Antarctica Hidden World: অ্যান্টার্কটিকাকে উপর থেকে হয়ত প্রাণহীন নীরব বলে মনে হতে পারে। কিন্তু এই মহাদেশ তার পুরু বরফের আস্তরণের গভীরে এমন কিছু রহস্য লুকিয়ে রাখতে পারে, যা বিজ্ঞানীদের হয়ত অবাক করবে। বরফে জমা মাইলের পর মাইল ভূপৃষ্ঠের নিচে হয়ত রয়েছে কোনও অজানা পৃথিবী, রয়েছে কোনও হারিয়ে যাওয়া বাস্তুতন্ত্র, পথ হারানো নদী।

অ্যান্টার্কটিকার ৯০ শতাংশই পুরু বরফের আস্তরণে ঢাকা। এই বরফের পুরুত্ব প্রায় ২.২ কিলোমিটার। ৩.৪ কোটি বছর ধরে একইভাবে রয়েছে এই বরফের আস্তরণ। তবে বিজ্ঞানীরা হয়ত এখন অনুধাবন করছেন যে তারা এই বিশাল বরফের চাদরের নিচে কী রয়েছে তা খানিক অনুমান করতে পেরেছেন। ইতিমধ্যেই বহু বিজ্ঞানী এই বিরাট বরফের আস্তরণের নিচে ৪০০ গোপন হ্রদের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন। সবথেকে বড় হ্রদের নাম দেওয়া হয়েছে লেক ভস্তক। বরফের ৪ কিলোমিটার নিচে নীরবে শুয়ে রয়েছে যেন এই হ্রদ। এই হিমবাহজাত হ্রদগুলি পৃথিবীর বাকি অংশের কাছে এখনও অজানা, এমনকী এই হ্রদে প্রাণের অস্তিত্বও থাকতে পারে।  

আর এর পাশাপাশি অ্যান্টার্কটিকায় বরফের আস্তরণের নিচে গামবার্টসেভ হিমবাহজাত পর্বত লুকিয়ে আছে বলে জানা গিয়েছে। ইউরোপীয় আল্পস পর্বতের মতই এই গামবার্টসেভ পর্বত। কিন্তু তারপরেও এগুলিকে দেখা যাচ্ছে না কারণ গভীর হিমবাহ উপত্যকাগুলি কয়েক কিমি বরফের নিচে চাপা পড়ে আছে। এগুলি কীভাবে তৈরি হল ? পূর্ব অ্যান্টার্কটিকা লক্ষ লক্ষ বছর ধরে টেকটোনিকভাবে স্থিতিশীল। সম্প্রতি 'আর্থ অ্যান্ড প্ল্যানেটরি সায়েন্স লেটার্স'-এ প্রকাশিত নতুন গবেষণায় দেখা গিয়েছে আজ থেকে ৫০ কোটি বছর আগে ভূতাত্ত্বিক সংঘর্ষের ফলে গণ্ডোয়ানা মহাদেশ যখন গঠিত হয়েছিল তখন এই লুকোনো পর্বত শৃঙ্খল গড়ে উঠেছিল। ১৯৫৮ সালে প্রথম একটি রুশ অভিযানে সিসমিক টেকনিকের মাধ্যমে এই পর্বত আবিষ্কৃত হয়।

তবে কীভাবে এত বিশাল এক পর্বতমালা তৈরি হল এবং এভাবে বছরের পর বছর ধরে বরফের আস্তরণের নিচে লুকিয়ে রইল তা এখনও বিজ্ঞানীদের অজানা।

অন্যদিকে জার্মানির আলফ্রেড ওয়েগনার ইনস্টিটিউটের ড. জোয়ান ক্লাগেস অ্যান্টার্কটিকার এই বরফের আস্তরণের নিচে বহু গোপন হ্রদ খুঁজে পেয়েছেন। তাঁর দলই প্রথম অ্যান্টার্কটকার মাটি থেকে অ্যাম্বার জীবাশ্ম আবিষ্কার করেছে। এর অর্থ হল ৯ কোটি বছর আগে এই অ্যান্টার্কটিকায় কোনও রেনফরেস্ট ছিল।