ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথিতে শ্রী রাধার জন্ম। এদিনই রাধাষ্টমী হিসাবে পালন করা হয়। এই ব্রতপালনে দুঃখ দুর্দশা দূর হয়। পরম শান্তি লাভ হয়। গৃহে অভাব থাকে না। সব অমঙ্গল দূর হয়, বলে বিশ্বাস। শ্রী কৃষ্ণ জন্মাষ্টমীর ১৫ দিন পরে রাধা অষ্টমীর উৎসব পালিত হয়। হিসেব অনুসারে ২৩ সেপ্টেম্বর, শনিবার রাধারানীর জন্মতিথি হিসেবে পালিত হয়। বিশ্বাস করা হয়, রাধার জন্ম ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথিতে। যাঁরা কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী পালন করেন, তাঁদের ব্রত সার্থক হয় রাধাষ্টমী পালন করলে। এদিন অনেকেই উপবাস করেন। এদিন রাধা কৃষ্ণ উভয়েরই পুজো করা হয়।
রাধাষ্টমীর উপবাস ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শনিবার পড়বে। এই বিশেষ দিনে রাধা-অষ্টমী পালনের পিছনেও আছে এক কাহিনি। রাধারাণীর জন্ম হয়েছিল অনুরাধা নক্ষত্রে। বিশ্বাস,বর্তমানে ভারতের উত্তরপ্রদেশে বারসানায় দুপুর ১২টায় রাধার জন্ম। সেদিন ছিল বুধবার । রাজা বৃষভানু এবং তাঁর স্ত্রী কীর্তিদা পুকুরে সোনার পদ্মের উপর দেবী রাধাকে পেয়েছিলেন। লোককাহিনি অনুসারে, যতক্ষণ না স্বয়ং ভগবান কৃষ্ণ তার সামনে আবির্ভূত হন ততক্ষণ পর্যন্ত রাধা পৃথিবী দেখার জন্য তার চোখ খোলেননি।
রাধার জন্মের পিছনে অনেক কাহিনি। কেউ এউ বলেন, রাধা শ্রীকৃষ্ণের সাথে গোলোকে থাকতেন। একবার দেবী রাধা গোলোক থেকে বেরিয়েছিলেন, তখন ভগবান শ্রী কৃষ্ণ বীরজা নামে তাঁর বন্ধুর সঙ্গে ভ্রমণ করছিলেন। রাধা এসব দেখে রেগে গিয়ে বীরজাকে অপমান করেন। আঘাতপ্রাপ্ত বীরজা নদীর মতো বয়ে যেতে লাগল। রাধার আচরণে শ্রীকৃষ্ণের বন্ধু সুদামা ক্ষুব্ধ হন । সুদামার এমন আচরণ দেখে রাধা ক্রুদ্ধ হয়ে সুদামাকে অসুর রূপে জন্ম নেওয়ার অভিশাপ দেন। এরপর সুদামাও রাধাকে মানব রূপে জন্ম নেওয়ার অভিশাপ দেন। রাধার অভিশাপের কারণে সুদামা শঙ্খচূড় নামে এক রাক্ষস হয়ে ওঠেন, পরে তিনি শিবের হাতে নিহত হন। সুদামার দেওয়া অভিশাপের কারণে, রাধা একজন মানুষ হিসাবে পৃথিবীতে এসেছিলেন এবং ভগবান শ্রী কৃষ্ণের থেকে বিচ্ছেদ যন্ত্রণা তাঁকে ভোগ করতে হয়েছিল।
কিছু পৌরাণিক কাহিনিতে বলা হয়েছে যে ভগবান বিষ্ণু যেমন কৃষ্ণ রূপে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, তেমনি তাঁর স্ত্রী লক্ষ্মী রাধা রূপে পৃথিবীতে এসেছিলেন। ব্রহ্ম বৈবর্ত পুরাণ অনুসারে, রাধা ছিলেন শ্রী কৃষ্ণের বন্ধু এবং আয়ান নামে এক ব্যক্তির সাথে তার বিবাহ সম্পন্ন হয়েছিল। তার রাধা কৃষ্ণের লীলা ও বিচ্ছেদের গল্প কারও অজানা নয়।
মানুষের বিশ্বাস, এই ব্রতপালনে দুঃখ দুর্দশা দূর হয়। পরম শান্তি লাভ হয়। গৃহে অভাব থাকে না। সব অমঙ্গল দূর হয়, এমনকী পতিতাও পাপমুক্ত হয়ে বৈকুণ্ঠলাভ করেন।
আরও পড়ুন :