সুদীপ চক্রবর্তী, উত্তর দিনাজপুর: উত্তর দিনাজপুরের (north dinajpur) রায়গঞ্জ। সেখানেই রয়েছে করুণাময়ী আদি কালীবাড়ি। বাংলার নানা কোণে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা একাধিক কালীবাড়ি রয়েছে। তার প্রায় সবকটির সঙ্গেই কোনও না কোনও লোককথা বা জনশ্রুতি জড়িয়ে রয়েছে। ঠিক একইরকম কাহিনী প্রচলিত রয়েছে করুণাময়ী আদি কালীবাড়ি নিয়েও। এই কালীবাড়ির পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে নানা কাহিনি, লোকশ্রুতি। এখানে পুজো করেন সাধক বামাখ্যাপার বংশধরেরা। শুধু বাংলার নানা প্রান্ত নয়, এখানে ভিনরাজ্য থেকেও পুজো দিতে আসেন অনেকে। অসম, পঞ্জাব, বিহার, উত্তরপ্রদেশ সহ বিভিন্ন রাজ্য ও বিদেশ থেকে ভক্তরা পুজো দিতে আসেন দীপাবলির রাতে। 


জেলায় জেলায় ছড়িয়ে থাকা কালী মন্দির ও পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে আছে নানা ইতিহাস ও জনশ্রুতি। উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের কালীপুজোর সঙ্গেও জড়িয়ে আছে নানা কাহিনি। রায়গঞ্জের (Raiganj) বিখ্যাত ‘বন্দর আদি করুণাময়ী কালীবাড়ি’তে প্রতিবছর ধূমধাম করে শক্তির আরাধনা করেন সাধক বামাখ্যাপার বংশধরেরা। কথিত আছে, ৫০০ বছর আগে পঞ্জাব প্রদেশ থেকে এক সাধক পায়ে হেঁটে এসে উপস্থিত হন কুলিক নদীর বন্দর ঘাটে। ঘাটের কাছেই একটি গাছের নীচে বসে তিনি সিদ্ধিলাভ করেন। সেই থেকে এখানে শুরু হয় কালীর আরাধনা। প্রথমে বেদীতেই পুজোর প্রচলন হয়েছিল। ১২১৬ বঙ্গাব্দে দিনাজপুরের রাজা এখানে মন্দির তৈরি করে দেন। এরপর সাধক বামাখ্যাপার বংশধর জানকীনাথ চট্টোপাধ্যায় বারাণসী থেকে কালীর মূর্তি এনে পুজো শুরু করেন।                               


সাধক বামাখ্যাপার বংশধর চিত্রা চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'পঞ্চবটির আসনে কয়েক পুরুষ ধরে পুজো চলে আসছে। বড় করে পুজো হয়। পাড়া-পড়শিরা সকলেই আসেন।' সাধক বামাখ্যাপার বংশধররা পুজো করে আসছেন সেই একই মূর্তি।  স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এই মন্দিরে কালীপুজোর (Kali Puja 2023) রাতে আজও মায়ের পায়ের নূপুরের ধ্বনি শোনা যায়। পুজো কমিটির সদস্য রূপেশ সাহা বলেন,  'কষ্টিপাথরের দেবীমূর্তিতে পূজিতা হন মা। পুজোর দিনগুলি ভিড় উপচে পড়ে।'       


তন্ত্রমতে এখানে পূজিতা হন দেবী। মাছ ভোগ দেওয়ার পাশাপাশি ছাগ বলির প্রচলন রয়েছে বন্দর আদি করুণাময়ী কালীবাড়িতে। 


আরও পড়ুন: পুপুলকে মায়ের মতো আগলে রাখবে কে? প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আসছে নয়া ধারাবাহিক 'আলোর কোলে'