নয়াদিল্লি: মহাকাশ অভিযানে বেসরকারি সংস্থাগুলির জন্য নয়া মাইলফলক তৈরি করল ভারতের স্টার্টআপ সংস্থা Agnikul Cosmos. নিজেদেj তৈরি মহাকাশযানের সফল, পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করল তারা। সেমি ক্রায়োজেনিক 3D প্রিন্টেড ইঞ্জিন নির্ভর  ওই মহাকাশযানটির উৎক্ষেপণ হল মাত্র দু'মিনিটে। ওই বেসরকারি সংস্থাকে অভিনন্দন জানিয়েছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ISRO). (Agnibaan Test Flight)


বৃহস্পতিবার সকালে নিজেদের তৈরি মহাকাশযান 'Agnibaan'-এর পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করে Agnikul Cosmos. তাদের SOrTeD অভিযানের আওতায়, একবারেই রকেটটির উৎক্ষেপণ হয়। মহাকাশ অভিযানে দেশীয় প্রযুক্তির ব্যবহারে জোর দিতে এই অভিযান অত্যন্ত কার্যকর বলে মনে করা হচ্ছে। পরীক্ষামূলক ভাবে রকেট উৎক্ষেপণ করে Agnikul Cosmos বাকিদের জন্য মাইলফলক গড়ল বলে মত ISRO-রও। (Agnikul Cosmos)


Agnikul Cosmos-কে অভিনন্দন জানিয়ে এদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় ISRO লেখে, 'লঞ্চপ্যাড থেকে Agnibaan SorRTed-01-এর সফল উৎক্ষেপণের জন্য Agnikul Cosmos-কে অভিনন্দন। সেমি ক্রায়োজেনিক লিকুই ইঞ্জিন নির্ভর রকেটের প্রথম নিয়ন্ত্রিত উড়ানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক তৈরি হল'।




SorRTed অভিযানের আওতায় প্রথমে ৭ এপ্রিল Agnibaan মহাকাশযানটির উৎক্ষেপণ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রযুক্তিগত সমস্যা দেখা দেওয়ায়, বৃহস্পতিবার অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে রকেটটির উৎক্ষেপণ হয়। রকেট উৎক্ষেপণেও দেশের প্রথম বেসরকারি লঞ্চপ্যাড ALP-01 ব্যবহার করে Agnikul Cosmos.

 

Agnibaan-এর উৎক্ষেপণ আরও একটি কারণে গুরুত্বপূর্ণ, তা হল এর Agnilet ইঞ্জিন। এটি একটি মাত্র 3D প্রিন্টেড সেমি ক্রায়োজেনিক রকেট ইঞ্জিন। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে এই 3D প্রিন্টেড রকেট ইঞ্জিনটি তৈরি হয়েছে। এক্ষেত্রে হালকা ওজনের বিভিন্ন ধাতব খাদকে একত্রিত করে ইঞ্জিনের কাঠামো তৈরি করা হয় প্রথমে। ইঞ্জিন তৈরিতে অ্যালুমিনিয়াম, টাইটেনিয়াম, নিকেল, তামা, ক্রোমিয়ামের মতো ধাতুর খাদ ব্যবহার করা হয়।





 

3D প্রিন্টেড রকেট ইঞ্জিন তৈরি করতে টুকরো টুকরো যন্ত্রাংশ জুড়তে হয় না। নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় ছাঁচে ফেলে তার উপর চাপসৃষ্টি করলেই তৈরি ইঞ্জিনের কাঠামো বেরিয়ে আসে।  নকশা ফুটিয়ে তুলতে ব্যাবহার করা হয় লেজার। 3D রকেট ইঞ্জিনে বেশি জ্বালানিও খরচ হয় না। আগামী দিনে মহাকাশ অভিযানে 3D প্রিন্টেড ইঞ্জিনের ব্যবহার বাড়লে, যথেষ্ট টাকাও বাঁচবে।  

 

এই অভিযান Agnikul Cosmos সংস্থার জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মহাকাশ অভিযানে রকেট উৎক্ষেপণে যেখানে কোটি কোটি টাকার প্রশ্ন জড়িয়ে থাকে, সেখানে একটি স্টার্টআপ সংস্থা হিসেবে অসাধ্যসাধন করে দেখাল তারা। যে লঞ্চ ভেহিকল বা মহাকাশ উৎক্ষেপণযান থেকে রকেটটি ছোড়া হয়, সেটি ৩০০ কেজি ওজন বইতে সক্ষম। ইচ্ছেমতো তাতে রদবদলও ঘটানো যেতে পারে। আগামী দিনে লঞ্চপ্যাড তৈরির ক্ষেত্রেও এই অভিযান গুরুত্বপূর্ণ।