নয়া দিল্লি: হিন্দুপুরাণমতে আজও বিশ্বাস করা হয়, নবরাত্রির সময়ে দেশের ৫১টি সতীপীঠে দেবীর বিশেষ আবির্ভাব ঘটে। সেই বিশ্বাসেই এই সময়ে দূরদূরান্ত থেকে আসেন তীর্থযাত্রীরা। এই মন্দিরগুলির মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হল জ্বালামুখী মন্দির। হিন্দু ধর্মশাস্ত্র মতে, অগ্নি হচ্ছে স্বয়ং ঈশ্বর বা শিব। আর তাঁর জিহ্বা বা জিভ হলেন প্রকৃতি বা শক্তি। মনে করা হয়, এখানেই পতিত হয়েছিল সতীর জিহ্বা। অগ্নিময় জিহ্বারূপেই ভক্তদের দর্শন দেন দেবী এমনটাই বিশ্বাস।
জ্বলাজি মন্দিরটি জ্বালামুখী বা জ্বালা দেবী নামেও পরিচিত। হিমাচল প্রদেশের কাংড়া উপত্যকার দক্ষিণে ৩০ কিলোমিটার দূরে জ্বলাজি মন্দিরটি রয়েছে। কাংড়ার উপত্যকায়, জ্বলা দেবী মন্দিরের নয়টি চিরন্তন শিখা জ্বলে। যেই শিখার উত্তাপ নিতে সারা ভারত থেকে হিন্দু তীর্থযাত্রীরা আসেন। মন্দিরের নয়টি শাশ্বত শিখায় দেবী থাকেন, এমনটাই বিশ্বাস। তিনি জ্বলন্ত দেবী নামেও পরিচিত। এটি এমনই এক অপূর্ব মন্দির যাতে ঈশ্বরের কোনো মূর্তি নেই। এটা বিশ্বাস করা হয় যে মন্দিরের পবিত্র শিখায় দেবী বাস করেন, যা অলৌকিকভাবে বাইরে থেকে জ্বালানি ছাড়াই দিনরাত জ্বলে। এখানে দেবী অম্বিকা কে অনেকেই সিদ্ধিদা বলেও চিনে থাকবেন। জালামুখী সতী পীঠে সর্বদাই সাতটি জ্বলন্ত অগ্নিশিখা দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে। যে ৭ টি জলন্ত অগ্নি শিখাকে দেবী অম্বিকা রূপে পূজা করে থাকেন ভক্তরা।
বলা হয়, এই শিখা যিনি দর্শন করেন, দেবী তাঁর ইচ্ছেপূরণ করে। ঘুচে যায় অন্তরের সকল পাপ। জীবনে নেমে আসে শান্তি। মনে করা হয়, এই অতিপ্রাকৃত আলো মায়ের আসল রূপ যা জলেও নেভে না। এই শিখা অনাদিকাল থেকে অবিরাম জ্বলছে। এই মন্দিরে মায়ের জন্য দিনে একটি বা দুটি নয় পাঁচটি আরতি হয়। মায়ের এই অলৌকিক মন্দির নিয়ে অনেক গল্প আছে। যা এর প্রাচীন ও ঐতিহাসিক হওয়ার সাক্ষীবহন করে।
আরও পড়ুন, অর্থাভাব থেকেই যাচ্ছে জীবনে? মঙ্গলবারে এই পদ্ধতিতে হনুমানজিকে স্মরণ করলে মিটতে পারে সমস্যা
বলা হয়, মায়ের জিভ এই আগ্নেয়গিরিতে পড়েছিল। এখানে তেল-ঘি ছাড়াই প্রদীপ জ্বলতে থাকে। মন্দিরের সাতটি পবিত্র প্রদীপ হাজার হাজার বছর ধরে ভক্তদের বিশ্বাসের কেন্দ্র হয়ে আছে।
এই মন্দিরের আরেকটি রহস্য রয়েছে। বলা হয়, দেবী এখানে নীলাবতীর রূপে নিজেকে প্রকাশ করেছিলেন। তাই তিনি জলের সংস্পর্শে এসেও নেভেন না। এই মন্দিরটি ৫১টি শক্তিপীঠের মধ্যে একটি। হিন্দু ভক্তরা বিশ্বাস করেন যে জ্বালা দেবী মন্দিরে তীর্থযাত্রা তাঁদের সমস্ত দুঃখকষ্টের অবসান ঘটায়। এটা বিশ্বাস করা হয় যে দেবী সতী আত্মাহুতি দেওয়ার সময় এই স্থানে তার জিহ্বা পড়েছিল। বাদশাহ আকবর খালি পায়ে মন্দিরে এই মন্দিরে পুজো দিয়ে গিয়েছিলেন এমনটাই বলা হয়ে থাকে।
ডিসক্লেমার: এখানে প্রদত্ত তথ্য শুধুমাত্র অনুমান এবং তথ্যের উপর ভিত্তি করে। এখানে উল্লেখ করা গুরুত্বপূর্ণ যে এবিপি লাইভ কোনও ধরনের বিশ্বাস, তথ্য সমর্থন করে না। কোন তথ্য বা অনুমান প্রয়োগ করার আগে, সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে