পুরী : দেখতে দেখতে ৮ দিন পার। বুধবার মাসির বাড়ির আদর-আহ্লাদের মায়া কাটিয়ে নিজ গৃহে ফিরবেন জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রা। উল্টোরথ। গুণ্ডিচা বাড়ি থেকে পুরীর মন্দিরের উদ্দেশে রওনা দেয় রথ। এটি বহুদা যাত্রা বলেও পরিচিত। বহুদা যাত্রা সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে পুরীজুড়ে নিরাপত্তার বলয় আঁটোসাঁটো। 



' রথযাত্রা, লোকারণ্য, মহা ধুমধাম, ভক্তেরা লুটায়ে পথে করিছে প্রণাম...' - উল্টোরথেও জমজমাট পুরী ৷  রথযাত্রা উপলক্ষে পুরীতে এবারও লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড়। দেশের নানা প্রান্তের মানুষের সঙ্গে ভিড় জমিয়েছেন বহু বিদেশি পযর্টক ৷  সমুদ্র-শহর আক্ষরিক অর্থেই জনসমুদ্র।            


পুরীর মন্দির থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরেই  গুণ্ডিচা মন্দির। কথিত আছে, এটিই জগন্নাথ দেবের মাসির বাড়ি।  পুরীর মন্দির থেকে বেরিয়ে রথযাত্রা থামে এই গুণ্ডিচা মন্দিরেই। আবার টানা সাতদিন এই গুণ্ডিচা মন্দিরেই বোন সুভদ্রা ও ভাই বলভদ্রকে নিয়ে থাকেন প্রভু জগন্নাথ। তারপর আবার তাঁরা ফিরে আসেন পুরীর শ্রীমন্দিরে। রথের রশিতে টান দিয়ে শ্রী মন্দিরে ফিরিয়ে আনার প্রথাই উল্টো রথযাত্রা।


অগণিত মানুষের বিশ্বাস, রথের রশিতে টান দিলে নাকি সারা জন্মের পাপ কেটে যায় । প্রতিবছরের মতো এই বছরও শ্রীধামে রথযাত্রা ঘিরে ভক্তসমাগম ছিল চোখে পড়ার মতো। আর উল্টো রথযাত্রা দেখতেও লক্ষ লক্ষ  মানুষের ভিড়।  দেবতাদের রথযাত্রা দেখতে মানুষের উন্মাদনা থাকে চোখে পড়ার মতো।  

 আরও পড়ুন :


সোনার কুঠার দিয়ে কাটা হয় পুরীর জগন্নাথ দেবের রথ তৈরির কাঠ, কারিগরদের মানতে হয় এই কঠিন নিয়ম


 


রথ - পরিচয়
রথের দিন প্রথমে মন্দির থেকে বের হন সুদর্শন। গর্ভগৃহ থেকে ২২ ধাপে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে নামিয়ে আনা হবে। ২২ ধাপের তৃতীয় ধাপে শিবের দর্শন নেন জগন্নাথ। এরপর দুলিয়ে দুলিয়ে বাজনা বাজিয়ে বিগ্রহকে তোলা হয় রথে, যা পহন্ডি নামে পরিচিত।

জগন্নাথদেবের রথের নাম নন্দীঘোষ, বলরামের তালধ্বজ আর সুভদ্রার রথের নাম দর্পদলন বা পদ্মধ্বজ। এরপর পুরীর রাজা সোনার ঝাঁটা দিয়ে রাস্তা ঝাঁট দেন। এই রীতিকে বলা হয় ছেড়াপহরা। দুপুরে খিচুড়ি ভোগ খেয়ে মাসির বাড়ি গুণ্ডিচা বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেবেন জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা। পুরীর রথ মানে আবেগ। লক্ষ লক্ষ ভক্তের কাছে এই দিনটা শুধু একটা পার্বণ নয়। তার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বহু ইতিহাস।