ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, লাভপুর: প্রথা মেনে আজও প্রখ্যাত সাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Great Writer Tarashankar Banerjee) পৈতৃক ভিটে বীরভূম (Birbhum) জেলার লাভপুরের (Labpur) বাড়িতে পূজিত হন মা তারা ( Maa Tara)। ৫১ সতী পীঠের অন্যতম লাভপুরের ফুল্লরা মায়ের মন্দিরে প্রথমে পুজো হয় তারপরে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের পৈতৃক বাড়িতে তারা মায়ের পুজো হয়। এখানে তারা মা দশ মহাবিদ্যার এক বিদ্যা রূপে পূজিত হন। তারাশঙ্করের পরিবারের সদস্য ছাড়াও আশেপাশের গ্রামের মানুষ এই পুজোতে যোগ দেন। এবার এই পুজো ১২৮ বছরে পড়ল।
তারাশঙ্করের পরিবার সূত্রে জানা যায়, লাভপুরের জমিদার হরিদাস বন্দ্যোপাধ্যয় দীর্ঘদিন নিঃসন্তান ছিলেন। পরে ফুল্লরা মন্দিরে সাধনা করতে আসা তান্ত্রিক রামজী গোঁসাই হরিদাস বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর স্ত্রী প্রভাবতী দেবীকে আশ্বিন মাসে দুর্গা পুজোর পর শুক্লা চর্তুদশী রাতে দশ মহাবিদ্যার এক বিদ্যা তারা মায়ের পুজো করতে বলেন। আর তার পরের বছরেই জন্ম হয় তারাশঙ্করের। তার জন্মের পর তারা মায়ের মন্দির প্রতিষ্ঠা করা হয় লাভপুর গ্রামের দক্ষিণ প্রান্তে একটি মাঠে। তারপর থেকে সেখানেই পুজো হয়ে আসছে। বর্তমানে মাঠটি তারামা ডাঙা নামে পরিচিত।
এখানে দেবীর গায়ের রঙ নীল, সারা দেহে জড়ানো থাকে সাপ। পড়নে বাঘ ছাল,মাথায় গেরুয়া জটা,গলায় মুণ্ডমালা এবং হাতে কৃপাণ। সন্ধ্যায় পুজো শুরু হলেও চলে মধ্য রাত্রি পর্যন্ত। পুজোর সঙ্গে চলে্ যজ্ঞ। তারাশঙ্কর যত দিনে জীবিত ছিলেন তত দিন তিনি পুজো করিয়েছেন। তাঁর লেখা গণদেবতা, ধাত্রীদেবতা ও কবি সহ বিভিন্ন উপন্যাসে তারা মায়ের প্রসঙ্গ এসেছে বিভিন্ন ভাবে।
গত ৩৫ বছর ধরে তারাশঙ্করের বাড়িতে তারা মায়ের পুজো করে আসছেন পুরোহিত সুভাষ ভট্টাচার্য। এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, "আমরা পূর্বপুরুষ ধরে এই পুজো করে আসছি। এখানে তারা মা দশ মহাবিদ্যার এক বিদ্যা রূপে পূজিত হন। এই পুজো দেখতে আশপাশের গ্রামের মানুষ ভিড় জমান বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়িতে। সবাই নিজেদের বাড়ির পুজো মনে করেই মেতে ওঠেন এই পুজোর আনন্দে। আমরাও বংশ পরম্পরায় পুজো করে আসছি তারা মায়ের। এখানকার সবাই মাকে খুবই জাগ্রত বলে মানেন।"
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।