নয়াদিল্লি : এ যেন কলিযুগের মীরাবাঈ। উত্তরাখণ্ডের হর্ষিকা কৃষ্ণপ্রেমের নজির গড়লেন এ যুগে। হলদওয়ানির এই তরুণী সারা জীবন অর্পণ করলেন শ্রীকৃষ্ণকে। একেবারে জাঁকজমক করেই তিনি বিয়ে করলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে। ভগবানের মূর্তি কেলে নিয়ে ছবিও তুললেন নববধূ। আপাতত এই বিয়ে উত্তরাখণ্ডের অন্যতম আলোচ্য বিষয়।
ছোট্ট থেকেই কৃষ্ণপ্রেমে মগ্ন হর্ষিকা। কৃষ্ণের ভক্তিতে নিমগ্ন সে-মেয়ে বাড়ির লোকজনকে জানিয়েই দিয়েছিল ভগবান কৃষ্ণ ছাড়া কাউকেই নিজের প্রাণনাথ হিসেবে মানবেন না। মেয়ের ভক্তি দেখে রাজি হয়ে যান পরিবারও। রীতি মতো সবরকম আচার -অনুষ্ঠান করেই বিয়ে সম্পন্ন হল। বিদায়ী অনুষ্ঠানও হল। কনে কোলে কানহার মূর্তিটি নিয়ে গাড়িতে করে তাঁর আত্মীয়ের বাড়িতে গেলেন। এরপর থেকে এখন খবরের শিরোনামে এই বিয়ে।
উত্তরাখণ্ডের হলদওয়ানি শহরের প্রেমপুরের ইন্দ্রপ্রস্থ কলোনির বাসিন্দা পুরান চন্দ্র পন্ত। মাত্র ২১ বছর বয়স হর্ষিকার। যে বয়সে মেয়েরা আমোদে-আহ্লাদে জীবন কাটাতে চায়, সেই বয়সেই তিনি মালা দিলেন শ্রীকৃষ্ণের গলায়। জানা গিয়েছে, হর্ষিকা বিশেষভাবে সক্ষম। ছোটবেলা থেকেই প্রতিবন্ধী। তাঁর শরীরের নিচের অংশ সাড়হীন। দৈনন্দিন কাজের জন্যও তাঁকে অন্যের ওপর নির্ভর করতে হয়। হর্ষিকা ভগবান শ্রী কৃষ্ণকে তাঁর স্বামী হিসাবে সর্বান্তকরণে গ্রহণ করবেন বলে ঠিক করে ফেলেন অনেক আগেই। এরপর তিনি বৃন্দাবন থেকে আনা শ্রীকৃষ্ণের মূর্তির সাত জন্ম চলার শপথ নেন। শ্রীকৃষ্ণের নামে সিঁদুরও পরেন তিনি।
গত ১১ জুলাই বিয়ের অনুষ্ঠানটি হয়। তাতে ধুমধামের কোনও ঘাটতি ছিল না। মেহেন্দি , হলদি ইত্যাদি অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়েছিল। তাতে অংশ নেন প্রতিবেশী ও আত্মীয়রা। কুমায়ুন অঞ্চলে ঠিক যেভাবে বিয়ে হয়, হর্ষিকার বিয়েটিও হয়েছে তেমন রীতিতেই। জয়মালাসহ নানা আচার-অনুষ্ঠান করা হয়। হর্ষিকাকে আশীর্বাদ করতে আসেন দূর-দূরান্তের মানুষ।
মালা বদলের দৃশ্য ছিল দেখার মতো। উপস্থিত সকলেই রাধা কৃষ্ণের নাম করতে থাকে। হর্ষিকা গত ১৫ বছর ধরে ভগবান শ্রী কৃষ্ণকে তাঁর হৃদয়ে লালন করে এসেছেন। তারপরে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। এই বিয়েতে তার পুরো পরিবার খুবই খুশি।
আরও পড়ুন :
রামকৃষ্ণ সারদা মিশনের নতুন অধ্যক্ষা প্রব্রাজিকা প্রেমপ্রাণা
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।