী পাঠক । ভবানী পাঠকের পরে এই মন্দিরের পুরোহিতের তালিকায় নাম উল্লেখ আছে- নয়ন কাপালিকের। শোনা যায়, ১৮৯০ সালে নরবলি দেওয়ার অভিযোগে নয়ন কাপালিকের প্রাণদণ্ড হয়। তার পর থেকেই এই মন্দিরে বন্ধ হয়ে যায় নরবলি প্রথা।


তবে, কালীপুজোর রাতে আজও পাঁঠা বলি হয়ে আসছে দেবী চৌধুরানি কালী মন্দিরে। ঘন জঙ্গল প্রাচীন বট পাকুড়ে ঘেরা মন্দির। নিস্তব্ধতায় ঘেরা চারপাশ দিনের বেলায় একা ঘুরলে ভয়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে শরীর। কথিত আছে, এই মন্দিরে শ্মশান কালী মায়ের পুজো দিয়ে অভিযানে অর্থাৎ ডাকাতির উদ্দেশে বেরোতেন দেবী চৌধুরানি, সঙ্গী ভবানী পাঠক। নিত্যপুজোর পাশাপাশি কালীপুজোর রাতে বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়। সেখানে মায়ের ভোগে থাকে ডাল, ভাত, তরকারির, পাঁচ রকমের ভাজার পাশাপাশি দেবী চৌধুরানির প্রিয় শোল ও বোয়াল মাছের ভোগ দেওয়া হয় শ্মশান কালীকে।


সতীপীঠ-


সতীর বাঁ পায়ের ছাপ রয়েছে পাথরে। বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গলে মধ্যে রয়েছে সতীর ৫১ পীঠের অন্যতম পীঠ। জলপাইগুড়ি জেলার বোদাগঞ্জের এই মন্দির ভ্রমরীদেবী মন্দির নামে পরিচিত। '৯০-এর দশক থেকে প্রকাশ্যে আসে এই মন্দিরটি। এটি জলপাইগুড়ি জেলার আরও একটি প্রসিদ্ধ পুজো।


কথিত আছে, রাজারা জঙ্গলে শিকারে যাওয়ার সময় এই মন্দিরেই পুজো দিয়ে যেতেন। এই মন্দিরে নিত্যদিন পুজোর আয়োজন হয়। দর্শনার্থীদের ভিড়ে গমগম করে। দেবীর চরণে প্রতি শনি, রবি ও মঙ্গলবার ভোগ দেওয়া হয়। অমাবস্যা ও পূর্ণিমায় ভোগ দেওয়া হয়। প্রতিবার কালীপুজোয় ধুমধাম করে পুজোর আয়োজন করা হয় এখানে।


তবে, হাতির আতঙ্কে এবার এই পুজোয় কিছুটা কাটছাঁট করা হয়েছে। মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, গত ৫ তারিখেও মন্দির লাগোয়া বৈকুন্ঠপুর জঙ্গল থেকে একদল হাতি মন্দির চত্বরে ঢুকে পড়েছিল। সেই কারণেই এবার কালীপুজো চলাকালীন প্রচুর মানুষের ভিড় হবে। যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে সেই কারণে রাত ১২টার মধ্যে পুজো শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি বন দফতরকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।