কলকাতা : আর বাকি মাত্র কয়েকটা দিন। নীলাচলে সুভদ্রা, বলরামকে নিয়ে মাসির বাড়ি যাওয়ার জন্য তৈরি জগন্নাথ । সেবায়েতরাও তৈরি। রথ মানেই উৎসব মুখর নীলাচল। দেশ-বিদেশ থেকে আসা তীর্থযাত্রী, পর্যটকদের ভিড়। দুনিয়ার নজর কাড়ে পুরীর রথের বিপুল ভক্ত সমাগম । চিরাচরিত রীতি মেনে, বিশেষ ধরনের কাঠ দিয়ে তৈরি হয় তিনটি রথ- জগন্নাথদেবের রথের নাম নন্দীঘোষ, বলভদ্রের তালধ্বজ এবং সুভদ্রার রথ দর্পদলন৷
জগন্নাথের রথের বৈশিষ্টগুলি কী কী :
রথে চড়ে মাসির বাড়ি যাত্রা করেন জগন্নাথদেব৷ সঙ্গে থাকেন বলরাম, সুভদ্রা৷। রথের রশিতে টান দেন লক্ষ লক্ষ ভক্ত। জগন্নাথদেবের রথের নাম ‘নন্দীঘোষ’। রথের সারথির নাম দারুক। রথে থাকে ১৬ টি চাকা। চাকার পরিধি ৬ ফুট ৬ ইঞ্চি। কথিত আছে, এই রথের নাম দেন স্বয়ং ইন্দ্র। ছোট-বড় আকারের মোট ৮৩২টি কাঠের টুকরো দিয়ে এই রথ নির্মাণ করা হয়।
জগন্নাথ দেবের রথের উচ্চতা সাড়ে তেরো মিটার অর্থাত্ ৪৫ ফুট। প্রতিটি চাকারই একটি বিশেষ তাত্পর্য রয়েছে। কথিত আছে, জগন্নাথদেব প্রকট হওয়ার আগে ১৬টি উপাদান দিয়ে পৃথিবী নির্মাণ করেন। চন্দ্রের যে ১৬ কলার কথা আমরা শুনে থাকি, সেটা আসলে চাঁদ ১৬টি কলার পরিক্রমণের মধ্যে দিয়ে একটি কালচক্র সম্পূর্ণ করে। জগন্নাথ দেবের রথের চাকাও সেই ১৬টি কলারই প্রতীক। রথে জগন্নাথদেবের পার্শ্বদেবতা হিসেবে নয়জন দেবতা থাকেন। তাঁরা হলেন, গোপীকৃষ্ণ, গোবর্ধন, রাম, নারায়ণ, ত্রিবিক্রম, বরাহ, রুদ্র, নৃসিংহ এবং হনুমান।
জগন্নাথের রথের ধ্বজা
জগন্নাথের রথের চূড়ায় যে ধ্বজা লাগানো থাকে, তার নাম ত্রৈলক্য মোহিনী। রথের প্রতিটি চাকা হলুদ রঙের হয়। রথের কাঠামো লাল-হলুদ কাপড় দিয়ে ঢাকা থাকে। চারটি ঘোড়ার নাম শঙ্খ, বলাতক, শ্বেত ও হরিদাক্ষ। রথের সারথির নাম দারুক।
সকালে রীতি মেনে করা হয় মঙ্গলারতি। এরপর একে একে হয় মইলম, অবসর। গর্ভগৃহ থেকে ২২ ধাপে জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রাকে নামিয়ে আনা হয়। ২২ ধাপের তৃতীয় ধাপে শিবের দর্শন নেন জগন্নাথ। এরপর দুলিয়ে দুলিয়ে বাজনা বাজিয়ে বিগ্রকে তোলা হয় রথে, যা পোহান্ডি নামে পরিচিত। প্রথা মেনে সোনার ঝাঁটা দিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করে দেন পুরীর রাজা ।