সন্দীপ সরকার, বীরভূম: তারাপীঠে (Tarapith Temple) শক্তির আরাধনা। রীতি মেনে পুজো। আলোর মালায় সেজেছে গোটা মন্দির। পুণ্যার্থীদের ভিড়ে সরগরম মন্দির চত্বর। এদিন ভোর সাড়ে ৫টায় খুলেছে মন্দিরের দরজা। সকালে তেল, অগুরু, গোলাপজল, ডাবের জল, কারণবারি দিয়ে স্নানের পর দেবীর শিলাব্রহ্মময়ী মূর্তিকে রাজবেশে সাজিয়ে তোলা হয়। চুনরি পরিয়ে সাজানো হয় মাকে। এরপর পঞ্চ উপাচারে মঙ্গলারতি এবং নিত্যপুজো।


আজ কালীপুজো: আজ রাজ্যজুড়ে শক্তির আরাধনা। কলকাতা থেকে কামাখ্যা। বীরভূম থেকে বারাসাত। কালীপুজো উপলক্ষ্যে দিকে দিকে সাড়ম্বর আয়োজন। আলোর উৎসবে মাতোয়ারা তিলোত্তমা কলকাতাও। দুর্গাপুজোর মতোই কালীপুজোতেও থিমের হিড়িক। কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথির গভীর রাতে যোগিনী পরিবৃতা হয়ে আবির্ভূতা হন মা কালী৷ জগতে কল্যাণ এবং শান্তি স্থাপনের জন্য ভক্তরা দেবীর আরাধনা করেন৷ তিনি অসুখ বিনাশিনী৷ মহা শক্তিধর শুম্ভ-নিশুম্ভের হাত থেকে ত্রিলোককে রক্ষা করতেই দেবীর সৃষ্টি৷ নরমুণ্ডই দেবীর অলঙ্কার৷ যুদ্ধে পরাজিত সেনাপতিদের মুণ্ডের মালা মা কালীর কণ্ঠের শোভা৷ বলা হয়, পঞ্চাশটি মুণ্ডের এই মালা আসলে জ্ঞানের প্রতীক৷ যে সেনাপতি তাঁর চুল ধরে অপমান করেছিল, তাঁর মুণ্ড দেবী হাতে ধরে থাকেন৷ মৃত সেনাপতিদের হাতের পাতা দেবী কোমরে ধারণ করেন৷ শাস্ত্রমতে এই করতলও জ্ঞানের প্রতীক৷ ভুল করে স্বামী মহাদেবের গায়ে পা তুলে ফেলায় লজ্জিতা রণে উন্মত্ত দেবী৷


রীতি মেনে পুজোর আয়োজন তারাপীঠে: মাকে দেওয়া হয় শীতল ভোগ। নিবেদন করা হয় ছোলা, সন্দেশ, মিছরির শরবত।কালীপুজোর দিন তারা মাকে পঞ্চব্যঞ্জন সহযোগে ভোগ নিবেদন করা হয়। ভোগ হিসেবে থাকে পোলাও, খিচুড়ি, সাদা ভাত, পাঁচ রকম ভাজা, পাঁচ মিশালি তরকারি, মাছ, পাঁঠার মাংস, চাটনি, পায়েস এবং মিষ্টি। এখানকার অন্নভোগের বিশেষত্ব পোড়া শোলমাছ মাখা। দীপান্বিতা অমাবস্যা উপলক্ষ্যে নিয়ম-নিষ্ঠা মেনে হয় বিশেষ সন্ধ্যারতি। আয়োজন করা হয় বিশেষ নিশি পুজোর। পুজো শেষে নিবেদন করা হয় লুচি, পায়েস, সুজি দিয়ে শীতল ভোগ।


তারাপীঠে তারা মায়ের আরাধনা হয় তন্ত্রমতে। কথিত আছে, একবার দেবীর মাতৃরূপ দর্শন চান বশিষ্ঠ মুনি। দেবীও নিরাশ করেননি। মাতৃরূপে দর্শন দেন দেবী। এখানেই তপস্যা করে সিদ্ধিলাভ করেন তারা মায়ের ভক্ত বামাক্ষ্যাপা। ফলে তারাপীঠ সিদ্ধপীঠ হিসেবেও পরিচিত। 


আরও পড়ুন: Kedarnath: দীপাবলিতে প্রবল তুষারপাত কেদারনাথে, কবে থেকে বন্ধ হচ্ছে মন্দিরের দরজা?