রটন্তী কালী পুজো । মাঘ কৃষ্ণপক্ষ চতুর্দশীতে পূজিতা হন মা কালী। সাধারণত অমাবস্যা তিথিতেই মা পূজিতা হন বিশেষ ভাবে। তবে এই রটন্তী কালী পুজো একেবারেই ব্যতিক্রম। দীপাবলিতে মা পূজিতা হন অমাবস্যায়,  ফলহারিণী কালীপুজোও অমাবস্যায়। তবে রটন্তী কালীপুজোয় মায়ের আরাধনা হয় কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে। 


পঞ্জিকা অনুসারে এবার রটন্তী পুজো আগামী ২৮ জানুয়ারি। চতুর্দশী তিথি আগের দিন ২৭ জানুয়ারি রাত ৭.৪৪ মিনিট থেকে শুরু হবে । তিথি সমাপন  ২৮ জানুয়ারি ৭ টা ৩১ মিনিটে। কিন্তু কেমন এমন নাম ? রটন্তী শব্দের উৎপত্তি রটনা থেকে । মনে করা হয়, এই বিশেষ তিথিতে দেবী কালীর মহিমা চারিদিকে রটে যায়। তার থেকেই রটন্তী কালীপুজো।  


শ্রী রামকৃষ্ণদেবই এই পুজোর মাহাত্ম্য বর্ণনা করেছিলেন। রটন্তী কালীপুজোর ভোরে তিনি একবার দক্ষিণেশ্বরের গঙ্গায় এক অদ্ভুতদৃশ্য দেখেছিলেন। তিনি প্রত্যক্ষ করেছিলেন , দক্ষিণেশ্বরের গঙ্গায় স্বর্গ থেকে দেবতারা নেমে এসে স্নান করছেন। সেই থেকেই রটন্তী কালীপুজোর প্রচলন। এদিন ভক্তরা ভবতারিণীর মন্দিরে এই বিশ্বাস থেকেই ছুটে যান। মনে করেন, ঠাকুর যেমনটি দেখেছিলেন,  এই দিনে দক্ষিণেশ্বরের ঘাটে আসেন স্বয়ং দেবদেবীরা। তাই এদিন  পুণ্যস্নানের বিশেষ মাহাত্ম্য আছে।      


কথিত আছে, মাঘ চতুর্দশীতে অন্ধকারে শ্রীকৃষ্ণের বাঁশি শুনে শ্রীরাধা বিচলিত হয়ে ওঠেন।  সব ভুলে তিনি ত্যাগ করে তিনি ছুটে যান শ্রীকৃষ্ণের কাছে। শ্রীরাধার শাশুড়ি এবং ননদ ছিলেন সুযোগের অপেক্ষায়। স্বামী আয়ান ঘোষের কাছে শ্রিরাধাকে ছোট করতে রাধার পিছু নেন জটিলা- কুটিলা।  তাঁরা কুঞ্জবনে শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে শ্রীরাধাকে কাছাকাছি আসতে দেখেন। আয়ান ঘোষকে ডাকলেন তাঁরা। শক্তির উপাসক আয়ান ঘোষ গেলেন কুঞ্জবনে । কী অদ্ভুত মায়াবলে, আয়ান ঘোষ দেখলেন, আরাধ্যা মা কালী গাছের তলায় বসে রয়েছেন আর নিজের কোলে তাঁর পা টি রেখে সেবা করছেন শ্রীরাধিকা। তখন রাধার সম্মান আরও বেড়ে গেল তাঁর কাছে। তিনি এ সংবাদ রটিয়ে দিলেন সব জায়গায়। সেখান থেকেই রটন্তী কালীপুজোর প্রচলন বলে অনেকের বিশ্বাস। তাই বৈষ্ণবদের কাছেও এটি একটি বিশেষ তিথি।      


মনে করা হয়, রটন্তী কালীপুজো করলে  দাম্পত্য সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। অযথা কলহ জীবনকে দুর্বিসহ করে তোলে না।    


ডিসক্লেমার : ধর্মীয় বিশ্বাস নিজস্ব। এ ব্যাপারে কোনও মতামত এবিপি লাইভের নেই। এবিপি লাইভ ধর্ম সম্পর্কিত কোনো সম্পাদকীয় / সম্পাদক-নিয়ন্ত্রিত তথ্য, পরামর্শ প্রদান করে না। প্রদত্ত পরামর্শ ও তথ্য প্রয়োগের আগে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।